এ যেন সৌন্দর্যের স্বপ্নপুরীতে প্রবেশের দরজা। ২৯৪ হেক্টরের প্রাকৃতিক জঙ্গলে ঘেরা দুয়ারসিনি। গভীর অরণ্যের মাঝেমাঝে ছোট ছোট টিলা। পাহাড় আর পাহাড়ের মাঝ দিয়ে আঁকাবাঁকা পথে বয়ে চলা সাতগুরুম নদী। কেন্দু-সেগুন-আসন-কুসুম-করম-শাল-পিয়াল-মহুয়া-আমলকী-বহেড়ায় ছাওয়া টিলাগুলি। ফাগুনে পলাশ ও শিমুলের রঙে রাঙা হয় দুয়ারসিনির আকাশ। সাঁওতাল, খেড়িয়া, মুন্ডা, শবরদের বাসভূমি দুয়ারসিনি। এখানে আছে পাহাড়, জঙ্গল, নদী, নির্জনতা আর মাথার উপর নীল আকাশের শামিয়ানা। জঙ্গলপথ ধরে নীচে নামলে দেখতে পাওয়া যায় সাত ধারার সেই আশ্চর্য নদীকে। কাচের মতো স্বচ্ছ জল, ছোট ছোট মাছ খেলে বেড়াচ্ছে। এ নদীর বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন নাম। কোথাও চাকিকভাঙা, কোথাও আবার বলদডোবা।
এখানে থাকার জায়গা পশ্চিমবঙ্গ বন উন্নয়ন নিগমের বাংলো। বাংলো থেকে বেরিয়ে দেড় কিমি হাঁটলেই পৌঁছে যাবে আসনপানি গ্রামে। সেখানে আদিবাসীদের বাস। আরও দূরে ঠেকাদহ, মেঘাদহ নামে সব আদিবাসীদের গ্রাম। কী মিষ্টি নামগুলো। বনবাংলোর কটেজগুলো দেখতে ধানের গোলার মতো। বাংলো কাঁটাতারে ঘেরা। জঙ্গলে হায়েনা, নেকড়ে, প্যাঙ্গোলিয়ান, বুনোশুয়োর, ময়ূর, প্রজাপতি ও নানা জাতের পাখি দেখতে পাওয়া যায়। মাঝে মাঝে এরা নেমে আসে ধানক্ষেতে, জল খেতে। তাই এই ব্যবস্থা। ১৫৫ মিটার উঁচু হিলটপে আকাশ উদ্যানটি মনোরম।
নির্জনতার অনন্য ঠিকানা দুয়ারসিনি। আর এই ঠিকানায় পৌঁছতে ওঠো ট্রেনে। হাওড়া থেকে ট্রেনে পুরুলিয়া, সেখান থেকে বাসে বান্দোয়ান। বান্দোয়ান থেকে ট্রেকারে বা গাড়িতে দুয়ারসিনি। যদি কেউ অ্যাডভেঞ্চার করতে চাও তা হলে একটু অন্য ভাবে আসতে পারো। হাওড়া থেকে ট্রেনে ঘাটশিলা এসে সেখান বাসে চলে এসো নরসিংহপুর, ২০ কিলোমিটার পথ। তার পর বনপথ ধরে হাঁটা আধ ঘণ্টা। ৩ কিমি রাস্তা। দল বেঁধে এলে এ পথে আসাই যায়। কলকাতা থেকে বান্দোয়ান সরাসরি বাসেও আসা যায়। যাঁরা নিরিবিলিতে দু’-একটা দিন কাটাতে চান, তাঁদের পক্ষে আদর্শ জায়গা দুয়ারসিনি।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/23/2020