মাত্র ৬১৫ মিটার উঁচুতে ছোটনাগপুর পাহাড়ি অধিত্যকায় ব্রিটিশের গড়া পটে আঁকা শহর হাজার বাগ অর্থাৎ হাজারিবাগ। প্রহরী হয়ে চার পাশ ঘিরে ধূসর পাহাড়। স্বাস্থ্যকর জায়গা হিসেবে প্রশস্তি এর। ভিড়ও তাই বেশি পর্যটক থেকে স্বাস্থ্যান্বেষীর। তবে হাজারিবাগ জাতীয় উদ্যানের পর্যটক আকর্ষণ অনস্বীকার্য। আর হাজারিবাগের নবতম আবিষ্কার শহর থেকে ৪০ কিমি দূরে বিশ্বের প্রাচীনতম গুহাচিত্র ইসকো। তিলাইয়া ও কোনার বাঁধ দু’টিও বেড়িয়ে নেওয়া যায় হাজারিবাগ থেকে।
শহরে রয়েছে কানারি পাহাড় বা অবজারভেটরি হিল্স। ৫০০ সিঁড়ি উঠে শহরের দৃশ্য, সূর্যোদয় দেখে নেওয়া যায় পাহাড় থেকে। ওয়াচ টাওয়ারও হয়েছে পাহাড়ে। চলার পথের দৃশ্যও সুন্দর। পথেই পড়ে হাজারিবাগের লেক । সাঁঝ সকালে পায়ে হেঁটে বেড়ানোর মনোরম পরিবেশ। বোটিং-ও করা যায় লেকে। বিপরীতে হাজারো মজার স্বর্ণজয়ন্তী পার্ক। গরমের লু এড়িয়ে সারা বছরই যাওয়া যায় হাজারিবাগে।
হাজারিবাগ শহর থেকে ১৭ কিমি দূরে পোখারিয়া অর্থাৎ জাতীয় উদ্যানের প্রবেশ তোরণ। নিজস্ব গাড়ি ছাড়া পায়ে চলা নিরাপদ নয় এখানে। হাজারিবাগ ভ্রমণার্থীদের মূল আকর্ষণও ওই জাতীয় উদ্যান। ১৯৫৪ সালে রামগড়ের মহারাজার মৃগয়াভূমিতে প্রায় ১৮৪ বর্গ কিমি এলাকা জুড়ে গড়ে উঠেছে এই উদ্যান। গড় উচ্চতা ১৮০০ ফুট। উদ্যান সফরের মনোরম সময় অক্টোবর থেকে এপ্রিল মাস।
ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাস মনোরম হলেও বসন্তের সমাগমে রমণীয় হয়ে ওঠে উদ্যান তথা হাজারিবাগ ভ্রমণ। দিগন্ত জুড়ে আগুন জ্বলে পলাশের শাখে শাখে। শাল, শিমুল ছাড়াও নানা বনজ বৃক্ষ সৌন্দর্যের পসরা সাজায়। তারই মাঝে অগুনতি নানা প্রজাতির হরিণ, বাইসন, প্যান্থার, চিতল, ভল্লুক, নীলগাই রাতের অভিসারে বেরোয়। আবার কখনও কখনও বাঘ ও চিতাবাঘের দর্শনও মেলে চলার পথে।
আদিম জনগোষ্ঠীর বিজ্ঞানচর্চার হদিশ পেতে হলে যেতে হবে অরণ্য ঢাকা ২২ কিমি পথ ধরে বরকাগাঁও-এর আমঝোরা অঞ্চলের পাংক্রিবরোয়াডিহি গ্রামে। হরপ্পা- মহেঞ্জোদরোর সমসাময়িক ইংরাজি V আকৃতিতে স্থাপিত দু’টি মেগালিথ পাথরের ফাঁক দিয়ে ২১ মার্চ ও ২৩ সেপ্টেম্বর মহাবিষুব ও জলবিষুবের দিনে সূর্যের সোজাসুজি উদয় (অন্য দিন বক্র ভাবে) দেখতে পাওয়া যাবে।
সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019