ছোটনাগপুর মালভূমির পশ্চিমাংশে ল্যান্ড অফ পলাশ অ্যান্ড মহুয়া অর্ধাৎ পলামু। উত্তর থেকে দক্ষিণে ৬০ বর্গ কিলোমিটার বিস্তৃত শাল, মহুয়া, পলাশের গহীন বন, গহন অরণ্য --- গড় উচ্চতা ১০০০ ফুট। ১৯৭৪ সালে ৯৩০ বর্গ কিমি এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে ভারতীয় ব্যাঘ্র প্রকল্পের অন্যতম পলামু বা বেতলা ব্যাঘ্র রিজার্ভ। কোর এলাকা ২০০ বর্গ কিমি। তবে জাতীয় উদ্যানের আয়তন ২১৬ বর্গ কিমি। পর্যটকদের কাছে উন্মুক্ত ৩৫ বর্গ কিমি। পর্যটকদের জন্য সারা বছরই খোলা থাকে পলামু। তবে অক্টোবর থেকে এপ্রিল জন্তু দেখার মরশুম হলেও ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস অতীব মনোরম। পলাশের শাখে-শাখে রক্তিম আভা, পর্ণমোচী বৃক্ষের পাতায় পাতায় রঙের বর্ণালী। প্রতি দিন সকাল ৬ টা থেকে ১০টা আর দুপুর ২টো থেকে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে জাতীয় উদ্যানের প্রবেশদ্বার। বেরোবার দরজা খোলা মেলে আরও কিছুক্ষণ।
সুন্দর প্রকতির মাঝে বন্য জন্তুর বিহার দেখবার মতো। টুরিস্ট লজের দ্বারে হরিণ এসে সকালের ঘুম ভাঙায়। বাঘের সঙ্গেই রয়েছে চিতা বাঘ, নেকড়ে বাঘ, অজস্র হাতি, বাইসন, শম্বর, নীলগাই, গৌর, চিতল, বনবিড়াল, লাঙ্গুল, পাহাড়ি শিয়াল, ভল্লুক, শজারু, চিংকারা আরও কত কী। রয়েছে প্রায় দুশোরও বেশি প্রজাতির পাখি।
৫ কিমি দূরে উত্তর-পূর্বে চেরো রাজা মেদনি রাই-এর বিধ্বস্ত দুর্গ, ঐরঙ্গা নদীর তীরে ১৬ শতকের কেল্লা দেখার বস্তু। এ ছাড়া আছে বিশাল সরোবর কমলদহ, হাতিরা স্নান করে আজও। বেতলা থেকে ৯ কিমি দূরের স্বপ্নপুরি কেচকি-ও বেড়িয়ে নেওয়া উচিত। এখানে দক্ষিণ থেকে আসা উত্তাল কোয়েল আর পুব থেকে আসা ঐরঙ্গা নদীর সঙ্গম পর্যটকদের আকর্ষণের বস্তু। শাল, সেগুন ,অর্জুন, মহুয়ায় ছাওয়া আরণ্যক পরিবেশ, তবে জঙ্গল তেমন ঘন নয়।
এগুলি ছাড়াও বেতলার আশপাশের দেখবার জায়গাগুলির মধ্যে রয়েছে কেঁড়, সুগাবাঁধ ও মারুমার।
সব মিলিয়ে আকর্ষণ অগ্রাহ্য করা প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের কাছে প্রায় অসম্ভব।
সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019