বব মার্লের নাম কমবেশি আমরা অনেকেই জানি। সারা জীবন তিনি গেয়েছেন জনমানুষের গান। তৃতীয় বিশ্বের কোনও দেশ থেকে উঠে আসা রক শিল্পীর মধ্যে যাঁর নামটি সবার আগে উচ্চারিত হয় তিনি হলেন প্রয়াত নেস্তা রবার্ট মার্লে বা বব মার্লে। তিনি ছিলেন একাধারে গায়ক, গীতিকার এবং সঙ্গীত পরিচালক। ষাটের দশকে জ্যামাইকায় জন্ম নেয় ইয়েরগে মিউজিকের ধারা। সেই ধারাকে বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করে তোলার পেছনে সব চেয়ে বড় ভূমিকা ছিল মার্লের।
বব মার্লের গান লেখার ক্ষমতা ছিল অসাধারণ। গানও যে প্রতিবাদের ভাষা হতে পারে তা বিশ্ববাসীর চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন তিনি। বিদ্রোহ আর প্রতিবাদের পাশাপাশি বিশ্বাস এবং কোনও কিছু অর্জনে দৃঢ়সংকল্পের জয়গানও গেয়েছেন। গেয়েছেন ‘নো ওম্যান নো ক্রাই’-এর মতো গানও।
তাই আমি বলছি, তোমার চোখের অশ্রু শুকিয়ে ফেলো না নারী, তুমি কেঁদো না সব কিছু ঠিক হয়ে যাবে
সুবিন্যস্ত জটাধারী চুলের মার্লে সবসময় মানবতার পক্ষে গান গাইতেন। তাই তার অবস্থান ছিল কৃষ্ণাঙ্গদের পক্ষে। ‘নিপীড়িত আর খেটে খাওয়া মানুষের জন্য গান করতেন তিনি। সবাইকে বলতেন একত্র হতে, কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকতে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে কালোদের ওপর চলতে থাকা বর্ণবাদী নির্যাতনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন তার গানের মাধ্যমে। রাজনৈতিক আগ্রাসনের প্রতিবাদও করেছেন মার্লে গানের মাধ্যমে। অধিকারবঞ্চিত মানুষের পক্ষ নিয়ে তিনি সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতা করতেন তাঁর গানের মাধ্যমে। নিজ দেশের রাজনৈতিক সংঘাত মেটাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন তিনি। শান্তির জন্য কয়েকটি কনসার্ট করেছেন তিনি জ্যামাইকায়। এ সব কনসার্টের মাধ্যমে তিনি রাজনৈতিক নেতাদের এক মঞ্চে আনার চেষ্টা করতেন। বব মার্লে তাঁর পুরো ক্যারিয়ারেই যুক্ত ছিলেন রাসটাফারি আন্দোলনের সঙ্গে। জীবনঘনিষ্ঠ গান গাইতেন বলেই বিশ্বজুড়ে মার্লের বিপুল জনপ্রিয়তা তৈরি হয়। ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশে অনেক কনসার্টে গান গেয়েছেন তিনি। ১৯৯৯ সালে তাঁর 'বব মার্লে এন্ড দ্য ওয়েইলার্স' অ্যালবামকে 'বিশ শতকের সেরা অ্যালবাম' নির্বাচিত করে টাইম ম্যাগাজিন।
তার গাওয়া “গেট আপ স্ট্যান্ড আপ”, “বাফেলো সোলজার”,”ওয়ান লাভ”,”নো উওম্যান নো ক্রাই”, দখল করে নিয়েছে সকলের মন। তিনি বিখ্যাত রাস্তা ফেরি আন্দোলনের অন্যতম কর্ণধার। রেগি সঙ্গীতের এই বরপূত্র মাত্র ৩৬ বছর বয়সে ম্যালানোমায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
সুত্রঃ পোর্টাল টিম দ্বারা সংকলিত
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019