গিরিডি-ডুমরি সড়কে গিরিডি থেকে ২৬ কিমি, গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডের ডুমরি থেকে ১৬ কিমি দূরে বাঁ হাতে আরও ৪ কিমি গেলে মধুবন। মধুবন থেকে ৯ কিমি পাহাড়ি পথ পেরিয়ে ১৩৬৬ মি উঁচুতে জৈনতীর্থ ঝাড়খণ্ডের উচ্চতম পরেশনাথ পাহাড়। গহন বনের মাঝ দিয়ে পথ, চড়াই-এর আধিক্য, শেষ ৩ কিমিতে পেরোতে দুরূহ চড়াই।
সরাসরি যাত্রায় কলকাতা থেকে গ্র্যান্ড কর্ড লাইনে ধানবাদ/গোমো পেরিয়ে ৩০৬ কিমি পশ্চিমে পরেশনাথ স্টেশন। কলকাতা থেকে শিয়ালদহ জম্মু তাওয়াই, পূর্বা এক্সপ্রেস, শিপ্রা এক্সপ্রেস, চম্বল এক্সপ্রেস, দুন এক্সপ্রেস, যোধপুর এক্সপ্রেস, মুম্বই মেল(ভফায়া এলাহাবাদ) ট্রেনে ঘণ্টা সাতেকের পথ। এছাড়াও রয়েছে আরও অনেক ট্রেন। রেল স্টেশন থেকে বেরোতেই ১ কিমি দীর্ঘ স্টেশন রোডে নানান ধর্মশালা। মধুবনে শ্রীসম্মেত শিখর দিগম্বর জৈন ধর্মশালাকে ভর করে ১ কিমি জুড়ে দোকানপাট, ব্যাঙ্ক, ধর্মশালা। দিগম্বর ও শেতাম্বর জৈনদের ডজনখানেক ধর্মশালায় হাজার দেড়েক ঘরে যাত্রীবাসের ব্যবস্থা।
মধুবনের শিরে টোপর হয়ে পাহাড়। ২৩তম জৈন তীর্থঙ্কর পার্শ্বনাথ স্বামী ১০০ বছর বয়সে শ্রাবণ মাসের শুক্লা অষ্টমীতে এই পাহাড়ে এসে দেহ রাখেন। সেই থেকে তারই নামে নাম হয়েছে পাহাড়ের। তবে, জৈন পুঁথিতে সম্মেত শিখর নামে সমধিক খ্যাত। তেমনই ২৪ জৈন তীর্থঙ্করের ২৩ জন মোক্ষলাভের তপস্যা করেন এই পরেশনাথে। পাহাড়ের অন্যতম আকর্ষণ পার্শ্বনাথ স্বামীর মন্দির। মন্দিরে পাথরের বুকে পায়ের ছাপ, দেবতার প্রতিভূ হয়ে পূজিত হচ্ছেন আজও। ৩০০ একর জায়গা জুড়ে হাজারিবাগ রেঞ্জের ২৪টি চূড়োয় মন্দির হয়েছে আরও ২৪টি। প্রতিটিতেই পায়ের ছাপ তীর্থঙ্করদের। তবে জল মন্দিরে মূর্তিও রয়েছে তীর্থঙ্করদের। আর আছে পাহাড়ের প্রবেশ দ্বারে গৌতম স্বামীর সমাধি মন্দির জৈন তীর্থ পরেশনাথে।
পার্শ্বনাথ থেকে বিকল্প পথ নেমেছে সীতানালায়। জনশ্রুতি, বনবাসের পথে রামচন্দ্র সহ সীতাদেবী বিশ্রাম নেন এখানে। তীর্থযাত্রী আর ভ্রমণার্থী দুইয়ের কাছেই অতি পবিত্র ও মনোরম এই পরেশনাথ।
সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020