গণিতের বিমূর্ততা আলোচনার আগে বলেছিলাম, বাস্তবে গণিতের যে প্রয়োগ করা হয় তা সম্পূর্ণ রূপে সত্য নয়। প্রায় সত্যকে সত্য বলে মেনে নেওয়া হয়। কেমন সেটা ? যদি কাউকে বাজার থেকে এক কিলোগ্রাম ময়দা আনতে বলা হয়, দেখা যাবে, তুলাযন্ত্রে (দাঁড়িপাল্লা) মাপা যে ময়দা আনা হয়েছে তা ইলেকট্রিক যন্ত্রে মাপা হলে হয়তো ১০০০.২ গ্রাম বা ৯৯৯.৯ গ্রাম হবে। অথচ তিনি আগেই মেনে নিয়েছেন ওটা হাজার গ্রাম এবং তার দামও মিটিয়ে ফেলেছেন হাজার গ্রামে। তিনি যদি বলেন, তিনি বাজার থেকে ময়দা তুলাযন্ত্রের পরিবর্তে ওই ইলেকট্রিক যন্ত্রে মেপে আনবেন, তা হলেও সেই ময়দাকে পুরোপুরি হাজার গ্রাম বলে দাবি করা যায় না। কারণ, ওই ময়দা যদি ১০০০.০০০০০১ গ্রাম কিংবা ৯৯৯.৯৯৯৯৯ গ্রাম হয়, তা হলেও ওই যন্ত্র ওই ময়দাকে ১০০০ গ্রামই দেখাবে। ঠিক সে রকম আমরা যে রেখাংশ বা কোণ পরিমাপ করি, তা একশো শতাংশ সঠিক বলে কেউ দাবি করতে পারবে না। বাস্তবে আছে, অথচ এমন একটা আয়তাকার ক্ষেত্র আমরা চিহ্নিত করতে পারব না, যার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ যথাক্রমে ২৫ মিটার ও ২০ মিটার। অথচ এমন বিষয়ের কত সমস্যার সমাধান করা হয়। খাতাকলমে হিসাবের গণিত আর বাস্তবে তার প্রয়োগের মধ্যে একটা পার্থক্য আছে।
যে বিষয়ের সত্যতার অবস্থান বিমূর্ত জায়গায় সে বিষয়ের চর্চায় অনেক যত্ন ও সাবধানতা জরুরি। গণিতের এ দিকের আলগা বাঁধনে ভুল বার্তা পৌঁছে যাচ্ছে শিক্ষার্থীদের কাছে। এ ছাড়াও নানা কারণে এ বিষয় সম্পর্কে ভীতি তৈরি হচ্ছে শিশুমনে। এই ভীতির কয়েকটি কারণ নীচে উল্লেখ করা হল—
সূত্র : আধুনিক গণিত অন্বেষা, গণিতভীতি সংখ্যা, ২০১২।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020