অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

রজনীকান্ত সেন

রজনীকান্ত সেন

রজনীকান্ত সেন (জন্ম ২৬ জুলাই, ১৮৬৫ – মৃত্যু ১৩ সেপ্টেম্বর, ১৯১০) প্রখ্যাত কবি, গীতিকার এবং সুরকার হিসাবে বাঙালি শিক্ষা সংস্কৃতিতে চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের সমসাময়িক এই গীতিকারের গানগুলো খুবই জনপ্রিয়। ঈশ্বরের আরাধনায় ভক্তিমূলক ও দেশের প্রতি গভীর মমত্ববোধ বা স্বদেশপ্রেমই তাঁর গানের প্রধান বৈশিষ্ট্য ও উপজীব্য বিষয়।

রজনীকান্ত সেনের মা মনোমোহিনী দেবী বাংলা সাহিত্যের প্রতি বেশ অনুরক্ত ছিলেন। তিনি এ বিষয়ে কিশোর রজনীকান্তের সাথে আলাপ-আলোচনা করতেন। এই আলাপ পর্যালোচনাই তাঁর ভবিষ্যৎ জীবনে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছিল। ভাঙাকুঠির তারকেশ্বর চক্রবর্তী ছিলেন তাঁর বন্ধু। তাঁর সঙ্গীত সাধনাও রজনীকে সঙ্গীতের প্রতি দুর্বার আকর্ষণ গড়তে সাহায্য করে।

স্বদেশি আন্দোলনে তাঁর গান ছিল অসীম প্রেরণার উৎসস্থল। ৭ আগস্ট, ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে কলকাতার টাউন হলে একটি জনসভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিলাতি পণ্য বর্জন এবং স্বদেশি পণ্য গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেন বাংলার প্রখ্যাত নেতৃবর্গ। ভারতের সাধারণ জনগণ, বিশেষত‌ আহমেদাবাদ এবং বোম্বের অধিবাসীগণ, ভারতে তৈরি বস্ত্র ব্যবহার করতে শুরু করেন। কিন্তু এ কাপড়গুলোর গুণগতমান বিলাতে তৈরি কাপড়ের তুলনায় তেমন মসৃণ ও ভালো ছিল না। এর ফলে কিছু সংখ্যক ভারতবাসী খুশি হতে পারেননি। এই কিছু সংখ্যক ভারতীয়দের নিয়ে রজনীকান্ত রচনা করেন তাঁর বিখ্যাত দেশাত্মবোধক ও অবিস্মরণীয় গান – ‘মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে নেরে ভাই; দীন দুখিনি মা যে তোদের তার বেশি আর সাধ্য নাই৷’

এই একটি গান রচনার ফলে রাজশাহীর পল্লিকবি রজনীকান্ত সমগ্র বঙ্গের জাতীয় কবি কান্তকবি রজনীকান্ত হয়ে উঠলেন ও জনসমক্ষে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করলেন। প্রায়শই তাঁর গানগুলোকে কান্তগীতি নামে অভিহিত করা হত।

এ গানটি রচনার ফলে পুরো বাংলায় অদ্ভুত গণ জাগরণ ও নব জাগরণের সৃষ্টি হয়। গানের কথা, সুর ও মাহাত্ম্য বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করায় রজনীকান্তও ভীষণ খুশি হয়েছিলেন। স্বদেশি আন্দোলনের সাথে জড়িত ব্যক্তিবর্গও গানটিকে উপজীব্য করে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে অগ্রসর হতে থাকেন। ভারতীয় বিপ্লবী নেতারাও পরবর্তী বছরগুলোয় বেশ সোৎসাহে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন গানটিকে ঘিরে। রজনীকান্ত শৈশবকাল থেকে সঙ্গীতপ্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। কোথাও কোন সুমধুর সঙ্গীত শুনলেই তিনি সুর, তাল-সহ তৎক্ষণাৎ তা কণ্ঠস্থ করতে পারতেন। তাঁর পিতা গুরুপ্রসাদ সেন এক জন দক্ষ সঙ্গীতজ্ঞ হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। ফলে পিতার সাহচর্য্যেই শৈশবে সঙ্গীত অনুশীলন করার সুযোগ ঘটে তাঁর। বস্তুত কাব্যের চেয়ে গানের ক্ষেত্রে তাঁর কৃতিত্ব অধিক। যৌবনে সঙ্গীত রচনায় বিশেষ পারদর্শিতার পরিচয় প্রদান করেন রজনীকান্ত। অক্ষয়কুমারের বাসভবনে আয়োজিত গানের আসরে তিনি স্বরচিত গানের সুকণ্ঠ গায়ক হিসেবে আবির্ভূত হন তিনি। রাজশাহীতে অবস্থানকালে রজনীকান্ত সেন তৎকালীন সময়ের অত্যন্ত জনপ্রিয় কবি দ্বিজেন্দ্রলালের কণ্ঠে হাসির গান শুনে হাসির গান রচনা শুরু করেন। অত্যন্ত ক্ষিপ্রতার সঙ্গে গান রচনায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার ছিল। তিনি কবি দ্বিজেন্দ্রলাল রায়ের লেখনীর দ্বারা ভীষণ ভাবে প্রভাবিত হয়েছিলেন। ফলে তিনিও তাঁর মতো করে সমগোত্রীয় লেখা লিখতে শুরু করেন।

রজনীকান্তের দেশাত্মবোধক গানের আবেদনই বিশাল ও ব্যাপক। স্বদেশি আন্দোলন চলাকালে (১৯০৫ – ১৯১১) তাঁর ‘মায়ের দেওয়া মোটা কাপড় মাথায় তুলে মেরে ভাই’ গানটি অভূতপূর্ব গণআলোড়নের পরিবেশ সৃষ্টি করেছিল।

বাংলাদেশ এবং ভারতের অনেক সঙ্গীতশিল্পী কান্তগীতি গেয়েছেন। তার মধ্যে কৃষ্ণা চট্টোপাধ্যায়, নীলা মজুমদার, পান্নালাল ভট্টাচার্য, অনুপ ঘোষাল, নিশীথ সাধু, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, শ্রীকান্ত আচার্য্য, অর্ঘ্য সেন, যূথিকা রায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, আরতি মুখোপাধ্যায়, মান্না দে, মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়, ছবি বন্দ্যোপাধ্যায়, ইফফাত আরা দেওয়ান, উৎপলা সেন প্রমুখ অন্যতম। এ ছাড়া তিনি ব্যঙ্গ কবিতাতেও সিদ্ধহস্ত ছিলেন।

মাত্র ৪৫ বছর বয়সে এই কবি, গীতিকার ও সুরকারের মৃত্যু হয়।

সূত্র : উইকিপিডিয়া

সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/16/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate