অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

বিজন ভট্টাচার্য

বিজন ভট্টাচার্য (জুলাই ১৭, ১৯১৭ ফরিদপুর, বাংলাদেশ - জানুয়ারি, ১৯৭৮) খ্যাতনামা নাট্যব্যক্তিত্ব।

নাট্যজীবন

বিজন ভট্টাচার্যের নাট্যজীবনের শুরু হয় ১৯৪০ এর দশকে। প্রচলিত বাণিজ্যিক থিয়েটারের ধারার বাইরে স্বতন্ত্র নাট্য আন্দোলনের সূচনা করেন কিছু ফ্যাসিবাদ বিরোধী লেখক শিল্পী গোষ্ঠী। এঁদেরই সাংস্কৃতিক শাখা ছিল ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘ বা ইণ্ডিয়ান পিপলস থিয়েটার অ্যাসোসিয়েসন যা আইপিটিএ নামে বেশি পরিচিত। বিজন ভট্টাচার্য ছিলেন এই গণনাট্য সঙ্ঘের প্রথম সারির নাট্যকর্মী। চিন্তা, চেতনা এবং সংগ্রামের প্রগতিশীল চিন্তা ভাবনার দিশারী ছিল ভারতীয় গণনাট্য সঙ্ঘ। বিজন ভট্টাচার্যের নাটক রচনা, অভিনয় এবং নির্দেশনা সাফল্য লাভ করেছিল এই গণনাট্য আন্দোলনের মধ্য দিয়ে।

গণনাট্য সঙ্ঘের (সেই সময় ফ্যাসিবিরোধী লেখক শিল্পী সঙ্ঘ) প্রথম নাটক ‘আগুন’ বিজন ভট্টাচার্যের রচনা । এই নাটকটি ১৯৪৩ সালে মঞ্চস্থ হয়েছিল। ১৯৪৪ সালে তাঁর লেখা নাটক জবানবন্দী এবং নবান্ন অভিনীত হয়েছিল। এই নাটকগুলিতে তিনি প্রধান অভিনেতা এবং নির্দেশকের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।

১৯৪৪ সালের ২৪ অক্টোবর শ্রীরঙ্গম মঞ্চে নবান্নের প্রথম অভিনয় হয়। এই নাটকটির পটভূমিকা ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অস্থিরতা, ১৯৪২ সালের আগস্ট আন্দোলন, পঞ্চাশের মন্বন্তর এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগ। গণনাট্য আন্দোলন এবং বিজন ভট্টাচার্যের নাটক বাংলা নাটক রচনা এবং অভিনয়ের এক যুগ বদলের সূচনা করে।

১৯৪৮ সাল থেকে গণনাট্য সঙ্ঘের সঙ্গে বিজন ভট্টাচার্যের মতান্তর ঘটে। ১৯৪৮ থেকে ১৯৫০ তিনি বোম্বাইতে হিন্দি সিনেমার সঙ্গে যুক্ত থাকেন। ১৯৫০ সালে তিনি আবার বাংলায় ফিরে আসেন এবং নিজের নাটকের দল ক্যালকাটা থিয়েটার প্রতিষ্ঠা করেন। এখানেও তিনি নাট্যকার, প্রধান অভিনেতা এবং নির্দেশকের ভূমিকা পালন করেন। এই থিয়েটারে তাঁর রচিত নাটকের মধ্যে অন্যতম ছিল কলঙ্ক, গোত্রান্তর, মরাচাঁদ, দেবী গর্জন, গর্ভবতী জননী প্রভৃতি।

১৯৭০ সালে তিনি ক্যালকাটা থিয়েটার ছেড়ে দিয়ে কবচ-কুণ্ডল নামে নতুন দল গঠন করেন। এখানে তাঁর রচিত নাটকগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল কৃষ্ণপক্ষ, আজ বসন্ত, চলো সাগরে, লাস ঘুইরযা যাউক প্রভৃতি।

পারিবারিক জীবন

বিখ্যাত লেখিকা জ্ঞানপীঠ পুরস্কার বিজয়ী মহাশ্বেতা দেবী বিজন ভট্টাচার্যের স্ত্রী। তবে পরবর্তীকালে তাঁরা বিবাহ বিচ্ছিন্ন হন। তাঁদের এক সন্তান নবারুণ ভট্টাচার্য যিনি ১৯৪৮ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। নবারুণ ভট্টাচার্য একজন সাহিত্য অ্যাকাডেমি পুরস্কার প্রাপ্ত লেখক এবং কবি। সম্প্রতি প্রয়াত হয়েছেন।

সমালোচনা ও কৃতিত্ব

বিজন ভট্টাচার্য মার্কসীয় দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন। কৃষক শ্রমিক মেহনতী মানুষের জীবন সংগ্রামের কথা ও বাঁচবার কথা তাঁর নাটকগুলির মুখ্য বিষয় হয়ে উঠেছিল। কিন্তু আস্তে আস্তে তিনি এই ভাবনা থেকে সরে যান। গণনাট্য সঙ্ঘ ত্যাগ এবং নিজের নাটকের দল একাধিক বার ভেঙে গড়ে তিনি তৈরি করেন। ক্রমে মার্কসীয় দর্শনের পরিবর্তে বা সঙ্গে তাঁর রচনায় লোকায়ত ধর্ম দর্শন, হিন্দু ধর্মের সমন্বয় প্রয়াসী মানসিকতা কাজ করেছিল। চিরকালীন মাতৃকা ভাবনা তাঁর নাটকে প্রায়ই লক্ষ করা যায়।

অভিনেতা হিসাবে বিজন ভট্টাচার্য অসামান্য কৃতিত্ব দেখিয়েছিলেন। নানা রকম চরিত্রকে মূর্ত করে তুলতে তিনি দক্ষ ছিলেন । নানা উপভাষার সংলাপ উচ্চারণেও তিনি সাফল্য অর্জন করেছিলেন। তাঁর অভিনীত উল্লেখযোগ্য চরিত্রের মধ্যে ছিল বেন্দা (জবানবন্দী), প্রধান সমাদ্দার (নবান্ন), পবন ও কেতকাদাস (মরাচাঁদ), হরেন মাস্টার (গোত্রান্তর), প্রভঞ্জন (দেবীগর্জন), মামা (গর্ভবতী জননী), কেদার (আজ বসন্ত), সুরেন ডাক্তার (চলো সাগরে) প্রভৃতি। নাট্যনির্দেশক হিসাবেও তিনি সমান সফল ছিলেন। গণনাট্য সঙ্ঘে তাঁর নাটক জবানবন্দী এবং নবান্ন ছিল অসাধারণ দু’টি প্রযোজনা। পরে তিনি তাঁর নিজের গ্রুপ থিয়েটারেও বহু নাটকের সফল প্রযোজক এবং নির্দেশক ছিলেন।

সূত্র: উইকিপিডিয়া

সর্বশেষ সংশোধন করা : 12/1/2019



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate