শিশুদের স্বাস্থ্য সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য পঞ্চায়েতের জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। শিক্ষকদের অভিযোগ বিদ্যালয়গুলিতে নিয়মিত স্বাস্থ্য নির্ধারণের ব্যবস্থা করা হয় না। নিয়মিত হেলথ চেক আপ-এর ব্যবস্থা থাকলে শিশুদের স্বাস্থ্যের একটি হিসাব রাখা সম্ভব। তবে কিছু সমস্যা শিক্ষকদের ক্ষমতার বাইরে, তবে তারা চেষ্টা করেন সাধ্যমতো — যেমন পুরুলিয়ার নয়ন দত্ত বলেছেন :
‘গ্রামে শৌচালয় ব্যবহারের প্রচলন নেই। সবাই ফাঁকা মাঠে বা জলাশয়ের কাছে প্রাতকৃত্য সারে। গ্রামের পুকুরগুলিই সবার স্নানের কাজে ব্যবহৃত হয়। ফলে সংক্রামক রোগ ও কৃমির আধিক্য বেশি এবং বাচ্চারাও প্রায়শই অসুস্থতা ও রক্তাল্পতায় ভোগে। আমরা শ্রেণিতে স্বাস্থ্যবিধানের প্রাথমিক পাঠটুকু দিলেও তা ফলপ্রসূ হয় না। কারণ ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের সেই পরিকাঠামো (শৌচাগার ) বানানোর মতো আর্থিক সংস্থান নেই বা সামাজিক অবস্থাও তাদের শৌচাগার নির্মাণে বাধ্য করে না। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সাধারণ স্বাস্থ্য বিধান মানা হয় না। গ্রাম পঞ্চায়েতকে এ বিষয়ে যত্নবান হতে হবে — নির্মল গ্রাম গঠনের লক্ষ্যে।’
সরকারি ব্যবস্থাপনার দাবিটি যেমন জোরালো তেমনি এটাও ঠিক যে অনেক সদভ্যাস স্কুলেই শেখানো সম্ভব। অনেক শিক্ষকই এ রকম চেষ্টা করছেন। মিড–ডে মিল খাওয়ার আগে ও পরে সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া, খাওয়ার জায়গা পরিষ্কার রাখা, ইত্যাদি অভ্যাসগুলি শিশুদের মধ্যে এক বার গড়ে উঠলে তার সুফল শুধু তারই জীবনে নয়, ফলে পরবর্তী প্রজন্মেও। যে সব স্কুলে শিক্ষার সঙ্গে স্বাস্থ্যের দিকটিতেও নজর পড়েছে সে সব জায়গায় যে একটা বড় সামাজিক পরিবর্তন ঘটে যাবে, এমনটা আশা করা যায়। আবার স্বাস্থ্যের সঙ্গে পুষ্টির যোগটি অঙ্গাঙ্গিক। মিড–ডে মিল যেখানে একটা বড় ভূমিকা রাখছে। এই সবের যোগাযোগে যে শিক্ষা, যার প্রচেষ্টা দেখি বেশ কিছু শিক্ষকের মধ্যে, তার সর্বজনীন হয়ে ওঠাই সমাজের অগ্রগতির চাবিকাঠি।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/23/2020