শিশুদের নতুন পদ্ধতিতে শিক্ষাদানের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পদ্ধতি হল সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, খেলাধূলা বা শিক্ষামূলক ভ্রমণের মাধ্যমে শিক্ষাদান। আমরা আলোচনাগুলিতে ইতিমধ্যেই দেখেছি খেলাচ্ছলে শিক্ষাদান শিশুমনে অনেক সহজে প্রবেশ করে এবং তা দীর্ঘস্থায়ীও হয়। সেই রকম বিদ্যালয়ে বিভিন্ন রকম সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করলে শিক্ষার বাইরে নাচ, গান, আবৃত্তি, ইত্যাদি ক্ষেত্রে শিশুর পারদর্শিতা বৃদ্ধি পায়। লেখাগুলি থেকে দেখা যায় অনেকেই নানা উপায়ে বিদ্যালয়ে এ ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করে থাকেন। শিশু ও তার অভিভাবকেরাও যথেষ্ট উৎসাহ সহকারে এ সকল অনুষ্ঠানে অংশ গ্রহণ করেন। কিছু ব্যতিক্রম আছে। যেমন মুর্শিদাবাদের মাহামুদান হাসান বলছেন বিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অনুশীলন চলাকালীন কিছু অভিভাবক এসে শিক্ষকদের কাছে অসন্তোষ প্রকাশ করেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁরা অনুশীলন চালিয়ে যান এবং মূল অনুষ্ঠানের দিন তাঁদের নিজেদের ছেলেমেয়েদের উপস্থাপনা দেখে নিজেরাই বিস্মিত হয়ে যান। একই রকম ভাবে মুর্শিদাবাদেরই অন্য এক শিক্ষক রমাপ্রসাদ ব্যানার্জি জানিয়েছেন যে তাঁরা কী ভাবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশতবর্ষ পালন করেছেন বিদ্যালয়ে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছাড়াও শিক্ষামূলক ভ্রমণও বেশ কিছু বিদ্যালয়ে ইতিমধ্যে নিয়মিত হয়ে চলেছে। বহরমপুরের মাফিকুল ইসলাম বলেছেন শিশুরা ছাড়াও শিক্ষক শিক্ষিকাদের মানসিক বিশ্রামের জন্য এ ধরনের ভ্রমণ প্রয়োজন। এই ধরনের ভ্রমণের মাধ্যমে যেমন শিশুর দর্শনীয় স্থানগুলিও দেখা হয় তেমন সে সকল জায়গা ও ইতিহাস সম্পর্কেও একটি ধারণা তৈরি হয়। এ কথা বলার অবকাশই রাখে না যে খেলাধূলা ও শরীরচর্চাও শিক্ষার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। সুস্থ সবল ভাবে থাকার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চাও প্রয়োজন। খেলাধূলার মাধ্যমে যেমন শিশুমনের বিকাশ ঘটে তেমনই তার পাঠ্যপুস্তকের পড়াশোনার প্রতিও একঘেয়েমি আসে না। এবং নিয়মিত খেলাধূলার জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে এই কারণে খেলার মাঠ থাকা জরুরি। যে মাঠ ব্যবহার করে আগামী জীবনের জন্য একটি সেতজ মন ও শরীরে অধিকারী হতে পারে পড়ুয়ারা।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/7/2020