পুরুলিয়া জেলার ঝাড়খণ্ড সীমান্তে দলমা পাহাড়ের একটি অংশ ও পূর্বঘাট পর্বতমালার একটি সম্প্রসারিত অংশ অযোধ্যা পাহাড়। উচ্চতা প্রায় ২০০০ফুট। অযোধ্যা পাহাড়ের উচ্চতম শৃঙ্গটি হল গোরগাবুরু। এই অঞ্চলটি ছোটো নাগপুর মালভূমির সবচেয়ে নিচু ধাপ। বাঘমুন্ডি বা অযোধ্যা পাহাড়ের আশেপাশের অঞ্চলটি হল একটি সম্প্রসারিত মালভূমি।
শাল, শিরিষ, মহুয়া, সেগুনে ছাওয়া সবুজ অরণ্যভূমি আর ছোট-বড় পাহাড়ি ঝোরা নিয়ে মনোরম পাহাড়ি পরিবেশ। পাহাড়ের ঢালে আদিবাসী গ্রাম, চাষের ক্ষেত। ট্রেকিংয়ের জন্যই অযোধ্যা পাহাড় বেশি পরিচিত। এর একটা এন্ট্রি পয়েন্ট পূর্ব দিকে সিরকাবাদ, অন্যটি পশ্চিমে বাঘমুন্ডি। দু’টি দিক দিয়েই ট্রেকিং করে পাহাড়ে ওঠা যায়। পাহাড়ে ট্রেকিং করা ছাড়াও ঘুরে নেওয়া যায় ছৌ শিল্পের পিঠস্থান চোড়িদা গ্রাম, চাণ্ডিল ড্যাম, পাখি পাহাড়, সীতা কুণ্ড, টুরগা ফলস প্রভৃতি।
হিন্দু কিংবদন্তি অনুসারে, রাম ও সীতা বনবাসের সময় অযোধ্যা পাহাড়ে এসেছিলেন। এখানে এসে সীতা তৃষ্ণার্ত হয়ে পড়লে রাম নিজের তীরের সাহায্যে মাটি খুঁড়ে জল বের করে আনেন। সেই জায়গাটি সীতাকুণ্ড নামে পরিচিত। বৈশাখ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে স্থানীয় আদিবাসীরা এখানে বন্য পশু শিকার উৎসবে যোগ দেয়। নিকটতম রেলস্টেশন এক দিকে পুরুলিয়া ও অন্য দিকে সুইসা। সিরকাবাদ হয়ে যেতে চাইলে পুরুলিয়া থেকে বাসে পৌঁছতে হবে। সিরকাবাদ থেকে ট্রেকিং শুরু। অন্য দিকে হাওড়া-রাঁচি রেলপথে সুইসা পৌঁছে সেখান থেকে ভ্যান বা জিপে বাঘমুন্ডি হয়ে অযোধ্যা। বাঘমুন্ডি থেকেও ট্রেক করা যায়। নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চার মাস পুরুলিয়া থেকে অযোধ্যা যাওয়ার সরাসরি বাস পাওয়া যায়।
বন দফতরের ট্যুরিস্ট বাংলো আছে অযোধ্যা পাহাড়ে। ওয়েস্ট বেঙ্গল কমপ্রিহেনসিভ এরিয়া ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের লজগুলি একেবারে পাহাড়ের মাথায়। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের বা কৃত্তিবাস আশ্রমেও থাকার ব্যবস্থা আছে। বাঘমুণ্ডি ও বলরামপুরে সেচ দফতরের বাংলা আছে – সেচ বিভাগ, পুরুলিয়া। মেলা – পৌষ সংক্রান্তিতে টুরগা বাঁধে টুসু মেলা বসে। চৈত্র সংক্রান্তিতে অযোধ্যার কাছেই বসে লহরিয়া বাবার গাজন মেলা।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 10/3/2019