মালদা জেলার গাজোল থানার অন্তর্গত পান্ডুয়া গ্রামটি মালদা শহর থেকে প্রায় ১৭/১৮ কিলোমিটার দূরে মালদা হয়ে রায়গঞ্জগামী ৩৮ নং জাতীয় সড়কের উপর অবস্থিত। আজকের এই গ্রাম পান্ডুয়ার ইতিহাস অতি প্রাচীন। হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলমান ধর্ম ও সংস্কৃতিতে লালিত পালিত এক প্রাচীন জনপদ।
মধ্যযুগের ইতিহাসে যে সকল সুফি-পির বাংলার মাটিতে ইসলাম ধর্মের বীজ বপন করেন তাদের মধ্যে জালালুদ্দিন তবরেজি অন্যতম। সুদূর পারস্যের তাবরেজ থেকে তিনি দিল্লি হয়ে বাংলায় আসেন। পান্ডুয়াতেই ছিল তার আস্তানা। তার নামানুসারেই এ জায়গার নাম হয় হজরত-পান্ডুয়া। জালালুদ্দিন তার যাবতীয় সম্পত্তি মানব সেবায় দান করে যান। সম্ভবত সে সময় সেই সম্পত্তির মূল্য ছিল বাইশ হাজার টাকা এবং তার থেকেই ওয়াকফ করা এই ভূসম্পত্তি বাইশ হাজারি ওয়াকফ এস্টেট নামে পরিচিত। এই ওয়াকফ স্টেটের তত্ত্বাবধানে অন্য নানা কাজের সঙ্গে প্রতি রজব মাসের ২২ তারিখে জালালুদ্দিন তবরেজির মৃত্যু তিথি পালিত হয়। হাজার হাজার ভক্ত সে সময় জড়ো হয় বড়ি দরগায় সিন্নি চড়াতে। সেই উপলক্ষেই এই বাইশ হাজারির মেলা।
অতি প্রাচীন এই মেলা কারও মতে ৬০০ বছর, কারও মতে ৭০০-৮০০ বছরের পুরনো। আগে এই মেলা চলত ২২ দিন ধরে। বর্তমানে মেলা চলে ২০ রজব থেকে ২৫ রজব পর্যন্ত। মেলাটি চরিত্রগত ভাবে গ্রামীণ । ভিড় নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদেরই বেশি। গ্রামীণ পণ্য নিয়ে মালদা গাজোল থেকে ব্যাপারীরা যেমন আসেন, তেমনই আসেন বিহারের পূর্ণিয়া, কাটিহারের ব্যাপারীরাও। নাগরদোলা ও চরকিদোলা থাকলেও সার্কাসের আসর বসে না প্রতি বছর। বসে নাচের আসর পাঁচ টাকার টিকিটে পাঁচটি নাচ দেখা যায়। শিল্পীরা শিলিগুড়ি-রায়গঞ্জের। ক্রমেই জমি হারাচ্ছে সার্কাস-ম্যাজিক। মেলার বিকিকিনি ক্রমশ কমে আসায় দোকানিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/30/2020