অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

গঙ্গায় জগতের আবর্জনা ও জীবাণুর আক্রমণ

গঙ্গায় জগতের আবর্জনা ও জীবাণুর আক্রমণ

গঙ্গাতীরেই ভারতের ৪০ শতাংশ লোক বাস করে। গড়ে উঠেছে রাজধানী, পর্যটননগরী, শিল্পনগরী, তীর্থনগরী। এ ছাড়াও বিবিধ পালাপার্বণে সমগ্র দেশ থেকে কোটি কোটি মানুষের আগমন হয়। বর্তমানে গঙ্গা অববাহিকার ৫০টি শহর থেকে গঙ্গায় ফেলা শুধু নাগরিক বর্জ্য তরলের পরিমাণ প্রায় ৩০০ কোটি লিটার প্রতি দিন। প্রতি দশ বছরে এই পরিমাণ দ্বিগুণ হয়ে যায়। গঙ্গা নদী দূষণমুক্ত রাখার জন্য ভারত সরকার এ পর্যন্ত ১৬ কোটি ডলার ব্যয় করেছে।

নদীদূষণের ৮৫ শতাংশ আসে নাগরিক বর্জ্য থেকে। কানপুরের অলাভজনক সংস্থা ‘সংকট মোচন ফাউন্ডেশন’-এর নির্বাহী পরিচালক ডি কে সান্দ-এর ভাষায়, হিমালয় থেকে বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত নদীতীরবর্তী দেশগুলোর পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা খুবই খারাপ। গৃহস্থালি ও কারখানার বর্জ্য নদীর তলদেশে জমে এর নাব্যতা হারাচ্ছে, দিন দিন ছোট হয়ে আসছে নদ-নদী।

গঙ্গার তীরেই রয়েছে সব চেয়ে বেশি মন্দির। এর ফলে লোকসমাগম বেশি ঘটে এবং দূষণ বাড়ে। ড্রেন দিয়ে ময়লা তরল, মল, সাবানের ফেনা ও অন্যান্য আবর্জনা এসে পড়ছে নদীতে। কিন্তু এগুলো রোধের কোনও উদ্যোগ নেই।

জীবাণুর আক্রমণ

ফিকাল কলিফর্ম (fecal coliform) হল স্তন্যপায়ী প্রাণীর পেট থেকে মলমূ্ত্রের মাধ্যমে বা মৃতদেহ পচে জলে বা মাটিতে মেশা বিভিন্ন প্রজাতির ব্যাকটেরিয়া। এগুলো নানা রোগ সৃষ্টি করে। এ ছাড়াও মলমূত্রের মাধ্যমে আসে রোগসৃষ্টিকারী প্রোটোজোয়া, কৃমির ডিম। যেখানে গবাদি পশু মলত্যাগ করে, বা পুণ্যলগ্নের স্নানের সময় যেখানে স্নানার্থীর স্থায়ী-অস্থায়ী শৌচাগার আছে, বা যেখানে পয়ঃপ্রণালীর মাধ্যমে নগরের লক্ষ বাড়ির শৌচালয়ের জল, সেপটিক ট্যাঙ্কের জল এসে মেশে, সেখানে জল গঙ্গার জল হলেও পবিত্র নয়।

জলে রোগজনক জীবাণুর গাঢ়ত্বের একক mpn/dl, যেখানে ১ ডেসিলিটার (dl)=১০০ মিলিলিটার (ml) এবং mpn=most probable number বা সর্বোচ্চ সম্ভাব্য সংখ্যা। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রক পর্ষদ ও রাষ্ট্রীয় নদী সংরক্ষণ আধিকারিকের দ্বারা মনোনীত স্নানযোগ্য নদীর বাঞ্ছনীয় কলিফর্ম ৫০০mpn/dL বা কম, এবং ২৫০০-এর বেশি হলে কখনওই মেনে নেওয়া যায় না। কিন্তু সবাই মেনে নিচ্ছে অন্ধ বিশ্বাসে আপ্লুত হয়ে। গঙ্গা হিন্দুদের কাছে পবিত্র নদী। তাঁরা এই নদীকে দেবীজ্ঞানে পূজা করেন। গঙ্গায় মৃত্যু হলেও হিন্দুরা সদগতি হয়েছে বলে সান্ত্বনা পায়। তাই তারা মানুষ ও গৃহপালিত প্রিয় পশুর মৃতদেহ গঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়।

জলে মল বা জৈবপদার্থ (প্রসাদী ফলমূল, মিষ্টান্ন, ফুল-বেলপাতা, তিল-তুলসি, মলমূত্র-ঘাম-রক্ত, মৃতদেহ) পচে জৈবপদার্থ-ক্ষয়কারী জীবাণুর দ্বারা, যাদের বলা হয় বিয়োজক (decomposer & converter microbes)। জীবাণুর দ্বারা জৈব পদার্থের পচনের ফলে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন ব্যয় হয়ে গেলে জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী অক্সিজেনের অভাবে মারা যায়। জলে যত বেশি জৈবপদার্থ মেশে, বিয়োজক ও পরিবর্তকের অক্সিজেন চাহিদা তত বেশি। এই biochemical oxygen demand (BOD) জলদূষণের একটি পরিমাপ। কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রক পর্ষদের মতে পানীয় জলে কলিফর্ম মাত্রা সর্বোচ্চ ৫০mpn/dl, BOD সর্বোচ্চ ২mg/L। জলের বিশুদ্ধতা কতটা তার পরিমাপ জলে দ্রবীভূত অক্সিজেন এর মাত্রা (DO)। স্নানযোগ্য ও পানযোগ্য জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের বাঞ্ছনীয় ন্যূনতম গাঢ়ত্ব ৬mg/L। জলে পচনশীল জৈব পদার্থ, ধাতব রাসায়নিক, কারখানার উষ্ণ বর্জ্য জলীয় তরল মিশলে DO কমে। জলের শীতলতা বাড়লে, স্রোতের বেগ বাড়লে, মোট জলপ্রবাহ বাড়লে DO বাড়ে। এখানে গঙ্গার জলের পূর্বতন বিশুদ্ধতা, বর্তমান অশুদ্ধতার কারণ নিহিত।

সূত্র: bigyan.org.in

সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/28/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate