ঘটনা : ১৯৪৯ খ্রিস্টাব্দ
বিজ্ঞানী : উইলার্ড লিবি
তেজস্ক্রিয় অঙ্গার দ্বারা বয়স নির্ণয় (রেডিওকার্বন ডেটিং) অথবা সাধারণ ভাবে কার্বন ডেটিং হল তেজস্ক্রিয়মিতি দ্বারা বয়স নির্ণয়ের একটি প্রণালী। এখানে কার্বন ১৪ (14C)-এর ক্ষয় ব্যবহৃত হয়, জৈবিক পদার্থের (যেমন কাঠ, চামড়া) বয়স নির্ণয় করতে ৫৮,০০০ - ৬২,০০০ বছর বিপি আগের পর্যন্ত। বিপি, যার পুরোটা হল ‘বিফোর প্রেজেন্ট’, যার অর্থ করা হয় ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ। প্রণালীটি বিশ্বকে উপহার দেন উইলার্ড লিবি। ১৯৪৯ সালে এর জন্য তাঁকে রসায়নে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয় ।
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আছে নানা প্রকারের কার্বনের আইসোটোপ (আইসোটোপ) মোটামুটি একই অনুপাতে। প্রকারগুলি হল,
সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় উদ্ভিদ দু’টি প্রকারকেই শোষণ করে বায়ুমণ্ডলের কার্বন ডাইঅক্সাইড থেকে। যখন কোনও জীব মৃত হয়, এর মধ্যে থাকে নির্ধারিত অনুপাতে 14C/ 12C । কিন্তু যে হেতু 14C -এর ক্ষয় হয় এবং পুনঃস্থাপনার কোনও সম্ভাবনা নেই, 14C-এর অনুপাত একটি স্থির হারে কমতে থাকে। যে সময়ের মধ্যে এটি অর্ধেক হয়, সেই সময়কে বলা হয় 14C-এর অর্ধ-জীবন (হাফ লাইফ)। জৈবিক পদার্থের মধ্যে 14C-এর অনুপাত দেয় একটি বয়সের মূল্যানুমান - অশোধিত তেজস্ক্রিয় অঙ্গার বয়স (র রেডিওকার্বন এজ)। বস্তুত, সময়ের সঙ্গে বায়ুমণ্ডলে 14C/ 12C -অনুপাত কমতে থাকে, যা প্রাকৃতিক রেকর্ডে ধরা দেয় যেমন, বৃক্ষ স্তরের অনুক্রম (সিকোয়েন্সেস অফ ট্রি রিংস) এবং বিবরীয় অবক্ষেপ (কেভ ডিপোজিটস)। এই রেকর্ডগুলি সূক্ষ ‘সুর-বাঁধা’-য় (ফাইন টিউনিং) ধরা দেয় অর্থাৎ অশোধিত তেজস্ক্রিয়-অঙ্গার-এর বয়স আরও ত্রুটিহীন ভাবে পরিমাপ করা যায়।
তেজস্ক্রিয় অঙ্গার দ্বারা বয়স নির্ণয় প্রণালী আবিষ্কৃত হওয়ার পর বহু স্থানে বয়স নির্ণয়ে এটি ব্যবহৃত হয়েছে যেমন, ডেড সি স্ক্রলস, শ্রাউড অফ টুরিন ইত্যাদি। তবে এই প্রণালী প্রায়শই ব্যবহৃত হচ্ছে পুরাতত্ত্বে, পুরাতত্ত্বীয় কাল নির্ণয়ে।
সূত্র : বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিদ্যা ও ব্যাক্তিত্ব : ডঃ শঙ্কর সেনগুপ্ত, বেস্টবুকস
সর্বশেষ সংশোধন করা : 12/23/2019