সে দিন বিকেলে পটলডাঙার চাটুজ্যেদের রকে কেবল তিন মূর্তিই বসেছিল! টেনিদা, প্যালা আর হাবুল। কিন্তু তিন জনের মেজাজেই বেশ ফূর্তি। কারণ আর কিছুই নয়, ক্যাবলার স্কলারশিপ পাওয়ার আনন্দে রাতে সবারই নেমন্তন্ন ছিল ক্যাবলাদের বাড়িতে আর তাই ক্যাবলার অনুপস্থিতি বুঝতে কারোরই অসুবিধা হয়নি। বাজার-দোকান সবই ক্যাবলাকেই করতে হচ্ছে। টেনিদা যা ভোজনরসিক এবং ভোজনসক্ষম তাতে শুধু টেনিদার জন্যেই দশ জনের খাবারের আয়োজন করতে হয়! যাই হোক না কেন, ক্যাবলার বাড়িতে আসন্ন রাতের মহাভোজের আনন্দেই টেনিদা উপস্থিত বাকি দু’জনের পকেট ফাঁকের মাধ্যমে দু’প্লেট পাঁঠার ঘুগনি, এক ঠোঙা ডালমুট ভাজা আর তিনটে কুলফি খেয়ে কিঞ্চিৎ নিরানন্দেরও সঞ্চার করেছে। তিন নম্বর কুলফিটা শেষ করার সময় হাবুল টেনিদার হাতের শালপাতার দিকে এমন ভাবেই চেয়েছিল যে মনে হয় ওর প্রাণটাই বোধহয় শেষ হয়ে এল! শালপাতা ফেলতে গিয়ে হঠাৎই টেনিদা চেঁচিয়ে উঠল, “ ঐ, ঐ দেখ ক্যাবলা আমাদের জন্য মিষ্টি কিনে নিয়ে আসছে!” ক্যাবলা কাছে আসতেই টেনিদার প্রশ্ন, “কী মিষ্টি আনলি রে ?” ক্যাবলার উত্তর, “দশ হাঁড়ি রসগোল্লা।” “দশ হাঁড়ি রসগোল্লা ?!!” বলে টেনিদা প্রায় নেচে উঠতে যাবে ঠিক তক্ষুনি ক্যাবলা বলল, “ টেনিদা আগের দিনের ধাঁধাঁটা খুব সহজ ছিল তাই তুমি পেরেছিলে। আজ তোমাকে যেটা দেব সেটা একটু শক্ত, দেখো তো পারো কিনা।” টেনিদা বেশ গম্ভীর ভাবেই বলল, “ আর কোনও শর্ত আছে নাকি ?” ক্যাবলার উত্তর, “হ্যাঁ, পারলে এক কেজি চিনি পাতা দই, শুধুই তোমার জন্যে।” টেনিদা শুনতে চাইতেই ক্যাবলা বলে চলল, “ দেখো টেনিদা, এই দশটা হাঁড়ির প্রতিটায় দশটা করে রসগোল্লা আছে। ন’টা হাঁড়ির প্রতিটা রসগোল্লার ওজন ১০ গ্রাম, কিন্তু বাকি একটা হাঁড়ির প্রতিটা রসগোল্লার ওজন ১১ গ্রাম। তোমাকে একটা আধুনিক ইলেক্ট্রনিক যন্ত্র দেওয়া হবে, যেটায় ১ গ্রাম থেকে ১০ কেজি ওজন নিখুঁত ভাবে মাপা যায়। তুমি তোমার ইচ্ছেমতো সংখ্যক রসগোল্লা একবারই ওই ওজন যন্ত্রে চাপাতে পারবে আর মাত্র এক বারই তোমাকে ওজনের সুযোগ দেওয়া হবে, আর বলতে হবে কোন হাঁড়িতে ওই ১১ গ্রাম ওজনের রসগোল্লাগুলো আছে।”
কি বন্ধুরা টেনিদাকে সাহায্য করবে নাকি ?
সূত্র: কুণাল চক্রবর্তী, bigyan.org.in
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020