প্রতীচী ইনস্টিটিউট আয়োজিত ১০টি কর্মশালায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যে ৩৪৮ জন শিক্ষক যোগ দিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ৫৯ জন (১৭ শতাংশ) কোনও না কোনও প্রসঙ্গে শিশুভর্তির বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন। আগেই যেমন বলা হয়েছে, শিশুর ভর্তির সমস্যাটি প্রায় দূর হয়ে গেছে বলে তাঁরা মনে করছেন। এই সঙ্গে তাঁরা অন্যান্য কিছু দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। একটা বড় অংশই (২০ জন) বেসরকারি বিদ্যালয়ের আলোচনা প্রসঙ্গে লিখেছেন যে বেসরকারি বিদ্যালয়ের কারণে তাঁদের বিদ্যালয়ে শিশুভর্তি কমে যাচ্ছে। কোনও কোনও শিক্ষকের লেখা থেকে বেরিয়ে এসেছে যে তাঁদের বিদ্যালয়ের কাছাকাছি শিশু শিক্ষা কেন্দ্র গড়ে ওঠা বা আরও প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকার কারণে তাঁদের বিদ্যালয়ে পর্যাপ্ত সংখ্যায় শিশু ভর্তি হচ্ছে না। কেউ কেউ এমনও লিখেছেন যে শিশুর জন্মের হার কমে যাওয়াও বর্তমানে বিদ্যালয়ে শিশু কম হওয়ার একটি কারণ। অন্য দিকে, উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকা সত্ত্বেও মাত্রাতিরিক্ত শিশুভর্তির সমস্যার কথা উল্লেখ করেছেন জলপাইগুড়ি বা পুরুলিয়ার মতো তুলনামূলক কম জনঘনত্বের জেলার শিক্ষকরা। জলপাইগুড়ি জেলার শাস্ত্রী হিন্দী শিশু নিকেতনের শিক্ষিকা পিংকি রজক –এর লিখন অনুযায়ী তাঁর বিদ্যালয়ে বর্তমানে মোট শিশুর সংখ্যা ৫৬০ (শিশু-শিক্ষক অনুপাত ৮০ )।
বছরের শুরুতেই সমস্ত শিশু ভর্তি না হওয়ায় তাঁদের শিক্ষা প্রদানে সমস্যার কথাও কোনও কোনও শিক্ষক জানিয়েছন। কেউ কেউ জন্ম সার্টিফিকেট না থাকায় বয়স নির্ধারণের সমস্যা বা ভর্তি হওয়ার ন্যূনতম বয়সের সমস্যার কথা উল্লেখ করেছন। পুরুলিয়া জেলার শিক্ষক সমরেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেছেন, ‘বর্তমানে বিদ্যালয়ে ভর্তির বয়স ৫+, কিন্তু আমার দীর্ঘ জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি ভর্তির বয়স ৬+ হলে ভাল হতো। কথাটি গুরুত্বপূর্ণ; শিক্ষার অধিকার আইনও শিশু ভর্তির জন্য বয়স নির্ধারণ করেছে ন্যূনতম ৬ বছর। কেউ কেউ একই শিশুর একাধিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সমস্যার কথা লিখেছেন।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/9/2020