অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

বাধা যখন অভিভাবকরা

বাধা যখন অভিভাবকরা

আরও একটি সমস্যার কথা শিক্ষকদের লেখায় ধরা পড়েছে। তা হল শ্রেণিকক্ষে যে শিক্ষাদান করা হয় তার সাথে বাড়ির শিখন পদ্ধতিতে বিরাট ফারাক চোখে পড়ে, বিশেষত যখন গণিত ইত্যাদি বিষয়গুলি নতুন পদ্ধতি অনুসরণ করে শ্রেণিতে পড়ানো হয় তখন বাড়িতে হয়তো চিরাচরিত নিয়মগুলিই অনুসরণ করা হয়। সে ক্ষেত্রে শিশুটির পক্ষে কোনও পদ্ধতিই সঠিক ভাবে গ্রহণ করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। যেমন বারুইপুরের প্রফুল্ল কুমার হালদার তাঁর লেখায় এ কথা বলেছেন যে, ‘আমরা যে পদ্ধতিতে (নতুন পদ্ধতি) বিয়োগের কিংবা যোগের অঙ্ক শেখাই অভিভাবক শেখান তার উল্টো পদ্ধতিতে (পুরনো পদ্ধতি)। আমরা জানি এবং শেখাই শূন্য (০) একটি সংখ্যা কিন্তু অভিভাবকের কাছে শূন্য কোনও সংখ্যা নয়।’ প্রায় একই রকম সমস্যার কথা আরও বেশ কিছু শিক্ষকই তাঁদের লেখায় উল্লেখ করেছেন। সেই রকমই কিছু কিছু জায়গায় দেখা গেছে অভিভাবকরাই নতুন পদ্ধতি ব্যবহারের ঘোরতর বিরোধিতা করেছেন। সে ক্ষেত্রে শিক্ষকরা সহমত পোষণ করলেও অভিভাবকরা বাধা হয়ে দাড়াচ্ছেন। যেমন বহরমপুরের গোপীনাথপুর ঢিপিডাঙা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রী বৈকুণ্ঠ মল্লিক লিখেছেন, ‘উৎপাদনাত্মক কাজ, সৃজনাত্মক কাজ ও খেলাধূলা অভিভাবকদের একেবারেই পছন্দ নয়। ওদের ইচ্ছা শিশুরা শুধু পড়তে শিখুক। ফলে শ্রেণিকক্ষে এই বিষয়গুলি অবহেলিত। কারণ অভিভাবকদের মতামতকে গুরুত্ব দিতেই হয় না হলে নানা সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে।’ আবার প্রসঙ্গক্রমে মুর্শিদাবাদের সফিকুজ্জমান একটি চমৎকার উদ্ধৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেছেন :

‘নতুন নতুন কর্মশালায় নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করার কথা বলা হয়। কিন্তু শিক্ষকগণ যখন নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করেন, তখন বাড়ির অভিভাবকেরা পুরনো পদ্ধতি মেনে চলেন। ফলে শিশুর মানসিক চাপ বেড়ে যায়। কর্মশালাগুলিতে যা-ই বলা হোক, শিশুর পরিবেশ অনুযায়ী শিক্ষকের পাঠদান করার অধিকার থাকা একান্ত প্রয়োজন। শিক্ষক শিশুকে তার কাম্য সামর্থে পৌঁছে দেবেন নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তির মাধ্যমে। অর্থাৎ শিশুর তাৎক্ষণিক সমস্যা সমাধান বাঁধাধরা কতগুলি নিয়মের মাধ্যমে করা যায় না। এর জন্যই প্রয়োজন নিজস্ব উদ্ভাবনী শক্তি।’

বেশ কিছু শিক্ষকের লেখাতেই দেখা গেছে যে তাঁরা সমস্যার সামনে দাঁড়িয়েও সচেতন ভাবে সেগুলির মোকাবিলা করে চলেছেন। যেমন, কোচবিহারের বরুণ মজুমদার বলেছেন যে শিশুদের মধ্যে চিরাচরিত প্রথায় নামতা শেখার একটি প্রবণতা রয়েছে। কিন্তু তাতে তিনি দেখেছেন যে এ ভাবে নামতা বলতে গিয়ে বেশির ভাগ সময়ে শিশুরা ৫ এবং ৭-এর নামতা গুলিয়ে ফেলছে। তখন তিনি শিশুদের মধ্যে আধুনিক বিজ্ঞানসম্মত উপায়ে নামতা পড়ানোর যে পদ্ধতি তাতে জোর দিতে শুরু করেন। এ ক্ষেত্রে প্রথম দিকে শিশুদের মধ্যে এই নতুন পদ্ধতির ধারণা দিতে গিয়ে যদিও তিনি বেশ সমস্যায় পড়েছিলেন, কিন্তু ধীরে ধীরে তিনি এই পদ্ধতিতেই শিশুদের নামতা শেখার অভ্যাস করিয়ে দেন।

সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২

সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/25/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate