শাল মহুয়ার জঙ্গলে ঘেরা ঝাড়গ্রামের কথা প্রকৃতিপ্রেমীদের কাছে নতুন করে বলার কিছুই নেই। তাদের কাছে দুর্নিবার। কলকাতা থেকে দূরত্বও বেশি নয় , মাত্র ১৮১ কিলোমিটার। হাওড়া থেকে ট্রেনেই চলে যাওয়া যায়। বাসও যাচ্ছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে। প্রাচীন মন্দির, রাজ প্রাসাদ, আদিবাসী সংস্কৃতি, ধামসা মাদলের ধ্বনি, ঝাড়গ্রাম ঘিরে অনেক কিছু-কোনটা ছেড়ে কোনটা বলব। বাহুল্যের ঝুঁকি সত্ত্বেও কয়েকটা কথা বলে নেওয়া যাক। স্টেশন থেকে ৩ কিমি দূরে শহরের উপকণ্ঠে রাজবাড়ি। বিশেষ অনুমতিতে রাজবাড়ি দেখার ব্যবস্থা মেলে। আছে চতুর্মুখ শিব, লোকেশ্বর বিষ্ণু, মনসা দেবীর মন্দির। আর শহর থেকে ৩ কম দূরে কৃষ্ণনগরে ১৯৮৩-তে গড়া ৩৪.৫ হেক্টরের ঝাড়গ্রাম ডিয়ার পার্ক তথা মিনি চিড়িয়াখানা। রয়েছে রঘুনাথপুরের পথে আদিবাসী সংস্কৃতি পরিষদ। ঝাড়গ্রামের মহারাজা বিক্রমজিৎ মল্ল উগাল দেব বাহাদুরের খনন করা রাধানগরে ১০০ একর ব্যাপ্ত দিঘি অর্থাৎ কেচেন্দা বাঁধ তথা রাজবাঁধ। স্টেশন থেকে ১০ কিমি আর লোধাশুলি থেকে ৫ কিমি দূরে ২০ বিঘার জঙ্গলমহল। রঙবেরঙের শতাধিক প্রজাতির গোলাপের বাগিচায় ক্যাকটাস, অর্কিড, জীবজন্তু, ফুলফল, গাছগাছালির জঙ্গলমহল ঝাড়গ্রামের অন্যতম দ্রষ্টব্য।
ঝাড়গ্রাম থেকে চলো চিল্কিগড় --– বাসে বা গাড়িতে ১৬ কিমি। গড় ও কনকদুর্গা মন্দিরের জন্য চিল্কিগড়ের খ্যাতি। চড়ুইভাতির আদর্শ পরিবেশ চিল্কিগড়। এ বার যাওয়া যাক গড়শালবনি। ঝাড়গ্রাম স্টেশনে নেমে বাস নিলেই পৌঁছে যাওয়া যাবে গড়শালবনি। ডাকাবুকো ছেলেদের দুর্দান্ত লাগবে জঙ্গলের মধ্যে একটা ফার্ম হাউজে রাত কাটাতে, সে বিষয়ে সন্দেহ নেই। তবে সিনেমায় যে রকম দেখা যায়, এই ফার্ম হাউজ কিন্তু মোটেই সে রকম নয়। এক কালে মল্ল রাজাদের সম্পত্তি ছিল এই বাড়িটা। জঙ্গলের মধ্যে গা-ছমছমে পরিবেশ, পুরনো মন্দির, নদী, আঁকাবাঁকা পথ, কী নেই গড়শালবনিতে! উদ্দেশ্য যদি হয় প্রকৃতির কোলে নিরালায় ছুটি কাটানো, তবে শাল-মহুয়ায় ঘেরা এই জায়গাটা একদম পারফেক্ট।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/7/2020