ডুয়ার্স কোনও জায়গাবিশেষের নাম নয়। শিলিগুড়ি থেকে সেবক হয়ে তিস্তা নদীর ওপরে করোনেশন ব্রিজ পেরোলেই ডুয়ার্সের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়া যায়। এর পর সোজা আলিপুরদুয়ারের দিকে ডুয়ার্স দেখতে দেখতে এগিয়ে যাওয়া। এক সময় ভুটানের অসংখ্য প্রবেশপথ ছড়িয়ে ছিল জলপাইগুড়ির জেলার উত্তরাঞ্চলে। অনেকের মতে দুয়ার থেকেই ডুয়ার্স শব্দের উৎপত্তি। ডুয়ার্স শব্দটি শুনলেই আমাদের চোখের সামনে একে একে ভেসে ওঠে জঙ্গল, পাহাড়, অসংখ্য নদী ঘেরা উত্তরের শান্ত-সবুজ নির্জন একটি এলাকা। স্বপ্নমাখা নীল আকাশের নিচে পাহাড়ের গায়ে একরাশ সবুজ। যেখানে হাজারও প্রজাপতির চঞ্চল ডানায় ছলকে ওঠে একরাশ রং। স্বপ্ন ও বাস্তবতার এক অপূর্বৃ স্বাদ গ্রহণ করতে মানুষ ছুটে চলে ডুয়ার্সের পথে। নারায়ন গঙ্গোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদার, সুনিল গঙ্গোপাধ্যায় এর মতো সাহিত্যিকের বিভিন্ন লেখায় ডুয়ার্সের সৌন্দর্যের যে বর্ণনা বাঙালি পাঠক পেয়েছে, তাতে ডুয়ার্সে একবার ঘুরে আসার ইচ্ছা একজন প্রকৃতি প্রেমিকের না জেগে পারে না।
ওদলাবাড়ি থেকে কুমারগ্রাম পর্যন্ত বিস্তৃত তিস্তা থেকে সংকোশ পর্যন্ত জলপাইগুড়ি জেলার মাত্র ১১টি ব্লকে ১৩৮টি ভাষা ও উপভাষার মানুষের বাসভূমি ডুয়ার্স। কোচ, রাভা, মেচ, রাজবংশী, বোড়ো, সাঁওতাল, মুন্ডা, ওঁরাও এই সব জনজাতির পাশাপাশি রয়েছেন বাঙালি-সহ অন্যান্য বহু ভাষাভাষীর মানুষ। আজান আর শাঁখের সুরে বেজে উঠেছে প্রাণের ঐক্যতান। চাঁদভাঙা জোছনা রাতে কুলি লাইন থেকে উঠে আসা দ্রিমি দ্রিমি মাদলের বোল চাবাগিচার সবুজ গালিচা পেরিয়ে কখন যেন আছড়ে পরে নীল পাহাড়ের গায়ে।
যাওয়া – ডুয়ার্সের কোনও জায়গায় যেতে শিলিগুড়ি বা নিউ জলপাইগুড়ি থেকে কয়েক দিনের জন্য গাড়ি ভাড়া করে নেওয়া যায়। জলদাপাড়া ও বক্সাঅরণ্যে আলিপুরদুয়ার হয়েও যাওয়া যায়। কোনও কোনও ট্রেন হাসিমারা-তেও থামে। শিলিগুড়ি থেকে ডুয়ার্সের বিভিন্ন অংশে যাওয়ার জন্য বাসও পাওয়া যায়।
মরসুম – ১৬ জুন থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর গরুমারা ও জলদাপাড়া অভয়ারণ্য বন্ধ থাকে। বেড়ানোর সেরা সময় অক্টোবর থেকে মার্চ।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 9/26/2019