জন্ম: ১৯৩৪ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর, বর্মার তেডো শহরে। ১৯৪৮ সালে দেশ ভাগের সময় তাঁরা বাংলাদেশ থেকে সপরিবার কলকাতায় চলে আসেন। এখানে ১৯৪৯ সালের জানুয়ারি মাসে তাঁকে ক্রিক রো-র মেট্রোপলিটান ইনস্টিটিউটে (বউবাজার ব্রাঞ্চ) নবম শ্রেণিতে ভর্তি করা হয়। প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হওয়ার পরে, ১৯৫১ সালে আইএসসি (গণিত) পড়ার জন্য প্রেসিডেন্সি কলেজে ভর্তি হন। ১৯৫৭ সালে তিনি ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে পাশ করেন। ১৯৫৮ সালেই প্রকাশিত হয় তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'নক্ষত্রের আলোয়'।
বিনয় ছিলেন পঞ্চাশের দশকের কিংবদন্তি কবি। পেশায় ইঞ্জিনিয়ার হয়েও সারা জীবন কাটিয়েছেন কবিতার সাধনায়। অকৃতদার এই কবির শেষ জীবন বড় দুঃখের, কাটে অসুখে আর নিঃসঙ্গতায়। মৃত্যুর বছর খানেক আগে তাঁকে দু’টি বড় পুরস্কার, রবীন্দ্র পুরস্কার ও অ্যাকাডেমি পুরস্কার দেওয়ায় জাতির বিবেক যেন কিছুটা শান্তি পায়। সাটের দশকের পরে অসুস্থতার জন্য কবিতা লেখা কমে গিয়েছিল। মোট কাব্যগ্রন্থ কুড়ির কাছাকাছি, যার মধ্যে ‘ফিরে এসো চাকা’ তাঁকে সব চেয়ে বেশি খ্যাতি দিয়েছে। জ্যোতির্ময় দত্ত একে 'গুপ্ত ক্লাসিক' বলেছেন। এর নামহীন কবিতাগুলি সংখ্যাক্রমে চিহ্নিত, নীচে তারিখ দেওয়া। 'মানুষ নিকটে গেলে প্রকৃত সারসে উড়ে যায়', প্রবাদসম এই পঙক্তি সেই বইয়েরই। মৌলিক প্রতিমা নির্মাণ, বিশিষ্ট অন্বয় এবং ভাবের ও আবেগের তীব্রতা ও নিবিড়তা তাঁর কবিতাকে স্বাতন্ত্র্য দিয়েছে। অল্পস্বল্প প্রবন্ধও লিখেছেন, পাশাপাশি কিছু অনুবাদগ্রন্থও। রুশ ভাষা শিখেছিলেন যা অনুবাদের কাজে লেগেছে। জীবনানন্দের কবিতার কথা যেমন তরুণ কবিদের শিক্ষা ও প্রেরণা দেয়, বিনয়ের নির্বাচিত প্রবন্ধও তেমনি হয়ে উঠতে পারত, যদি আরও একটু যত্নের সঙ্গে সংকলিত হত। ইঞ্জিনিয়ারিং পেশা ত্যাগ করলেও বিজ্ঞানের শিক্ষাকে ভোলেননি। তাঁর চোখে ‘গণিত ও কবিতা একই জিনিস'। আমৃত্যু গণিত ও কবিতার দ্বারা তাড়িত থেকেছে। ২০০৬ সালের ১১ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। বাংলা কবিতার পাঠক সমাজের কাছে তাঁর আকর্ষণ অমোঘ।
সূত্র: উইকিপিডিয়া
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/28/2020