বৈষ্ণব ধর্মের পীঠস্থান নবদ্বীপ। ভাগীরথীর পাড়ে নবদ্বীপে ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দে দোলপূর্ণিমায় আবির্ভাব শ্রীচৈতন্যদেবের। গঙ্গার প্রবাহ বদলে বিভ্রান্তি ঘটেছে জন্মভিটে নিয়ে। তবে শ্রীচৈতন্যের দ্বিতীয়া পত্নী বিষ্ণুপ্রিয়ার জন্ম আজকের নবদ্বীপে। জন্মভিটে নিয়ে বিভ্রান্তি ঘটলেও ঘরে ঘরে গৌরাঙ্গপ্রভুর মন্দির। নবদ্বীপ জুড়ে একের পর এক মন্দির আর মঠের সারি। বিরাম ণেই নাম সংকীর্তনের। সারা দিন ধরেই চলে দেবতার ভজন।
রিকশা ভাড়া করে বা পায়ে পায়ে ঘুরে নেওয়া যায় মন্দিরগুলি। বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর প্রতিষ্ঠিত দারু নির্মিত মহাপ্রভুর বিগ্রহ মন্দির, বুড়ো শিব, হরিসভা, পোড়ামাতলা মহাপ্রভু মন্দির, অদ্বৈতপ্রভু মন্দির, জগাই-মাধাই, শচীমাতা-বিষ্ণুপ্রিয়ার জন্মভিটায় নিত্যানন্দপ্রভুর মন্দির, বড় আখাড়া, শ্রীশ্রী গোবিন্দজিউ, সোনার গৌরাঙ্গ, সমাজবাড়ি, বড় রাধেশ্যাম, রাধাবাজারে শ্রীসারস্বত গৌড়ীয় আসন, দেবানন্দ গৌড়ীয় মঠ, মণিপুর পাড়ায় সোনার গৌরাঙ্গ, । মন্দিরের উপনিবেশ যেন নবদ্বীপ – পুরসভার হিসাবে ১৮৬টি মন্দির। হাওরা-শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে যাওয়া যায় নবদ্বীপ। কলকাতা থেকে কৃষ্ণনগর গিয়ে সেখান থেকে বাসে যাওয়া যায়। অথবা কৃষ্ণনগর থেকে ন্যারোগেজ লাইনে নবদ্বীপধাম স্টেশনে পৌঁছে ফেরি পেরিয়ে নবদ্বীপে যাওয়া যায় বা সরাসরি বাসে নবদ্বীপে পৌঁছনো যায়। নবদ্বীপধাম স্টেশনের কাছে মিউনিসিপাল ট্যুরিস্ট লজ। এ ছাড়া শহর জুড়ে নানান বেসরকারি লজ, ধরমশালা ও অতিথিশালা আছে। নবদ্বীপের প্রধান আকর্ষণ রাস উৎসব। কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে ধুমধামে পালিত হয় এই রাস মেলা। রাসে মূর্তিপূজায় বৈচিত্র্য আছে নবদ্বীপে।
রাসকালে শাক্ত মতে পূজার্চনা হয়। নানা রূপে বিশালাকার শাক্ত দেবী দুর্গা, কালী ছাড়াও অন্যান্য দেবদেবীও পূজিত হন রাসে। দোল উৎসবেরও মাধুর্য আছে নবদ্বীপে। দোলপূর্ণিমার আগের দিন সন্ধ্যায় শ্রীকৃষ্ণের মাধবাসুর বধ স্মরণে ন্যাড়াপোড়া দিয়ে পক্ষকালব্যাপী উৎসবের সুচনা। দোলের সকালে নগর পরিক্রমা। মহাপ্রভুর জন্মদিনে মহাপ্রভুর চরণ ও বিষ্ণুপ্রিয়ার মূর্তি-সহ আলোর রোশনাই ও বাদ্যির বৈভবে বের হয় নগর সংকীর্তন। সে-ও দেখার। সব মিলিয়ে ভ্রমণ প্রিয় মানুষের পক্ষে নবদ্বীপের আকর্ষণ উপেক্ষা করা অসম্ভব।
সূত্র: পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/29/2020