সমাজে, প্রকৃতিতে, ব্যক্তি জীবনে সামঞ্জস্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। জীবনে কোনও কিছু একপেশে হয়ে গেলে তার ফল খুব একটা ভাল হয়না। কোনও কোনও সময় বাস্তব প্রয়োজনে আমাদের একপেশে দৃষ্টিভঙ্গি নিতে হয় বা কোনও একটি বিষয়ে অন্যগুলির তুলনায় বেশি মনোযোগ দিতে হয়। কিন্তু সেই প্রয়োজনটা ফুরিয়ে এলে আমাদের জীবনের কাজকর্মে সামঞ্জস্য বিধানের পথে চলে আসা দরকার। নইলে এই ভারসাম্যের অভাব নানা শারীরিক, মানসিক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। একথা সম বয়সের মানুষের ক্ষেত্রেই সত্য। কিশোর বা তরুণ মনের পক্ষে তো আরও বেশি করে সত্য।
সন্দেহ নেই, আমাদের তরুণ প্রজন্মের জীবনে প্রযুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। তাদের ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে পড়াশোনা, কর্মজীবন সবেতেই এটা অপরিহার্য। তবে এটা যদি আমাদের জীবনের অধিকাংশ সময়টাই গ্রাস করে ফেলে, তা হলে তা অবশ্যই ক্ষতিকর। সব কিছুর মধ্যে একটা সামঞ্জস্য রাখতে হবে। অর্থাৎ ছেলেমেয়েরা যেমন সোশাল নেটওয়ার্কে বন্ধুত্ব পাতাবে বা চ্যাট করবে, মোবাইলে গেম খেলবে, তেমনই আবার বাড়ির কোনও অনুষ্ঠানে সময় করে যোগ দেবে, বিভিন্ন মানুষজনের সঙ্গে মিশবে আবার পড়াশোনাও করবে ঠিকমতো।
এক সঙ্গে একাধিক কাজ অবশ্যই করা যায়। তাতে সব সময় যে ক্ষতি হয়, তা নয়। শুধু জানতে হবে, কখন মাল্টি টাস্ক করা যেতে পারে। যখন পড়াশোনা করছ, তখন একই সঙ্গে নিজের ফেসবুক পেজ খুলে রাখা, মোবাইলে কোনও বন্ধুর সঙ্গে হোয়াট্সঅ্যাপে মেসেজ পাঠানো, ভিডিও গেমিং করো না। বরং যখন হালকা কিছু করছ, তেমন মনোযোগ দিয়ে কোনও কিছু পড়ছ না, তখন এই ধরনের মাল্টি টাস্ক করতে অসুবিধা নেই। একটু পরিকল্পনা করে করলেই দেখবে সময় ও সুযোগ অনুযায়ী সহজেই এই ধরনের মাল্টি টাস্ক করা যায়। কিন্তু অধিকাংশ ছেলেমেয়েই সেটা করতে পারে না। তাদের সে ভাবে কোথাও শেখানোও হয় না। এটা এমন কিছু শক্ত কাজ নয়, কয়েকটা জিনিস মাথায় রাখলেই চলবে।
সূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা, প্রস্তুতি, ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/21/2020