অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

লুই পাস্তুর

লুই পাস্তুর

“ আমি সমস্ত জীবন ধরে বিশ্বাস করেছি একমাত্র বিজ্ঞান আর শান্তির চেতনাই পারে সমস্ত অজ্ঞানতা আর যুদ্ধের বিভীষিকাকে দূর করতে। ... বিশ্বাস রাখুন এক দিন সমস্ত দেশই সম্মিলিত হবে যুদ্ধের বিরুদ্ধে, শান্তি সহযোগিতার পক্ষে আর সেই ভবিষ্যৎ হবে বর্বরদের নয়, শান্তিপ্রিয় মানবজাতির।”

কথাগুলো প্রখ্যাত বিজ্ঞানী লুই পাস্তুরের। লুই পাস্তুর ১৮২২ সালের ফ্রান্সে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে গ্রামে বেড়ে ওঠা পাস্তুরকে যখন তাঁর পিতা প্যারিসের একটি স্কুলে লেখাপড়া করার জন্য ভর্তি করলেন, তখন কিছুতেই শহরের পরিবেশে তিনি স্বস্তি পাচ্ছিলেন না। খুব অল্প সময়েই নিজেকে মানিয়ে নিলেন। তাঁর মেধা অধ্যবসায় পরিশ্রম শিক্ষদের দৃষ্টি এড়াল না। মাত্র ১৮ বছর বয়সে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করে নিজের কলেজেই শিক্ষকতায় যুক্ত হলেন, পাশাপাশি বিজ্ঞানে ডিগ্রি নেওয়ার জন্য পড়াশোনা চালিয়ে যেতে থাকলেন। বিজ্ঞানের বিষয়গুলোর মধ্যে পাস্তুরের প্রিয় বিষয় রসায়ন। রসায়নের উচ্চতর শিক্ষায় মনপ্রাণ ঢেলে দিলেন। এরই মধ্যে পাস্তুরের বিজ্ঞানচর্চায় খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ল। স্ট্রাসবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে রসায়নের অধ্যাপক পদ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানালে তিনি সানন্দে তা গ্রহণ করেন।

স্ত্রী মেরি ছিলেন তাঁর যোগ্য সহচরী, সহমর্মী, সহকর্মী এবং সহধর্মীও বটে। ১৮৫৪ সালে লুই পাস্তুর লিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগে ডিন এবং প্রধান অধ্যাপক নিযুক্ত হন। লিলে অঞ্চলে ছিল মদ তৈরির অসংখ্য কারখানা। দীর্ঘদিন উত্পাদিত মদ ভালো রাখতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছিল মালিক এবং সরকার। পাস্তুর গবেষণা করে বের করলেন কী কারণে মদ নষ্ট হয়ে যায়। ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসের জন্য তিনি আবার গবেষণা করতে থাকেন। গবেষণায় সফল হলেন। তাঁর আবিষ্কৃত তথ্য আজ পৃথিবী জুড়ে 'পাস্তুরাইজেশন’ নামে পরিচিত। এ ভাবে তিনি আবিষ্কার করেছেন— গুটি পোকার দু'টি প্রধান রোগ এবং রোগ নির্মূলের উপায়। ১৮৩৭ সালে তাঁকে সোরবোরন বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক নিযুক্ত করা হয়। এখানে তিনি জীবাণু তত্ত্ব সম্পর্কে গবেষণা শুরু করেন। আবিষ্কার করেন অ্যানথ্রাক্স রোগের কারণ এবং অ্যানথ্রাক্সের প্রতিষেধক। সে সময় জলাতঙ্ক রোগের ব্যাপক প্রকোপ ছিল। বিশেষ করে পাগলা কুকুর কামড়ালে মানুষ এ রোগে আক্রান্ত হয়। লুই পাস্তুর কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায় দ্বারা আবিষ্কার করেন জলাতঙ্ক রোগের প্রতিষেধক। এই আবিষ্কার তাঁকে বিখ্যাত করে তোলে। ফরাসি অ্যাকাডেমির সভাপতি নির্বাচিত হলেন তিনি। ১৮৯২ সালের ২৭ ডিসেম্বর তাঁকে অভিনন্দন জানাতে প্যারিসে সমবেত হলেন দেশবিদেশের বিজ্ঞানীগণ। সম্মান, উপাধি, পুরস্কার, মানপত্র তাঁর চরিত্র বদলে দেয়নি। তিনি আগের মতোই নিরহঙ্কার, নিরলস, সাদামাটা রয়ে গেলেন। শেষ জীবনে বাইবেল পাঠ আর উপাসনার মধ্যে নিজেকে সমর্পণ করেন। এই বিখ্যাত বিজ্ঞান-সাধক, ১৮৯৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর চিরনিদ্রায় শায়িত হন।

সূত্র : বিশ্বের সেরা ১০১ বিজ্ঞানীর জীবনী, আ. ন. ম. মিজানুর রহমান পাটওয়ারি, মিজান পাবলিশার্স, ঢাকা

সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate