ঝাড়গ্রাম থেকে ৩৫ কিলোমিটার দূরের বেলপাহাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র। দলমা পাহাড়ের নীচে এর অরণ্য যেন সৌন্দর্যের আঁতুড়ঘর। শাল, মহুয়া, পিয়াল, সোনাঝুরি, শিরিষ, ইউক্যালিপটাস, সবই মিলবে বেলপাহাড়ির জঙ্গলে। সুন্দর নৈসর্গিক শোভার মাঝে সরল মানুষজন। চোখে পড়ে কানাইসোল পাহাড়ের ঢালে পূর্ণিমার চাঁদ। মকর সংক্রান্তিতে এলাকা জুড়ে চলে টুসুর উৎসব।
বেলপাহাড়ি থেকে লাল মোরামের পথ পৌঁছে দেয় স্বপ্নপুরী ঘাঘরায়। ৯ কিমি পথ। জিপে যাওয়া যেতে পারে, কিংবা হেঁটে, সংক্ষিপ্ত রাস্তায় সময় লাগে মিনিট চল্লিশ। শাল-পিয়াল-অমলতাস-ইউক্যালিপটাসের বনবাসর ভেদ করে পায়ে চলা পথ। পাহাড়ে ঘেরা চার পাশ। চার দিকে সবুজ শালের সমারোহ। আর মাঝে বিস্তীর্ণ ব্ল্যাক স্টোনের অজস্র গহ্বর ভেদ করে সাপের ফনার মতো ফুসছে জলরাশি। ইতিউতি মাথা উচিয়ে আছে টিলা। জলের আঘাতে এখানকার পাথরগুলির আকৃতি কলসি বা গাগড়ির মতো। স্থানীয় ভাষায় তাকে বলে ‘গাগরা’। সেখান থেকেই ঘাঘরা নামটির জন্ম। বহু কাল ধরেই এই ঘাঘরা স্থানীয় উপজাতি ও অনুন্নত সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে অন্যতম পবিত্র স্থান। ঘাঘরার মাঝ দিয়ে বয়ে যায় তারাফেনি। অদূরে তারাফেনি ব্যারেজ। কংসাবতীর জল বন্দি হয়েছে ১০ লকগেটের বাঁধে। বেলপাহাড়ি থেকে আরও ১০ কিমি যেতে তামাজুড়ি বাসপথে ভোলাবেদা। সেখান থেকে ১৮ কিমি হেঁটে বা সাইকেলে বা জিপে চলে যাওয়া যায় জঙ্গলের অন্দরে, কাঁকড়াঝোড়ে। পথ বন্ধুর, চড়াই-উতরাই আছে, দু’ পাশে গহীন বন। মানুষজনের দেখা খুব একটা মেলে না এই পথে, এই পথে নির্জনতাই বড় প্রাপ্তি। পশ্চিম মেদিনীপুরের একটি অরণ্যে ঘেরা ট্রেকিং পয়েন্ট। ‘কাঁকড়া’ শব্দের অর্থ পাহাড়। ‘ঝোড়’ শব্দের অর্থ অরণ্য। ৯০০০ হেক্টর এলাকা জুড়ে এই এলাকা। রয়েছে কুসুম, শাল, সেগুন, মহুয়া, আকাশমণি গাছ। এখানে কাজু বাদাম,কফি ও কমলালেবুর চাষ হয়। এখানে থাকার জন্য আছে বন দফতরের পর্যটক আবাস। আছে অতি সাধারণ মানের বেসরকারি লজ। বিদ্যুৎ নেই কাঁকড়াঝোড়ে। রাতে কেরোসিনের আলো। টর্চ আর মশা তাড়ানোর ধূপ বা মশা নিরোধক ক্রিম সঙ্গে থাকা ভালো।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 12/1/2019