আইসিটি-র শিক্ষা নির্ভর করে কী ভাবে শিক্ষা দেওয়া হচ্ছে এবং কী জন্য দেওয়া হচ্ছে তার উপর এবং অন্যান্য শিক্ষার মতোই আইসিটি ও সবার ক্ষেত্রে এবং সব জায়গায় সমান প্রযোজ্য নয়।
প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধিতে আইসিটি কতটা সাহায্য করতে পেরেছে, তার পরিসংখ্যান পাওয়া কঠিন। কারণ বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আইসিটির ব্যবহার সীমিত আর তথ্যও কম। প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে আইসিটি-র মডেল তেমন একটা কাজ না করলেও উচ্চশিক্ষা ও বয়স্কশিক্ষায় এই মডেল কিছুটা কার্যকর হয়েছে, বিশেষত যারা প্রথাগত বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে যেতে পারেননি, তাদের জন্য। পৃথিবীর তথাকথিত সবচেয়ে বড় আকারের ১১টি বিশ্ববিদ্যালয়, যেগুলি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুক্ত ও দূর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (এর মধ্যে রয়েছে ওপেন ইউনিভার্সিটি অফ ইউনাইটেড কিংডম, ভারতের ইগনউ, চায়না টিভি ইউনিভার্সিটি সিস্টেম, ইন্দোনেশিয়ার ইউনিভার্সিটাস অফ টার্বুকা, ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ আফ্রিকা ইত্যাদি), সেগুলিতে বছরে ১ লক্ষ ছাত্রভুক্তি হয় এবং সকলে মিলে এরা প্রায় ২৮ লক্ষ পড়ুয়াকে পরিষেবা দেয়। যেখানে আমেরিকার ৩৫০০ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট নথিভুক্ত পড়ুয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৪০ লক্ষ।
গুণমানের উন্নয়ন-রেডিও ও টিভির সম্প্রচারের মাধ্যমে শিক্ষাদান যদিও এখনও গবেষণার স্তরে আছে তা-ও পরিসংখ্যান অনুসারে এটি শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাগ্রহণের সমতুল্য। সব রকম সম্প্রচারের মধ্যে রেডিও সম্প্রচার বিশেষ উল্লেখযোগ্য। এই প্রকল্পের উন্নতির জন্য যথাযথ আধুনিক পদ্ধতির সঙ্গে তা গ্রহণের পরিমাণও বাড়ানো হয়ে থাকে।
বিপরীত দিকে কম্পিউটার ও নেটের মাধ্যমে দূরশিক্ষা প্রায় একই রকম। রাসেল এর গবেষণার মতে আইসিটি গৃহীত পরীক্ষা ও অন্য পরীক্ষার মধ্যে মানগত কোনও পার্থক্য নেই। যাই হোক এ কথা বলা হয় যে আইসিটি-র প্রকৃত পরীক্ষার ব্যাপারে সঠিক কিছু বলা হয় না। অন্যান্য সমালোচকের মতে আইসিটি-র দূরশিক্ষার ক্ষেত্রে পড়া ছেড়ে দেওয়াটা বেশি দেখা যায়। আরও অনেক শিক্ষা আছে যা কম্পিউটারের থেকে বেশি কার্যকর। দেখা যাচ্ছে যে কম্পিউটারের মাধ্যমে প্রদত্ত শিক্ষার মান অন্য উপায়ে প্রদত্ত শিক্ষার মানের সঙ্গে সমতুল্য। ছাত্ররা কম্পিউটারের মাধ্যমে শিক্ষায় বেশি উত্সাহী, তারা দ্রুত এটা গ্রহণ করে। কিন্তু অনেকের মতে এটা অনেক আধুনিক এবং গবেষণাসাপেক্ষ।
গবেষণা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে কম্পিউটারের মাধ্যমে শিক্ষা, শিক্ষক শিক্ষণের মতো অনেক সুবিধাই দিতে পারে যা ছাত্রকেন্দ্রিক শিক্ষাপদ্ধতি গড়ে ওঠাতে সাহায্য করবে। এই শিক্ষা এর প্রসার ও বিস্তারের জন্য সমালোচিত হয় এবং অনেক ক্ষেত্রে বাতিল হয়। এর এখনও কোনও প্রমাণ নেই যা বলে এটি উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা দিতে পারে, যা হতে পারে ছাত্র ও শিক্ষকের মধ্যে সু-সমন্বয়ের সূত্র।
এই কম্পিউটার ও ইন্টারনেটকেন্দ্রিক শিক্ষার প্রধান অসুবিধা হল ছাত্র-কেন্দ্রিক শিক্ষা ব্যবস্থায় এটি এখনও কোনও লাভজনক প্রয়াস দেখাতে পারেনি এবং সব শেষে বলা যায় যখন শিক্ষা প্রযুক্তিনির্ভর হয় তখন বোঝা যায় না কোনও প্রকল্পের সফলতার মূল কারণ প্রযুক্তি, না অন্য কোনও ব্যাপার না কি দু’টির সমন্বয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/29/2020