রাজস্থানের পোখরানে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণ বিজ্ঞানী ও সাধারণ মানুষ, সব মহলেই প্রচুর আলোচনার জন্ম দেয়। পারমাণবিক বিস্ফোরণ বিষয়টা কী এবং সেটা কী ভাবে হয় ? তোমরা কি জান এই নামটাই ভুল ? যেটা হয় সেটা আসলে নিউক্লিয়ার বিক্রিয়া। আজ থেকে ৫০ বছরেরও বেশি আগে মার্কিন বিজ্ঞানীরা যখন প্রথম পারমাণবিক পরীক্ষা করেন, তখন তাঁরা ভেবেছিলেন সাধারণ মানুষ নিউক্লিয়ার বিষয়টাই বুঝবে না, তাই একে পারমাণবিক বোমা বা পরমাণু বোমা বলা হয়েছিল। পরমাণু বলে যে কিছু আছে, তা উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে জানা যায়। ইংল্যান্ডে আর্নেস্ট রাদারফোর্ড প্রথম দেখান যে পরমাণুর একটি ক্ষুদ্র কেন্দ্র আছে (যা পরমাণুর আকারের ১ লক্ষ ভাগের ১ ভাগ), তাকে নিউক্লিয়াস বলে। নিউক্লিয়াস ধনাত্মক তড়িৎ ধর্ম বিশিষ্ট এবং তাকে ঘিরে ঋণাত্মক তড়িৎ ধর্ম বিশিষ্ট ইলেকট্রনেরা থাকে।
পরমাণুর বেশির ভাগ অংশই ফাঁকা। গ্রহরা যে ভাবে সূর্যের চার দিকে ঘোরে সে ভাবেই ইলেকট্রনগুলি নিউক্লিয়াসের চার দিকে ঘোরে। নিউক্লিয়াসের ভেতর থাকে প্রোটন ও নিউট্রন। প্রোটন ধনাত্মক তড়িৎ যুক্ত (ইলেকট্রনের সমান ও বিপরীত) এবং নিউট্রন নিস্তড়িৎ। প্রোটন ও নিউট্রন দু’টোই ইলেকট্রনের থেকে প্রায় ২০০০ গুণ ভারী। যে সমস্ত বিক্রিয়ায় প্রচুর পরিমাণে পদার্থ তৈরি হয় (যেমন, তরল ও কঠিন আকারে ধাতু উৎপাদন), সেগুলি সবই ইলেকট্রন নিয়ন্ত্রণ করে। এই বৈদ্যুতিক বিক্রিয়াগুলির জন্য খুব বেশি পরিমাণে শক্তির প্রয়োজন হয় না, যেমন, তুমি বাড়ির রান্নাঘরেই তাপ প্রয়োগ করে বরফ গলাতে পার বা বাষ্প তৈরি করতে পার। এর জন্য বিশাল গবেষণাগারের প্রয়োজন নেই।
নিউক্লিয়ার বিক্রিয়াগুলি থেকে (প্রোটন ও নিউট্রনকে নিয়ে বিক্রিয়া) যে পরিমাণ শক্তি নির্গত হয়, তা নিউক্লিয়াসের শক্তি থেকে লক্ষ লক্ষ গুণ বেশি। নিউক্লিয়াস আবিষ্কারের দুই দশকের মধ্যেই বিজ্ঞানীরা বোঝেন পরমাণু তার নিউক্লিয়াসে বিপুল পরিমাণ শক্তির উৎস সংরক্ষিত করে রেখেছে। তখন থেকেই প্রথম পরমাণু বোমার জন্য দিন গোনা শুরু হয়।
-ঊষা দিদি
সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/29/2020