বিচার ব্যবস্থার প্রথম দিকে উকিলশ্রেণি বলে কিছু ছিল না। নিজেদের বক্তব্য নিজেদেরই বিচারককে জানাতে হত। কিন্তু আইন যখন জটিল রূপ নিতে শুরু করল, সাধারণের পক্ষে তা ভালো ভাবে জানা আর সম্ভবপর হল না - তখন প্রয়োজন হল বিশেষজ্ঞদের। তথাকথিত উকিলশ্রেণি বা আইনজ্ঞদের আত্মপ্রকাশ সম্ভবত প্রথম হয় গ্রিস ও রোমে - আনুমানিক ২০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে। প্রথমে অবশ্য এঁদের সন্মানের চোখে দেখা হত না। রোম সাম্রাজ্যের শেষের দিকে এঁরা সমাজে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। শুধু কথায় নয় লিখিত ভাবেও এই সময় থেকে এঁদের অনেক নথিপত্র তৈরি করতে হত। ধীরে ধীরে এটি একটি সন্মাননীয় জীবিকা হিসাবে সমাজে সুপ্রতিষ্ঠিত হল।
বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের অপরাধের জন্য বিশেষজ্ঞ উকিলরাও সমাজে রয়েছেন। উকিলের দক্ষতা, সুনাম অনুযায়ী তাদের ফি নির্ধারিত হয়। ভালো উকিলের জন্য খরচ বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষ অনেক সময়ই তাদেরকে নিজেদের কাজে লাগাতে পারেন না। এর ফলে বিচার ব্যবস্থায় অসাম্য তৈরি হওয়ার অভিযোগ নানা মহলে রয়েছে। যদিও এই ধরনের পরিস্থিতির জন্য সরকারি উকিলরা রয়েছেন, যাঁরা আদালতের নির্দেশ অনুসারে সাধারণ মানুষের হয়ে মামলা লড়ে থাকেন।
ভারতবর্ষের সর্বোচ্চ আদালত হল সুপ্রিম কোর্ট, আর রাজ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্ট। হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আবেদন করতে হলে সুপ্রিম কোর্টে করতে হয়। যে সব ট্রাইব্যুনাল সুপ্রিম কোর্টের এক্তিয়ারে রয়েছে তাদের আবেদনগুলিও সুপ্রিম কোর্টে আসে। রাজ্য ও কেন্দ্রের মধ্যে বা দু’টি রাজ্যের মধ্যে বিবাদ ঘটলে, তা সুপ্রিম কোর্টেই ফয়সলা হয়। এ ছাড়া নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষা করার জন্য সুপ্রিম কোর্ট নানা আদেশ জারি করতে পারে। রাষ্ট্রপতি সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ও অন্য বিচারপতিদের নিয়োগ করেন। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা ৬৫ বছর পর্যন্ত কাজ করতে পারেন। তার আগে কোনও অপরাধের জন্য তাঁদের পদ থেকে অপসারণ করাতে হলে লোকসভা ও রাজ্যসভা, দুয়েরই অনুমোদন লাগে।
রাজ্যের সর্বোচ্চ আদালত হাইকোর্টের নীচে থাকে নিম্ন আদালতগুলি। রাজ্যের নিম্ন আদালতগুলি দু’টি বিভাগে বিভক্ত: একটি ফৌজদারি আদালত বা ক্রিমিন্যাল কোর্ট, অন্যটি দেওয়ানি আদালত বা সিভিল কোর্ট।
এই সমস্ত স্তরেই বিচার বিভাগের প্রক্রিয়ায় ঢুকতে গেলে উকিলদের সাহায্য ছাড়া পথ চলা প্রায় অসম্ভব।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/28/2020