সপ্তাহান্তের ছুটি কাটানোর পক্ষে মুকুটমণিপুরের সঙ্গে তুলনীয় পর্যটনস্থল দক্ষিণবঙ্গে খুব কমই আছে। কংসাবতী ও কুমারী নদীর সঙ্গমে উইক-এন্ড ছুটি কাটানোর দারুণ স্পট মুকুটমণিপুর। ৮৬ বর্গ কিলোমিটারের জলাধার কুমারী আর কংসাবতীর জলে। টলটলে নীল জলে ছোট ছোট ঢেউ, তারই মাঝে ভেসে বেড়ায় নয়নলোভন বাহারি নৌকা। দিকচক্রবাল ঢাকা পড়েছে অনুচ্চ পাহাড়ি টিলায়। আঁকাবাঁকা পায়ে চলা পথ পাহাড়ের গা বেয়ে উধাও। সূর্যোদয় আর সূর্যাস্ত দুই-ই মনোরম। আরও অপরূপ জ্যোৎস্না রাত। লেকের জলে বোটিংয়ের ব্যবস্থাও আছে।
নিরালা নিভৃতে টিলার ঢালে টুরিস্ট লজটির পরিবেশটিও সুন্দর। লজের সামনে কেয়ারি করা প্রশস্ত লন, তারই সামনে কুমারী ও কংসাবতীর বাঁধ। বনবাংলোর অবস্থানটি যেন আরও মুগ্ধ করে। পাহাড় শীর্ষের বনবাংলোয় পৌঁছে ঘোরান পেঁচানো পাহাড়ি পথ। তাতে অবশ্য গাড়ি ওঠে। শীতের দিনে মিষ্টি রোদে গা এলিয়ে বা ভরা পূর্ণিমায় চাঁদের আলোয় শরীর ভিজিয়ে আকণ্ঠ পান করে নাও মুকুটমণিপুরের মাধুর্য।
মেঠো পথে ৩ কিমি আর বাঁধ ধরে ৬ কিমি যেতে পরেশনাথ পাহাড়ি টিলায় হিন্দুর দেবতা শিব ও জৈন দেবতা পার্শ্বনাথ স্বামীর মন্দির। এ ছাড়াও মূর্তি রয়েছে নানান। ফেরিতে নদী পেরিয়ে ওপারে আরও দেড় কিমি গিয়ে জলাধারে বেষ্টিত মহুয়া-কেন্দু-পলাশ-আমলকীতে ছাওয়া ছোট্ট সবুজ দ্বীপ বনপুকুরিয়ায় মৃগদাবটি দেখে নিতে ভুলো না। আর ৪ কিমি দূরে গোরাবাড়ি পেরিয়ে অম্বিকানগর – অতীতের কীর্তিখ্যাত রাজা অনন্তধবল দেও-র রাজধানী আজ বিধ্বস্ত হলেও অম্বিকার মন্দিরে দেবী অম্বিকাকে দর্শন করে আসা যায়। কাছেই ঝিলিমিলি, মুকুটমণিপুর থেকে বাসে খাতড়া হয়ে পৌঁছে যাওয়া যায়। কলকাতা, দুর্গাপুর, আসানসোল, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর – পশ্চিমবঙ্গের নানান জায়গা থেকে বাস যাচ্ছে মুকুটমণিপুর। কাছের স্টেশন বাঁকুড়া। থাকার জন্য টুরিস্ট লজ, বনবাংলো ছাড়াও রয়েছে সেচ ও জল দফতরের কংসাবতী ভবন। এ ছাড়াও বিভিন্ন মানের বিভিন্ন দামের বেসরকারি হোটেল রয়েছে।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020