স্কটিশ প্রকৌশলী, উদ্ভাবক জেমস ওয়াট অমর হয়ে আছেন বাষ্পীয় ইঞ্জিন উদ্ভাবনের কারণে। ১৭৩৬ সালে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। জেমসের বাবার পেশা ছিল জাহাজ নির্মাণ। তাই ছোটবেলা থেকেই তাঁর আগ্রহ ছিল যন্ত্র নিয়ে। আর এই আগ্রহ আরও গভীর হয়, যখন জেমস ১৭৫৪ সালে গ্ল্যাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞানী রবার্ট ডিকের সঙ্গে যন্ত্রনির্মাতা হিসেবে পেশাজীবন শুরু করেন। ১৭৫৫ সালে জেমস বিশ্ববিদ্যালয়টির ‘ম্যাথমেটিক্যাল ইনস্ট্রুমেন্ট মেকার’ হিসেবে নিয়োগ পান। বিজ্ঞানী টমাস নিউকমেন উদ্ভাবিত বাষ্পীয় ইঞ্জিন মেরামত করার দায়িত্ব পালনের সময়েই তাঁর বাষ্পীয় প্রকৌশলের ওপর আগ্রহ বাড়ে। তিনি এই সময়ের মধ্যে নিউকমেনের বাষ্পীয় ইঞ্জিনকে সংস্কার করে বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহারের জন্য প্রস্তুত করেন। ১৭৬৯ সালে এই সংস্কারের পেটেন্ট পান জেমস ওয়াট। তাঁর উদ্ভাবিত এই যন্ত্র খনির ভেতর থেকে জল নিষ্কাশনে ব্যাপক ভাবে ব্যবহৃত হয়। এক সময় তিনি সার্ভেয়ার হিসেবেও কাজ করেন। ১৭৭৩ সালে তিনি যুক্তরাজ্যের ক্যালেডোনিয়ান খালের ওপর প্রথম জরিপকাজ পরিচালনা করেন। ১৭৭৫ সালে তিনি ম্যাথিউ বলটনের সঙ্গে বার্মিংহামে ‘বলটন অ্যান্ড ওয়াট’ নামের প্রকৌশলযন্ত্র তৈরির কারখানা স্থাপন করেন। এই কারখানা থেকেই ১৮২৫ সালে তৎকালীন সর্বোচ্চ ২৬০০ অশ্বশক্তির বাষ্পীয় ইঞ্জিন নির্মাণ করা হয়। ১৭৮৫ সালে তিনি ব্রিটিশ রয়্যাল সোসাইটির ফেলো নির্বাচিত হন। ১৭৯০ সালে তিনি প্রাতিষ্ঠানিক কর্মজীবন থেকে অবসর নেন এবং নিজেকে গবেষণার কাজে যুক্ত করেন। যন্ত্র প্রকৌশল প্রযুক্তিতে তিনি মোট ছয়টি পেটেন্ট পেয়েছেন। বাষ্পীয় ইঞ্জিন ছাড়াও তাঁর উল্লেখযোগ্য উদ্ভাবন হচ্ছে আবর্তনশীল ইঞ্জিন ও স্টিম ইন্ডিকেটর। রসায়ন, গণিত ও জ্যোতির্বিদ্যায় আগ্রহী এই উদ্ভাবক ১৮১৯ সালে ৮৩ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। মহান এই উদ্ভাবকের কৃতীর প্রতি সম্মান রেখে বৈদ্যুতিক ও যান্ত্রিক শক্তির মৌলিক একক রাখা হয়েছে ‘ওয়াট’।
সূত্র : বিশ্বের সেরা ১০১ বিজ্ঞানীর জীবনী, আ. ন. ম. মিজানুর রহমান পাটওয়ারি, মিজান পাবলিশার্স, ঢাকা
সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/27/2020