আমাদের সমাজে নানাবিধ বিভাজন ও বঞ্চনা থেকে সৃষ্ট হয় বিবিধ সাংস্কৃতিক পরিবেশ; কোথাও কোথাও এই পরিবেশ শিশুমনে ও তার শিক্ষায় গভীর প্রভাব ফেলে। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার একজনের লেখা থেকে জানতে পারি একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং অভিভাবকদের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটের প্রভাব শিশুদের উপর কী ভাবে পড়ে। তাঁর কথায় অভিভাবকদের নানা খারাপ অভ্যাসের কথা উঠে এসেছে। তিনি বলেন :
‘অনেক সময় ছাত্রছাত্রীরা বলে — তার বাবা, মা বলেছে শিক্ষক মহাশয়ের কাছ থেকে টাকা আনবি। তা হলে সব সময় পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ভাবে পাঠাবো। এটা যে অর্থাভাব থেকে নয়, তা স্পষ্ট — তারা অর্থ ব্যয় করে তাস খেলছে, চোলাই মদ খাচ্ছে, ভিডিও হলে যাচ্ছে, ক্ষতিকারক বস্তু কিনছে, কিন্তু নিজেদের স্বাস্থ্যের ব্যাপারে উদাসীন।’
কোচবিহার জেলার এক শিক্ষক রণজিৎ সূত্রধর শিশুদের অবস্থা বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘অবিশ্বাস্য হলেও ওইটুকু ছেলেমেয়েরা, প্রায় ৭০%, বড়দের মতো নেশাগত দ্রব্য, যেমন তাদের ঘরে তৈরি হাঁড়িয়া পান করে। এ কথাগুলি নির্লজ্জ ভাবেই ছাত্রছাত্রীরা স্বীকার করে আমার কাছে।’ কোথাও কোথাও আবার, শিক্ষকদের অভিযোগ, শিশুরা স্কুলে না গিয়ে তাস খেলছে, বাজে সিনেমা দেখছে। এমন নয় যে ঘটনাগুলি সর্বত্র ঘটছে ; কিন্তু সংখ্যায় যত কমই হোক, এটা তো চিন্তার ব্যাপার। শিশুরা যদি মিথ্যা কথা বলতে শেখে বা অভিভাবকরা তাদের কু-অভ্যাসে উৎসাহ দেন, তা হলে, সমাজের কি সেখানে কিছুই করণীয় নেই? কেন এই অবস্থা সেটা তো ভেবে দেখা দরকার আছে। এবং প্রতিকার করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করার আছে। লেখাগুলিতে এমন উদাহরণ কিন্তু আছে যে, বৈরিতাপূর্ণ অবস্থা থেকে শিক্ষকের প্রচেষ্টায় কী ভাবে অভিভাবকরা স্কুলের উন্নতিতে যুক্ত হলেন। এই উদাহরণগুলিই শিক্ষণীয়। আরও ভয়াবহ ঘটনা হল, ‘বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকায় খুন খারাবি, যেমনটা জানিয়েছেন তসরবালা অবৈতনিক বিদ্যালয়ের প্রসেনজিৎ বিশ্বাস।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/19/2020