কল্যাণেশ্বরী মন্দির বর্ধমান জেলার অন্তর্গত আসানসোল মহকুমার কল্যাণেশ্বরীতে অবস্থিত। এই মন্দিরটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের ঝাড়খণ্ড সীমান্তে বরাকর নদীর তীরে অবস্থিত। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের অধীন বিখ্যাত মাইথন বাঁধের থেকে ৫ কিলোমিটার (৩.১ মাইল) দূরে অবস্থিত এই মন্দিরটি একটি পর্যটন আকর্ষণ। কিছুদিন হল তৈরি ২ নং জাতীয় সড়কের থেকে মোটামুটি ১ কিলোমিটার (০.৬২ মাইল) দূর দিয়ে যাওয়া পুরনো গ্র্যান্ড ট্রাঙ্ক রোডের উপর বরাকর শহর থেকে এই মন্দিরের দূরত্ব ৭ কিলোমিটার (৪.৩ মাইল) কিলোমিটার।
বরাকর নদ যেখানে বাংলা-ঝাড়খণ্ডের সীমানা গড়েছে, সেখানে জাগ্রতা দেবী কল্যাণেশ্বরীর থান। ঠিক বাংলার অন্দরে হ্যাংলা পাহাড়ে ৫০০ বছরের প্রাচীন কল্যাণেশ্বরী মাতার মন্দির। জনশ্রুতি, কুষাণদের তাড়া খেয়ে ৩ শতকে হরিগুপ্ত পালিয়ে এসে রাজ্য গড়েন হ্যাংলা পাহাড়ে। মন্দিরও গড়েন তিনি। তবে, এখনকার মন্দিরটি পঞ্চকোটের রাজার তৈরি। অতীতে নরবলির প্রথা ছিল দেবীর থানে। কৃত্রিম গুহামন্দির দেবীর। গুহার দ্বার রুদ্ধ। গুহামুখে অষ্ট ধাতুর মূর্তি দেবীর। আর অন্দরে সোনার তৈরি দেবীর মূল মূর্তি। মন্দিরের উত্তরে স্রোতস্বিনী চালনার পাড়ে দেবী কল্যাণেশ্বরী (শ্যামা) যেখানে শাঁখা পরেন, স্মারক রূপে মন্দির হয়েছে সেখানেও। পায়ের ছাপও রয়েছে পাষাণ বেদিতে দেবীর। আর মন্দির চত্বরেই রয়েছে চতুর্দশ শিব মন্দির। শীতলা মায়ের থানে মনস্কামনা পূরণে ঢিল বাঁধার প্রথাও আছে। শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দির তৈরি হয়েছে কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের প্রবেশপথে।
কল্যাণেশ্বরী মন্দিরের কাছেই বরাকরে ডিভিসি বাঁধ দিয়েছে। ১৯৫৭ সালে উদ্বোধন করেন ভারতের তখনকার প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। জায়গাটি মায়ের স্থান, তাই মায়ের থান। সেখান থেকে নামকরণ হয় মাইথন।
হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেনে বরাকর। সেখান থেকে বাসে বাঁ গাড়িতে কল্যাণেশ্বরী। আসানসোল থেকে এলে পথে দেখে নেওয়া যায় ঘাঘরবুড়ির মন্দির। এই মন্দিরের বয়স প্রায় ৪০০ বছর। এক সময় দুর্গম ছিল। জায়গাটা ছিল জঙ্গলে ঢাকা। এখন ভোল পাল্টেছে। একেবারে আসানসোল শহরের কাছেই জাতীয় সড়কের একেবারে ধারে। চণ্ডীর এই মন্দির এই অঞ্চলে খুব জনপ্রিয়।
সূত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/13/2020