শিশু ভর্তি ও উপস্থিতির পর যে প্রশ্নটা সব চেয়ে বড় হয়ে দেখা দিচ্ছে সেটা হল স্কুলছুট। ইদানীং স্কুলছুট সমস্যার মাত্রা কিছুটা কমেছে বলে জানা গেলেও তা যে পুরোপুরি নির্মূল হয়ে যায়নি তা বলাই বাহুল্য। এই স্কুলছুট সমস্যার সমাধানে অনেক কাজ করার আছে। স্কুলছুটের প্রশ্নে পুরুলিয়া জেলার একটা অভিজ্ঞতার কথা আমরা আগেই উল্লেখ করেছি। স্কুলছুট যে অনেকটাই কমিয়ে আনা গেছে, এমনটা আরও বেশ কয়েক জন শিক্ষকের লেখাতেই পাওয়া গেছে। মোট ৩২ জন শিক্ষক স্কুলছুটের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন (যদিও ৬ জন শিক্ষক প্রাথমিক বিদ্যালয় পরবর্তী স্তরের স্কুলছুট নিয়ে মতামত রেখেছেন)। তার মধ্যে ৭ জন শিক্ষকই স্কুলছুট কমে আসার বিষয়ে মন্তব্য করেছেন। দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলার শিক্ষক দুলাল চাঁদ নস্কর লিখেছেন, বর্তমানে সকল শিশুকে বিদ্যালয়ের আঙিনায় আনার জন্য দ্বিপ্রহরী খাবার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ফলে বিদ্যালয়ে শিশুদের আসার প্রবণতা অনেক অংশে বৃদ্ধি পেয়েছে, স্কুলছুট শিশুর সংখ্যা অনেক হ্রাস পেয়েছে।’ জলপাইগুড়ি জেলার শিক্ষক মনোজ কুমার মণ্ডল তাঁর অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে লিখেছেন, শিশুদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখার প্রশ্নে শিখন পদ্ধতির একটা বড় ভূমিকা আছে। তিনি লিখেছেন, যখন পুরনো পদ্ধতিতে পাঠদান করা হত তখন স্কুলছুটের সংখ্যা অনেক বেশি ছিল, কিন্তু নতুন পদ্ধতিতে পাঠদান করার ফলে স্কুলছুটের সংখ্যা কিছুটা কম হয়েছে। অর্থাৎ মনোজবাবু বলতে চেয়েছেন, শিশুদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখার ক্ষেত্রে নতুন শিখন পদ্ধতির একটা বড় ভূমিকা আছে। যদিও খুব বেশি শিক্ষক স্কুলছুটের বিষয়ে আলোচনা না করায় স্কুলছুট কমিয়ে আনার বিষয়ে শিক্ষকদের বিভিন্ন ধরনের অভিজ্ঞতার কথা খুব বেশি জানতে পারা যায়নি। তবে অনিয়মিত উপস্থিতি যে শেষ পর্যন্ত বহু ক্ষেত্রেই স্কুলছুটের কারণ হয়ে দাঁড়ায় তা বহু শিক্ষকই বলেছেন। তাই অনুপস্থিতির বহু কারণই স্কুল ছুটেরও কারণ হিসেবে শিক্ষকদের লেখায় দেখতে পাওয়া যায়। এখানেও অভিভাবকদের সচেতনতার সমস্যা এর অন্যতম কারণ হিসেবে উল্লেখিত।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/30/2020