অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

‘আমি লিখতে পারি না’

‘আমি লিখতে পারি না’

বিদ্যালয়ে আসতে না চাওয়া শিশুদের সমস্যার সমাধান হিসাবে বিদ্যালয়ে মা বাবা ও শিক্ষকদের নিয়ে সভা করে এই বিষয় নিয়ে আলোচনা করা ছাড়াও অভিভাবকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে তাঁদের শিশুর বিদ্যালয়ে প্রথম থেকে আসাটা কত দরকারি তা বোঝানো হয়। অনেক শিশুই তখন বিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই নিয়মিত বিদ্যালয়ে আসে। এবং আমার বিশ্বাস এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আগামী বছরগুলিতে আরও সাফল্য অর্জন করতে পারব।

আর একটা সমস্যা রয়েছে। শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত সকল শিশুকে শিক্ষক মহাশয় কর্তৃক একই ভাবে বিচার করা অর্থাৎ কোনও শিশুর বিশেষ কোনও সমস্যা থাকলেও তাকে চিহ্নিত না করে তাকে বুদ্ধিহীন বলে ধরে নেওয়া। এ ক্ষেত্রে প্রত্যেক শিশুর পারিবারিক ও আর্থসামাজিক অবস্থা সম্পর্কে শিক্ষকের সম্যক ধারণা থাকার প্রয়োজন। আমি প্রথম শ্রেণিতে বাংলা পড়াতে গিয়ে সে দিন সরস্বতী হাজরা নামক একটি মেয়ের মুখোমুখি হয়েছিলাম। প্রথম দিন আমি যখন ‘আম’ শব্দটি পড়িয়ে সকলকে ‘আ’ চেনাচ্ছিলাম এবং ‘আ’ লিখতে উৎসাহিত করছিলাম — তখন শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত সকল শিশু কিছু না কিছু লেখার চেষ্টা করলেও সরস্বতী কেবল বলছিল, ‘আমি লিখতে পারি না’ এবং বই খাতা স্লেট ব্যাগের মধ্যে ঢুকিয়ে রাখছিল। আমি তাকে কাছে ডেকে লিখতে উৎসাহিত করছিলাম তা সত্ত্বেও সে লেখাতে মন দিতে পারছিল না। আমি পরে ঐ গ্রামের আমার সহকর্মীকে জিজ্ঞাসা করলাম সরস্বতী হাজরাকে চেনো? তখন তিনি বলেন, এক মাস আগে ওর মা মারা গেছে এবং ওর বাবা আবার বিয়ে করেছে। পরের দিন আমি যখন শ্রেণিতে গেলাম, তখন প্রথমেই সরস্বতীকে আমার কাছে ডেকে নিলাম এবং জিজ্ঞাসা করলাম, ‘তোমার মা তোমাকে ভাত খাইয়ে দিয়েছে?’ ও বলল, ‘হ্যাঁ’, আর ওকে আদর করে বললাম, ‘তুমি মা খুব ভালো মেয়ে’। তখন ও খুশি হয়ে আমার কাছে দাঁড়িয়ে থাকল। আমি ওকে ওর জায়গায় বসতে বললাম এবং সবার সঙ্গে লিখতে বললাম। ও আমার সাহায্যে লিখতে চেষ্টা করল। এই ধরনের আরও অনেক ঘটনা থেকে আমার মনে হয়েছে যদি শিক্ষক শিক্ষিকাগণ একটু মরমী ও আন্তরিক হন তা হলে প্রাথমিক শিক্ষার সমস্যার অর্ধেক সমাধান হয়ে যাবে।

 

সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২

সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/10/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate