হুমায়ুন কবির (২৫ ডিসেম্বর, ১৯৪৮ - ৬ জুন, ১৯৭২) বিশ শতকের বাংলা ভাষার কবি। ব্রজমোহন কলেজ থেকে ১৯৬৩ সালে ম্যাট্রিক, ১৯৬৫ সালে একই কলেজ থেকে আই. এ. পাস করেন। ১৯৬৮ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স এবং ১৯৬৯ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম. এ. পাস করেন। ১৯৭০-এ বাংলা অ্যাকাডেমি গবেষণা বৃত্তিলাভ করেন এবং ১৯৭২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন। বাংলা অ্যাকাডেমিতে তাঁর গবেষণার বিষয় ছিল ‘সাম্প্রতিক জীবন চৈতন্য ও জীবনানন্দ দাশের কবিতা’। পত্রপত্রিকায় তাঁর অসংখ্য প্রবন্ধ ছড়িয়ে আছে।
১৯৭১ সালে বছর গোপন রাজনৈতিক কার্যকলাপের জন্য সরকারের রোষানলে পড়েন এবং গ্রেফতার বরণ করেন। পূর্ব বাংলার সর্বহারা পার্টি গঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭১ সালে লেখক সংগ্রাম শিবির প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। ১৯৭২ সালে লেখক সংগ্রাম শিবিরের নাম পরিবর্তন করে বাংলাদেশ লেখক শিবির নাম রাখা হয়। একাত্তরে হুমায়ূন কবির বরিশালের পেয়ারা বাগনে সশস্ত্র যুদ্ধে অংশ নেন। যদিও সর্বহারা পার্টির অবস্থান ছিল মুক্তিযুদ্ধের বিপরীতে। ১৯৭২ সালে দেশ স্বাধীনের পর সংগঠনের অভ্যন্তরে দ্বন্দ্ব-সংঘাত বাঁধে। নিজ দলের গ্রুপের হাতেই তিনি খুন হন। শামসুন্নাহার হলের সামনের রাস্তায় ধবধবে সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবি পরা কবি হুমায়ূন কবির এক সকালে লাশ হয়ে যান।
হুমায়ূন কবির খুন হবার আগেই তাকে প্রচ্ছন্ন হুমকি দেওয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, তার ভূমিকা তারা মেনে নেবে না। মৃত্যুর পর তার একমাত্র কাব্য `কুসুমিত ইস্পাত` গ্রন্থটি প্রকাশ হয়েছিল। যাতে লিখেছিলেন `বাগানে যাই, বাগানে বড় সুখ, সেখানে পাতা বুকের মত বড়।` কবি হুমায়ুন কবির খুন হবার পর তাঁর কমরেড ফরহাদ মজহার কবিতায় লিখেছিলেন, "আমি তোকে ডেকে বলতে পারতুম হুমায়ূন অতো দ্রুত নয়, আরো আস্তে যা।" অর্থাৎ তার এই বদলে যাওয়াটা মজহারের পছন্দ হয় নি। হুমায়ূন কবির হত্যার পর মামলা হলেও বিচার এগোয় নি।
তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থ হচ্ছে ‘কুসুমিত ইস্পাত’ (১৯৭২) কবিতাগ্রন্থ এবং ১৯৮৫ সালে বাংলা অ্যাকাডেমি প্রকাশিত ‘হুমায়ুন কবির রচনাবলি’।
সূত্র: উইকিপিডিয়া
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/28/2020