অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত (জন্ম ৬ অক্টোবর, ১৯৩৩) এক জন বিখ্যাত বাঙালি কবি। তাঁর ২০টিরও বেশি কাব্যগ্রন্থ আছে। এর পাশাপাশি তিনি বহু বাংলা ও সাঁওতালি কবিতা ও নাটক ইংরাজি ও জার্মানে অনুবাদ করেছেন। জার্মান ও ফরাসি সাহিত্য অনুবাদ করেছেন বাংলায়। তাঁর বেশ কয়েকটি প্রবন্ধের বই-ও আছে। তাঁর গদ্যরচনার বিশেষ ভঙ্গি বাংলা সাহিত্যে আলাদা স্থান করে নিয়েছে।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জার্মানি পর্যন্ত তাঁর অধ্যাপনার জগৎ বিস্তৃত থেকেছে। ভারতীয় ও জার্মান সংস্কৃতিকে কাছাকাছি নিয়ে আসার তাঁর প্রয়াসের জন্য জার্মান সরকার তাঁকে গ্যেটে পুরস্কার দেয়।
অলোকরঞ্জন বহু পুরস্কার পেয়েছেন। তার মধ্যে রয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুধা বসু সম্মান (১৯৮৩), আনন্দ পুরস্কার (১৯৮৫), প্রবাসী ভারতীয় সম্মান (১৯৮৫), রবীন্দ্র পুরস্কার (১৯৮৭)। কাব্যগ্রন্থ মরমী করাতের জন্য ১৯৯২ সালে সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার পান অলোকরঞ্জন। ওই বইয়ের জন্য ২০০৫ সালে তিনি আবার প্রবাসী ভারতীয় সম্মান পান।
ঐতিহ্যের প্রবাহমানতায় বিশ্বাসী অলোকরঞ্জন দাশগুপ্ত এক সম্পূর্ণ পৃথক বাচনভঙ্গি, যা তাঁর একান্ত নিজস্ব, দিয়ে সমৃদ্ধ করেছেন বাংলা কবিতাকে। নিত্য নতুন শব্দের সন্ধান, অপূর্ব শব্দ বিন্যাস কবিতামনস্ক পাঠকদের তাঁর কবিতার প্রতি আকৃষ্ট করে। কেমন লেখেন অলোকরঞ্জন ? উদ্ধৃতি দেওয়া যাক তাঁর লেখা ‘এক-জানালা-রাত্রি আমার’ থেকে --- এক-জানালা-রাত্রি আমার কাটল কেমন করে;/মোগলসরাই প্যাসেঞ্জারে বৃষ্টি নামল তোড়ে।/বৃষ্টি নামল, ভীরু ধানক্ষেত ভালোবাসার মতো,/আলের পথে আলের পথ আলিঙ্গনরত।/এক-জানালা-রাত্রি আমার কাটল কেমন করে,/বৃষ্টি থামল, সাঁকোর তলায় এই পৃথিবী ক্রোড়ে/মা জননী বসে আছেন, চোখের সামনে খালি/ শহরে কাজ নিতে পালায় বলাই বনমালি।
সূত্র: উইকিপিডিয়া
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019