বিজ্ঞানের ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছেন হামফ্রে ডেভি। বৈজ্ঞানিক গবেষণার আকাবাঁকা পথে সকলের অনেকের কীর্তিই প্রাপ্য মর্যাদা পায় না। সে দিক থেকেই স্মরণীয় হামফ্রে ডেভির নাম। টমাস আলভা এডিসনকে অনেকে বৈদ্যুতিক বাতির (ইলেকট্রিক বালব) উদ্ভাবক হিসেবে মনে করেন। তবে এডিসনের অনেক আগেই ব্রিটিশ বিজ্ঞানী হামফ্রে ডেভি বৈদ্যুতিক বাতি উদ্ভাবন নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। আর তাঁর দেখানো পথ ধরেই এগিয়ে গিয়ে এডিসন অধিক স্থায়ী আধুনিক বৈদ্যুতিক বাতি তৈরি করেন। তাই বৈদ্যুতিক বাতির উদ্ভাবক হিসেবে হামফ্রে ডেভির নামই এসেছে অধিকাংশ জায়গায়।
ডেভি 'বিদ্যুৎ' নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে ইলেকট্রিক ব্যাটারি আবিষ্কার করেন। তিনি যখন ব্যাটারির সঙ্গে তার সংযোগ করেন তখন ব্যাটারির কার্বন থেকে আলোর উৎপত্তি হয়। এ ঘটনাটি ১৮০০ সালের দিকে।
এ ঘটনার প্রায় ৭০ বছর পর টমাস আলভা এডিসন হামফ্রে ডেভির বৈদ্যুতিক বাতি উন্নয়নের কাজ শুরু করেন। এডিসন গবেষণা করে দেখলেন, কার্বন ফিলামেন্টকে যদি অক্সিজেনমুক্ত করা যায়, তবে তা প্রায় ৪০ ঘণ্টা পর্যন্ত আলো দিতে পারে। তখনই ভ্যাক্যুয়ামের চিন্তা তাঁর মাথায় এল।
ইলেকট্রিক্যাল যন্ত্রপাতি নিয়ে নিরবচ্ছিন্ন গবেষণা করার জন্য ১৮৭৬ সালে এডিসন নিউজার্সির মেনলো পার্কে একটি রিসার্চ ল্যাব গড়ে তোলেন। ১৮৭৯ সালে এ ল্যাবেই বৈদ্যুতিক বাতি সংক্রান্ত গবেষণা সাফল্যের মুখ দেখে। এর পরের বছর অর্থাৎ ১৮৮০ সালের ২৭ জানুয়ারি থেকে 'আধুনিক বৈদ্যুতিক বাতি' আবিষ্কারের পেটেন্ট নিয়ে তাঁর বাণিজ্যিক ভাবে বৈদ্যুতিক বাতি উৎপাদন শুরু হয়।
১৮৯০ সালের মধ্যে এডিসন তাঁর গবেষণাগারকে পরিপূর্ণ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান হিসেবে দাঁড় করান। এ সফলতা এডিসনকে নিয়ে যায় অন্য রকম উচ্চতায়। এখনও তাঁকে তড়িৎ বিজ্ঞানের অন্যতম সফল মানব হিসেবে উল্লেখ করা হয়। আর 'বৈদ্যুতিক বাতি' ধারণার উদ্ভাবক হয়েও এক রকম আড়ালেই পড়ে গেছেন হামফ্রে ডেভি।
সূত্র : বিশ্বের সেরা ১০১ বিজ্ঞানীর জীবনী, আ. ন. ম. মিজানুর রহমান পাটওয়ারি, মিজান পাবলিশার্স, ঢাকা
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/20/2020