অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

হাবলের সূত্র ও মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের স্বপক্ষে প্রমাণ

হাবলের সূত্র ও মহাবিশ্বের সম্প্রসারণের স্বপক্ষে প্রমাণ

১৯২৯ সালে এডুইন হাব্‌ল পরীক্ষা করে দেখলেন যে আমাদের আকাশগঙ্গা (milky way) ছায়াপথের (galaxy) বাইরের সমস্ত ছায়াপথ ক্রমশ আমাদের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে এবং এই সরে যাওয়ার গতিবেগ ঐ ছায়াপথগুলির থেকে আমাদের দূরত্বের সমানুপাতিক। অর্থাৎ একটা ছায়াপথ আমাদের থেকে যত বেশি দূরে, তার সরে যাওয়ার গতিবেগও ততই বেশি। তার মানে আমাদের মহাবিশ্ব প্রকৃতপক্ষেই সম্প্রসারিত হচ্ছে। অর্থাৎ আইনস্টাইনের স্থির মহাবিশ্বের ধারণা ঠিক নয়, এর পরেই আইনস্টাইন ঐ বাড়তি রাশিটি তাঁর সমীকরণে যোগ করা প্রসঙ্গে বলেছিলেন সেটি তাঁর জীবনের সব চেয়ে বড় ভুল। এইখানে বলে রাখা ভালো যে হাব্‌লের এই পরীক্ষাই প্রকৃতপক্ষে ‘বিগ ব্যাং’ মডেলের সপক্ষে অন্য‌তম যুক্তি। কারণ বিজ্ঞানীরা যখন জানলেন মহাবিশ্ব সম্প্রসারণশীল, তখনই তাঁরা বুঝলেন যে অতীতে আমাদের এই বিশ্বজগৎ তা হলে অবশ্য‌ই আয়তনে ছোট ছিল এবং এই অতীতেরই কোনও একটা সময়ে তা হলে আমাদের ব্রহ্মাণ্ড ছিল এক চরম তাপমাত্রা ও অসীম ঘনত্বের অবস্থায় যেখান থেকে শুরু হয়েছিল তার সম্প্রসারণ, আর যা আজ ‘বিগ ব্যাং’ নামে পরিচিত। প্রসারণশীল মহাবিশ্বের ধারণা থেকে আমরা বুঝতে পারি যে মহাবিশ্বের দু’টি বিন্দুর মধ্যে দূরত্ব সময়ের সাথে সাথে ক্রমশ বেড়ে চলেছে। এর ফলে পদার্থবিদ্যার নিয়ম অনুযায়ী আলো যখন এই দু’টি বিন্দুর মধ্যে ক্রমবর্ধমান দূরত্ব অতিক্রম করবে, তখন তার তরঙ্গদৈর্ঘ্য‌ যাবে বেড়ে। আমরা সবাই জানি যে একটা ট্রেন যখন দ্রুত বেগে আমাদের সামনে দিয়ে দূরে চলে যায় তখন তার তীক্ষ্নতা পরিবর্তিত হয়। উৎস এবং পর্যবেক্ষকের মধ্যেকার আপেক্ষিক গতিবেগের কারণে শব্দতরঙ্গের কম্পাঙ্কের এই পরিবর্তন ডপ্‌লার ক্রিয়া নামে পরিচিত। আলোক তরঙ্গের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য‌। দূরে সরে যাওয়া ছায়াপথ থেকে যে আলো আমাদের কাছে এসে পৌঁছয় সেই আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য‌ও তাই তড়িৎ-চুম্বকীয় বর্ণালীর দৃশ্য‌মান অংশে লাল রঙের দিকে সরে যায়, কারণ বর্ণালীর মধ্যে লাল আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য‌ বেশি। এই ঘটনাকে cosmological redshift বলা হয়। আলোকে যত দীর্ঘ পথ অতিক্রম করতে হয়, তার ‘রেডশিফ্‌ট্’-এর পরিমাণও ততই বাড়তে থাকে। যে হেতু আলো একটি নির্দিষ্ট গতিবেগে ছোটে, তাই হাব্‌ল বললেন যে একটি দূরবর্তী ছায়াপথ থেকে আসা আলোতে যে ‘রেডশিফ্‌ট্’ দেখা যাবে তা ঐ ছায়াপথটি থেকে দূরত্বের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হতে হবে। এই সম্পর্কটিকে হাব্‌লের সূত্র বলা হয়। এই প্রসঙ্গে জেনে রাখা ভালো যে ছায়াপথগুলির আমাদের থেকে দূরে সরে যাওয়ার অর্থ এই নয় যে তারা দেশকালের মধ্যে দিয়ে আক্ষরিক অর্থেই একে অপরের থেকে দূরে ছিটকে যাচ্ছে, আসলে ‘স্পেস’ বা স্থানেরই সম্প্রসারণ ঘটেছে ‘বিগ ব্যাং’-এর ফলে, আর তাই বলা চলে যে ছায়াপথগুলি ‘স্পেস’-এর ওপর ভর করে দূরে সরছে। ঘটনাটা অনেকটা তুলনীয় একটা বেলুন ফোলানোর সঙ্গে। মনে করা যাক একটা অর্ধেক ফোলানো বেলুনের গায়ে ‘ক’ আর ‘খ’ দু’টি বিন্দুতে দু’টি পিঁপড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে, তারা নড়াচড়া করছে না।

এ বার বেলুনটিকে আর একটু ফোলানো হলে ঐ ‘ক’ আর ‘খ’ দু’টি বিন্দুর মধ্যে দূরত্ব বেড়ে যাবে। আর তার ফলে ঐ পিঁপড়ে-দুটির মধ্যেও দূরত্ব বেড়ে যাবে। পিঁপড়ে-দু’টি ‘ক’ ও ‘খ’ বিন্দুতে স্থির হয়ে বসে থাকলে, বেলুনটিকে যদি আরো ফোলানো হয়, তা হলে তাদের মধ্যে দূরত্ব ক্রমশ বাড়তেই থাকবে, যদিও পিঁপড়ে দু’টি কখনওই নড়াচড়া করেনি। এখানেও ঘটনাটা অনেকটা এই রকম। বেলুনটা হচ্ছে আমাদের ‘স্পেস’, যার সম্প্রসারণ ঘটছে, ছায়াপথগুলি হলো ঐ বেলুনের ওপর বসে থাকা পিঁপড়ের মতো, যারা ‘স্পেস’’-এর প্রসারণের ফলে একে অপরের থেকে দূরে সরে যাচ্ছে।

সূত্র : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংসদ ও দফতর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার

সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/27/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate