অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

অমৃতলাল বসু

অমৃতলাল বসু

রসরাজ অমৃতলাল বসু (১৮৫৩-১৯২৯)  নাট্যকার, নাট্যসংগঠক ও অভিনেতা। ১৮৫৩ সালের ১৭ এপ্রিল পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাটে তাঁর জন্ম। উনিশ শতকে সাধারণ বাংলা রঙ্গালয় প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে যাঁরা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন, অমৃতলাল বসু ছিলেন তাঁদের অন্যতম। তিনি কলকাতার জেনারেল অ্যাসেমব্লিজ ইনস্টিটিউশন থেকে এন্ট্রান্স পাস (১৮৬৯) করে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হন। দু’বছর ডাক্তারি পড়ার পর কাশী গিয়ে তিনি হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা প্রণালী শিক্ষা করেন এবং কলকাতায় কিছু দিন এর চর্চাও করেন। এ ছাড়া তিনি কিছু কাল স্কুলে শিক্ষকতা, পোর্টব্লেয়ারে সরকারি চিকিৎসকের দায়িত্ব পালন এবং পুলিশ বিভাগে চাকরি করেন। কিন্তু থিয়েটারের প্রতি আকর্ষণহেতু কোনও পেশায় স্থায়ী হতে না পেরে শেষ পর্যন্ত তিনি নাটক রচনা ও অভিনয়ে মনোনিবেশ করেন এবং কালক্রমে এক জন অভিনেতা, মঞ্চাধ্যক্ষ, নাটক ও গান রচয়িতা হিসেবে দেশজোড়া খ্যাতি অর্জন করেন।

অর্ধেন্দুশেখর মুস্তফির সহযোগিতায় অমৃতলাল ১৮৭২ সালে ন্যাশনাল থিয়েটারে মঞ্চস্থ নীলদর্পণ নাটকে সৈরিন্ধ্রীর ভূমিকায় প্রথম অভিনয়ে অবতীর্ণ হন। পর্যায়ক্রমে নাট্যসম্রাট গিরিশচন্দ্র ঘোষের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতা জন্মে। ১৮৭৫ সালে তিনি গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটারের ম্যানেজার নিযুক্ত হন। প্রিন্স অব ওয়েলসের (সপ্তম এডওয়ার্ড) কলকাতায় আগমন ও জনৈক রাজভক্তের চাটুকারিতাকে ব্যঙ্গ করে লেখা গজদানগদ ও যুবরাজ প্রহসনে অভিনয়ের কারণে পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে এবং এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৮৭৬ সালে ব্রিটিশ সরকার ভারতে  অভিনয় নিয়ন্ত্রণ আইন জারি করে। ১৮৮৮ সালে  গ্রেট ন্যাশনাল থিয়েটার ভেঙে যাওয়ার পর অমৃতলাল স্টার থিয়েটারে যোগ দেন এবং দীর্ঘ ২৫ বছর এর সঙ্গে যুক্ত থেকে বহু নাটকের অভিনয় ও পরিচালনায় অংশগ্রহণ করেন। বাংলা নাট্যসাহিত্যে নাট্যকার হিসেবেও অমৃতলালের নাম সগৌরবে উচ্চারিত হয়। নাটক, প্রহসন ও নকশা জাতীয় তাঁর গ্রন্থের সংখ্যা চল্লিশ। সেগুলির মধ্যে তিলতর্পণ (১৮৮১), বিবাহ বিভ্রাট (১৮৮৪), তরুবালা (১৮৯১), কালাপানি (১৮৯২), বাবু (১৮৯৩), বিমাতা (১৮৯৩), আদর্শ বন্ধু (১৯০০), অবতার (১৯০২), চোরের উপর বাটপাড়ি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তিনি  প্রহসন ও ব্যঙ্গ রচনাতেই অধিক সফল হয়েছেন। সমকালের নাগরিক ও গ্রামীণ সমাজের নানা দিক নিয়ে এ সব ব্যঙ্গাত্মক নাটক রচিত হয়। এর জন্য তিনি সমাজের এক শ্রেণির প্রশংসা এবং অপর শ্রেণির নিন্দার ভাগী হন। তিনি রঙ্গ-ব্যঙ্গমূলক নাটক রচনা ও তাতে অভিনয় করে সুধীসমাজ কর্তৃক ‘রসরাজ’ উপাধিতে ভূষিত হন। পুরাতন প্রসঙ্গ, পুরাতন পঞ্জিকা ও ভুবনমোহন নিয়োগী নামে তাঁর তিনটি আত্মস্মৃতিমূলক রচনা আছে। অমৃতলাল কবিতা ও গল্প-উপন্যাসও রচনা করেছেন। প্রথম দিকে কবির লড়াইয়ের কবিতা ও হাফ-আখড়াই গান লিখেও তিনি জনপ্রিয় হয়েছিলেন।

থিয়েটার জগতের বাইরেও অমৃতলালের পদচারণা ছিল। স্যার সুরেন্দ্রনাথের সহকর্মীরূপে, স্বদেশি যুগের কর্মী এবং বাগ্মী হিসেবেও তিনি পরিচিত ছিলেন। শ্যামবাজার অ্যাংলো-ভার্নাকুলার স্কুলের সেক্রেটারি, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সহসভাপতি এবং কলকাতার এশিয়াটিক সোসাইটির সভ্য ছিলেন অমৃতলাল। তাঁর কৃতিত্বের স্বীকৃতিস্বরূপ  কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ‘জগত্তারিণী’ পদকে ভূষিত করে। ১৯২৯ সালের ২ জুলাই অমৃতলালের মৃত্যু হয়।

সূত্র: বাংলাপিডিয়া

সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate