একটি শিশু প্রথমে তার মা, বাবা বা পরিবারের কাছ থেকে শিক্ষা লাভ করে। পারিবারিক প্রভাব তার উপর প্রভাব বিস্তার করে। পরে সে সামাজিক পরিবেশের থেকে শিক্ষা পায়। একটি শিশুকে আমাদের আলাদা করে শিক্ষাদানের বিশেষ কিছু থাকে না। সে তার পারিপার্শ্বিক দিক ও অনুভূতির দ্বারাই শিক্ষা পায়। একটি শিশুর বড় ছোটর ধারণার উপর আমাদের শিক্ষার চেয়ে তার অনুভূতির মাপকাঠিই প্রাধান্য পায়, ঠিক সংখ্যার বেলায়ও তাই হয়। কোনও শিশুকে যদি ছোট মাছের টুকরো আর অন্য কাউকে বড় মাছের টুকরো দেওয়া হয় স্বভাবতই যে ছোট মাছটি পেল তার মনে তখনই প্রতিক্রিয়া হতে থাকে যে, আমি বঞ্চিত হলাম। ঠিক অন্যের বেলায়ও তাই হয়। সেটি তার প্রকৃতিগত বলুন আর জন্মগত প্রভাবই বলুন, আগে থেকে তার বিষয়টি জানা বলে মনে হয়। সেই শিক্ষাকেই পরিস্ফুট করার জন্য এক জন পথপ্রর্দশক বা শিক্ষকের প্রয়োজন হয়। আর প্রয়োজন হয় তার গুণগত মানকে প্রসারিত করা। তাই আমাদের প্রত্যেক শিক্ষককে মনে করতে হবে শিশুর বুদ্ধিমত্তার উপর প্রভাব রেখে গতানুগতিক স্রোতের প্রতিকূলে শিশুকে শিক্ষাদান করা। শিক্ষা প্রসার সামাজিক ও রাজনৈতিক পরিকাঠামোর উপর কিছুটা নির্ভর করে। কিন্তু প্রত্যেক শিক্ষার উদ্দেশ্য, একটি শিশুকে সর্বাত্মক শিক্ষাদানের মাধ্যমে তাকে ভবিষ্যত জীবন জীবিকার দিকে চালিত করা। শুধু জীবন জীবিকাই নয়, দেশ এবং সমাজ গঠনেও তা সাহায্য করে। সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিকাঠামোর মাধ্যমে সমাজব্যবস্থাকে উন্নত করে তোলা শিক্ষার একটি শক্ত ভিত মনে করি। বর্তমান যে শিক্ষাব্যবস্থা চালু রয়েছে, তা হল সর্বাত্মক শিক্ষাব্যবস্থা। একটি শিশুর মধ্যে ভ্রূণ অবস্থার সমস্ত দিকগুলোই সুপ্ত রয়েছে। তাকে পরিস্ফুট করে তোলাই শিক্ষকের কাজ। মূল্যায়নের মাধ্যমে বুঝতে হবে শিশুটি কী চায়, তার শিক্ষার অগ্রগতি কোন দিকে। তা নির্ধারণ করেই শিক্ষা দেওয়া দরকার, যাতে পরবর্তী জীবনে সে তাকেই অবলম্বন করে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে।
সূত্র : কলমচারি, প্রতীচী ইনস্টিটিউট, ফেব্রুয়ারি ২০১২
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020