প্রায় ১০০ বছর আগে ইতালির জ্যোতির্বিজ্ঞানী জিওভান্নি শিয়াপারেলি দেখেন মঙ্গলের মাটিকে অনেকগুলি দাগ কাটাকাটি করে গিয়েছে, সেগুলিকে তিনি মঙ্গলের ক্যানালি বা খাল বলে অভিহিত করেন।
ইংরাজিতে অনেক সময়ই ক্যানালিকে ক্যানাল বলে অনুবাদ করা হয়। এ থেকে বহু মানুষ ভাবেন এগুলি বুদ্ধিমান মঙ্গলবাসীদের তৈরি কৃত্রিম জলপথ। এর ভিত্তিতেই এইচ জি ওয়েলস লেখেন তার বিখ্যাত উপন্যাস, দ্য ওয়ার অফ দ্য ওয়ার্ল্ডস, যেটা মঙ্গলবাসীদের দ্বারা পৃথিবী আবিষ্কারের কাহিনি।
বুদ্ধিমান মঙ্গলবাসী তত্ত্বের দৃঢ় সমর্থক ছিলেন মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী পার্সিভাল লোওয়েল, যিনি নেপচুনের কক্ষপথের বাইরে নবম গ্রহের উপস্থিতির কথা বলে বিখ্যাত হয়েছিলেন। ১৮৯০ সাল নাগাদ লোওয়েল দাবি করেন যে তিনি মঙ্গলে শয়ে শয়ে খাল দেখতে পাচ্ছেন এবং সেগুলি নিয়মিত তৈরি করা হচ্ছে।
আশ্চর্যজনক ভাবে সেই সময়কার অন্য জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সেই সব খালগুলি দেখতে পাননি, এমনকী লোওয়েলের নিজের দূরবীক্ষণ যন্ত্রেও দেখতে পাননি। সময় পেরোতে আরও উন্নত মানের দূরবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কৃত হয় এবং মঙ্গলের মাটি ও বায়ূমণ্ডলকে আরও নিখুঁত ভাবে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয়। দেখা যায় মঙ্গলে বড় বড় আগ্নেয়গিরি এবং গভীর উপত্যকা রয়েছে।
১৯৬০ ও ৭০-এর দশকে অনেকগুলি মহাকাশযান মঙ্গলের উদ্দেশে পাঠানো হয়। তার মধ্যে কিছু মঙ্গলের চারপাশে ঘুরে মঙ্গলের পেছন দিকের ছবি তুলে পাঠায় এবং কিছু (যেমন ভাইকিং) মঙ্গলে নেমে মঙ্গলের মাটি ও বায়ূমণ্ডল সম্পর্কে বিস্তৃত তথ্য পাঠায়। এই তথ্যগুলি থেকে দেখা যায় লোওয়েল সত্য থেকে অনেক দূরে ছিলেন। মঙ্গলের মাটি বা বায়ুমণ্ডলে তরল জল নেই। মঙ্গলবাসীও নেই, নেই খালও।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 8/28/2019