সিভিল কেস বা দেওয়ানি মামলা যে কোনও ব্যক্তি বা বা সংস্থা অন্য কারওর বিরুদ্ধে আনতে পারে। যে মামলা আনে তাকে বলা হয় বাদী। অন্য পক্ষে ফৌজদারি মামলায় অভিযোক্তা হয় সরকার অর্থাৎ শুধু সরকার বা গভর্নমেণ্টই ফৌজদারি মামলা আনতে পারে। সিভিল আর ক্রিমিন্যাল আইনের আরেকটা বড় তফাৎ হচ্ছে শাস্তি-সংক্রান্ত। ক্রিমিন্যাল কেস-এ দোষীর শাস্তি হল সশ্রম (বা বিনাশ্রম) কারাবাস বা অর্থদণ্ড অথবা দুটোই। অর্থদণ্ডের টাকা সরকারের তহবিলে যায়। কোনও কোনও বিশেষ অপরাধের ক্ষেত্রে দোষীর মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে। সিভিল মামলায় হেরে গেলে প্রতিবাদী বা অপরাধীকে কখনওই কারাবাস করতে হয় না। এই মামলায় অপরাধীদের শাস্তি হল বাদীর ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়া এবং অপরাধের জন্য বাদীর যে অর্থ নষ্ট হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ দেওয়া। তবে অনেক সময় এই ক্ষতিপূরণ শুধু বাদীর আর্থিক ক্ষতির (সাধারণ অর্থে) পূরণ নয় - অপরাধের জন্য বাদীর সন্মানহানি বা অন্য কোনও ক্লেশ ঘটে থাকলে, তার জন্য একটি আর্থিক ক্ষতিপূরণও আদালত ধার্য করতে পারে।
ক্রিমিন্যাল বা ফৌজদারি মামলায় অপরাধ প্রমাণের দায়িত্ব সব সময়ে সরকারের। অভিযুক্তকে ধরে নেওয়া হবে নিরপরাধ বলে। সরকারকে প্রমাণ করতে হবে যে, সে অপরাধী। এর দুয়েকটি ব্যতিক্রম আছে। যেমন, অভিযুক্ত যদি দাবি করে যে, সে আত্মরক্ষার্থে অপরাধ করেছে অথবা সে সুস্থমস্তিষ্ক নয় বলে দোষী নয় ইত্যাদি --- সে ক্ষেত্রে এই দাবিগুলির সত্যতা প্রমাণ করার দায়িত্ব বর্তাবে অভিযুক্তের ওপর। ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত তখনই দোষী বলে সাব্যস্ত হবে, যদি সংশয়াতীত ভাবে প্রমাণিত হয় যে, সেই দোষী।
দেওয়ানি মামলায় অভিযোগকারীকেই তার অভিযোগের সত্যতা প্রমাণ করতে হবে। এ ক্ষেত্রে দোষী সাব্যস্ত করার জন্য সংশয়াতীত প্রমাণের প্রয়োজন হয় না। মোটামুটি ভাবে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণই যথেষ্ঠ।
আইন আদালত সম্পর্কে সাধারণ ভাবে জানতে গেলেও এই দুটি বিষয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/28/2019