দেওঘর থেকে বাসে ৫৮ কিমি দূরে দুমকা পাহাড়। চক্রাকারে পাহাড় শ্রেণি, শাল, মহুয়া, পলাশে ছাওয়া সাঁওতাল পরগনার জেলা সদর দুমকাও স্বাস্থ্যকর স্থান। বসন্তে প্রকৃতি মাতোয়ারা করে তোলে, দুমকায় পলাশ তার রক্তিম আভায় সারা পাহাড়ে আগুন ঝরায়। বাসস্ট্যান্ড থেকে দেড় কিমি দূরে শহরান্তে শিব পাহাড়ে মন্দির হয়েছে শিব ঠাকুরের। এ ছাড়া, লাগোয়া মন্দিরে আছেন কালী, হনুমান, নাগদেবী।
চতুর্দশ শতকের মল্লহাটি আজ হয়েছে মলুটি। রামপুরহাট-দুমকা বাসে ১২ কিমি যেতে সুঁড়িচুয়ার মোড় থেকে বাঁ দিকে ৪ কিমি গিয়ে বাংলা-ঝাড়খণ্ড সীমান্তে শক্তিসাধকদের তন্ত্রভূমি দুমকার গুপ্তকাশী মলুটি গ্রাম। দুমকার দূরত্ব ৫৫ কিমি। বাঙালিপ্রধান মলুটিতে ৮-১০ ঘর ওঁরাও-এর বাস। অতীতের ১০৮টি মন্দিরের মধ্যে নানা পুরাণ আখ্যান সম্বলিত, টেরাকোটায় অলঙ্কৃত শিব-পার্বতী, বিষ্ণু-গজলক্ষ্মীর মন্দির দেখে নেওয়া যেতে পারে। তবে মলুটির অন্যতম আকষর্ণ শ্যামা পূজা। সে দিন রাতে মলুটি সেজে ওঠে উৎসবের সাজে। বাজি পোড়ে, পূজা হয় দেবী মৌলীক্ষা কালী, রাজ রাজেশ্বরী কালী, ভয়াল ভয়ঙ্করী শ্মশানের অধিষ্ঠাত্রী দেবী ছাড়াও নানা রূপের কালীর। ভক্তের সঙ্গে দর্শকও আসেন এই রাতে দূর দূরান্ত থেকে। থাকার একমাত্র ব্যবস্থা শর্মা ধর্মশালায়।
তেমনই দুমকা থেকে ৫ কিমি দূরে আদিবাসীদের গ্রাম করুয়া। বনস্পতি উদ্যান তথা বট্যানিকাল গার্ডেন বা সাক্ষরতার পাহাড় সৃষ্টির জন্যই দুমকার প্রশস্তি। সহস্রাধিক নিরক্ষর দরিদ্র গ্রামবাসীর কঠোর শ্রমে নিরক্ষরতা দূরীভূত হয়েছে ৭০০ ফুট উঁচু করুয়া পাহাড় থেকে। পাথর থেকে পাথর সাজিয়ে অনুচ্চ পাহাড় ঘিরে প্রাচীর। সাড়ে দশ হেক্টর জায়গা জুড়ে হাজারদুয়েক গাছের সৃষ্টির নিচুতেও মেডিসিন্যাল প্ল্যান্ট, অপর অংশে ক্যাকটাস। পশ্চিমের ভিউ পয়েন্ট থেকে সূর্যাস্তও মনোরম। আছে রকমারি মন্দির, চড়ুইভাতির উপযুক্ত পরিবেশ। তবে সৃষ্টি পাহাড়ে রান্না বারণ।
হাওড়া ও শিয়ালদহ থেকে দুমকা যাওয়ার প্রচুর ট্রেন তো আছেই। এছাড়া রামপুরহাট, শান্তিনিকেতন, বর্ধমান থেকেও নানাধরনের ট্রেন রয়েছে দুমকা যাওয়ার।
সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/15/2019