চিকিৎসাবিজ্ঞানে এক যুগান্তকারী আবিষ্কার এক্স রে। ১৮৯৬ সালে জার্মান পদার্থবিদ ভিলহেলম কনরাড রোন্টজেন আবিষ্কার করেন এক্স রে। দ্বার খুলে বিভিন্ন রোগ নির্ণয় করার পদ্ধতি। ফলে রোগের চিকিৎসা অনেক সহজ হয়ে আসে। বিংশ শতাব্দীর গোড়ায় কার্ল ল্যান্ডস্টাইনার রক্তের শ্রেণিবিভাগ বা Blood Grouping আবিষ্কার করলেন। ফলে সফল ভাবে রক্ত সঞ্চালনের (Blood Transfusion) মাধ্যমে বহু প্রাণ রক্ষা পেল। এবং তারই সঙ্গে শুরু হয়ে গেল রক্তদানের মারফত জীবনদানের অঙ্গীকার।
১৯২৩ সালে ফ্রেডেরিখ গ্রান্ট ব্যান্টির আবিষ্কার বহু মরণাপন্ন মানুষের জীবনে বেঁচে থাকার আশা নতুন করে জাগিয়ে তুলল। অগ্ন্যাশয় থেকে ইনসুলিন নিষ্কাশন করে ও তাকে মধুমেহ রোগীর উপর ব্যবহার করে এই বিজ্ঞানী নতুন আলোর দিশারী হয়ে উঠলেন সারা পৃথিবীতে অসংখ্য রোগীর কাছে। এতে তাঁর সহযোগী ছিলেন তাঁরই ছাত্র চার্লস বেস্ট।
এর পর বলতে হয় অ্যান্টিবায়োটিক আবিষ্কারের কথা। ১৯২৯ সালে প্রথম অ্যান্টিবায়োটিক পেনিসিলিনের আবিষ্কার বোধহয় গত শতাব্দীর সব চেয়ে বড় সাফল্য। আলেকজান্ডার ফ্লেমিং-এর এই আবিষ্কার সম্পর্কে বলা হয় যে, এর ফলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মৃতের সংখ্যা অর্ধেক হয়েছিল।
১৯৪৪ সালে আলবার্ট শাৎজ আবিষ্কার করেন যক্ষ্মার প্রথম ওষুধ স্ট্রেপটোমাইসিন, যা হাজার হাজার মৃত্যু পথগামী মানুষকে জীবনের স্রোতে ফিরিয়ে আনল রোগমুক্ত করে। ১৯৬৭ সালে রিফামপিনিসিনের আবিষ্কার যক্ষ্মার স্বল্পকালীন চিকিৎসা ও সম্পূর্ণ নিরাময়ে নতুন মাত্রা যোগ কর। চিকিৎসাবিজ্ঞানের সার্বিক উন্নতিতে বিশ্বব্যাপী মৃত্যুহার অনেক কমে গেল। বাড়তে লাগল জনসংখ্যা। স্বভাবতই প্রয়োজন হল জন্ম নিয়ন্ত্রণের।
১৯৫২ সালে আবিষ্কৃত হল জন্মনিরোধক বড়ি ‘ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ পিল’ (Oral Contraceptiv Pill)। ১৯৫৭ সালে সাবিন-এর দ্বারা মুখে খাওয়ানোর পোলিও টিকা আবিষ্কার অবশ্যই এক বিরাট অবদান। পাঁচ বছরের নীচে সব শিশুকে এই টিকাকরণের অন্তর্ভুক্ত করে সারা দুনিয়া থেকে পোলিও রোগ নির্মূল করার চেষ্টা আজ চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীরা করছেন। এবং সেই পোলিও আজ পৃথিবী থেকে প্রায় নির্মূল হওয়ার পথে।
সূত্র : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংসদ ও দফতর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/29/2020