দিনহাটা মহকুমায় বলরাম ঠাকুরের মন্দিরটি উল্লেখের দাবি রাখে। গম্বুজশোভিত মন্দিরটির ছাদ সমতল এবং রেলিং দিয়ে ঘেরা। গম্বুজের দু’পাশে দু’টি থাম এবং সন্মুখে চারথামবিশিষ্ট বারান্দাযুক্ত দালান মন্দিরটি অত্যন্ত সুরম্য। দু’পাশে থামের উপর কলস স্থাপিত আর সন্মুখের থামের উপর ব্রহ্মা, বিষ্ণু, মহেশ্বরের মূর্তি দেখা যায়। মূর্তিগুলি চুন-বালি দিয়ে তৈরি। মন্দিরাভ্যন্তরে কৃষ্ণ-বলরামের অষ্টধাতু নির্মিত বিগ্রহ। সম্ভবত মন্দিরটি বাংলার ১৩১৪ সালে স্থাপিত হয়েছিল। রাসযাত্রায়, জন্মাষ্টমী এবং দোলযাত্রায় বিশেষ উৎসব পালিত হয় এবং সেই উপলক্ষে বেশ বড়ো মেলা বসে।
মধুপুরধাম অসমীয়া ধর্মপ্রচারক কবি শঙ্করদেব এবং দামোদরদেবের পদধুলিধন্য পবিত্র তীর্থক্ষেত্র রূপে সুপরিচিত। কবি শঙ্করদেব শ্রীচৈতন্যদেবের সমসাময়িক ছিলেন এবং কথিত আছে তিনি চিলারায় কোটে (তুফানগঞ্জ) কিছু দিন অবস্থান করেছিলেন। তাঁরই প্রভাবে প্রভাবিত হয়ে মজারাজা নরেন্দ্রনারায়ণ শঙ্করদেব মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মন্দিরটি উচ্চতায় ৫০ ফুটের মতো হবে। মন্দিরটি রেখদেউল রীতিতে নির্মিত পূর্বমুখী মন্দির। মন্দিরের সম্মুখে সমতল ছাদবিশিষ্ট জগমোহন বা মন্ডপ। মন্দিরের শীর্ষদেশে পর পর সংস্থাপিত পদ্ম, আমলক, কলস ও বিষ্ণুচক্র দেখা যায়। মন্দিরাভ্যন্তরে শঙ্করদেব এবং তাঁর শিষ্য মাধবদেবের যুগলমূর্তি এবং তাঁদের ব্যবহৃত জিনিসপত্র যত্ন সহকারে সুসজ্জিত। এই চত্বরে রয়েছে আরও কতকগুলি ধাম-কীর্তনঘর, ভোজনঘর এবং দোলমন্দির। শঙ্করদেবের আবির্ভাব ও তিরোভাব তিথি, রাসযাত্রা, দোলযাত্রা ইত্যাদি উপলক্ষে বড় উৎসব পালিত হয় এবং মেলা বসে। দূরদূরান্ত থেকে বৈষ্ণবগণ এই সব তিথিতে যোগদান করে উৎসব মুখর করে তোলেন।
মধুপুরধামের কিছুটা দূরে তোর্সা নদীর ধারে হরিহরপুরে মহারাজা উপেন্দ্রনারায়ণ আঠারো শতকের প্রথম দিকে ইটের তৈরি সুরম্য চারচালা শিখরবিশিষ্ট শিবমন্দির নির্মাণ করেছিলেন। মন্দিরটি প্রায় ২০/২৫ ফুটের মতো উঁচু এবং পশ্চিমমুখী। মন্দিরটি অতি সুন্দর। প্রবেশদ্বারের উপরে এবং খিলানের দু’পাশ বেলেপাথরে তৈরি লতাপাতা অলংকরণযুক্ত। শিবরাত্রি উপলক্ষে উৎসব প্রাঙ্গণে মেলা বসে।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 10/7/2019