অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

ওবেইদ সিদ্দিকি

ওবেইদ সিদ্দিকি

বিজ্ঞানের জগতে কোনও বিজ্ঞানীর অবদানের গুরুত্ব বুঝতে গেলে সেই বিষয়ের প্রতি যে গভীর দখল থাকাটা বেশ জরুরি সেটা আমরা সবাই জানি। তবে কখনওসখনও সব খুঁটিনাটি না জেনেও কার্যকারিতা এবং বৈজ্ঞানিক ভিত্তি তুলে ধরলে তা সাধারণ পাঠকের আগ্রহ যে বেশ বাড়িয়ে তোলে সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। আমার উদ্দেশ্য সেটাই। তা হলে আসুন আমরা বরং আগে জীববিজ্ঞানের বস্তুভিত্তিক ভিতটা একটু  নেড়ে-চেড়ে  দেখে নিই।

আমাদের ঘর-বাড়ি যেমন ইট-বালি-সুরকি-সিমেন্ট দিয়ে তৈরি ঠিক তেমনই জীবজগতে প্রাণী-উদ্ভিদ সব কোষ দিয়ে তৈরি এ আমরা স্কুলজীবনে সকলেই পড়েছি। জীবজগতে কারও একটা কোষ (ব্যাকটেরিয়া) কেউ বা বহুকোষী (মানুষ)। এক কোষী জীবের থেকে বহুকোষী জীবের কাজকর্মের জটিলতা বহুগুণ বেশি। বহুকোষী জীবের ভিন্ন ভিন্ন কোষের মিলিত কাজের ফলেই এই অপেক্ষাকৃত জটিলতা।

একটু সহজ ভাবে বলি। আমাদের সমাজে ভালো মন্দ কত ধরনেরই মানুষ রয়েছেন। কেউ কৃষক, কেউ শ্রমিক, কেউ বিচারক, কেউ বা বুদ্ধিজীবী, আবার কেউ অপরাধী। সমাজে প্রত্যেকের ভূমিকা আলাদা হলেও এদের মধ্যে কিন্তু বেশ একটা দারুণ মিল রয়েছে। সকলেই খায়, ঘুমোয়, বংশবিস্তার করে আবার মারা যায়। এক জন মানুষকে বোঝাটা যতটা কঠিন তার থেকেও অনেক বেশি কঠিন এই নানা ধরনের মানুষ নিয়ে যখন একটা সমাজ তৈরি হয়! সমাজের ভিন্ন ভিন্ন মানুষের আলাদা আলাদা কাজের এক জটিল সমষ্টিই এর কারণ।

জীবজগতেও বহু-কোষী জীবের সাথে এক-কোষী জীবের কার্যগত আচরণের তুলনাটা সামাজিক জীবনের সাথে বেশ মিলে যায়। নানান ধরনের কোষের মধ্যে ঠিক এ রকমই একটা দারুণ মিল রয়েছে ! এরাও প্রত্যেকে খায়, নতুন কোষ তৈরি করে, মরে যায় আর স্থান-কাল-পাত্র বিশেষে আলাদা-আলাদা কাজ করে। এই যে আমরা দেখি, শুনি, শুঁকি, দৌড়ে বেড়াই, ভাবনাচিন্তা করি, ঠান্ডা-গরম বুঝতে পারি এ সবই নানান ধরনের কোষের নানান রকমের মিলিত কাজের ফল আর এই সব আলাদা কোষের কাজের চরিত্র লুকিয়ে রয়েছে তাদের নিউক্লিয়াস-এর ভেতরে লুকিয়ে থাকা ডিএনএ-এর মধ্যে। নিউক্লিয়াস হল কোষের তথ্য ভাণ্ডার।

ডিএনএ অনেক জিন-এর সমষ্টি। তার আগে জেনে নিই একটু জিন-এর কথা। কি এই জিন ? জিন হচ্ছে চার ধরনের নিউক্লিক অ্যাসিড-এর বিভিন্ন ধরনের সজ্জা (arrangement)। হাজার হাজার নিউক্লিক অ্যাসিড-এর বিভিন্ন ধরনের সজ্জার ফলেই নানান জিন আর তাদের নানান সজ্জার ফলে পৃথিবীতে আজ এত জীববৈচিত্র ! স্থান, সময়, পরিবেশের ভিত্তিতে একই জীবের আলাদা আলাদা কোষে একই ডিএনএ থাকা সত্ত্বেও আলাদা আলাদা জিন-এর প্রকাশ ঘটে (বৈজ্ঞানিক কারণটি অত্যন্ত গভীর )।

কোষের মধ্যে জিন-এর প্রকাশ (genetic expression) ঘটলে মূলত প্রোটিন তৈরি হয়। আলাদা আলাদা জিন আলাদা প্রোটিন তৈরি করে। এই নানান প্রোটিনই বিভিন্ন  জৈবিক অণুর সাথে মিলে ভিন্ন ভিন্ন কাজ করে। ফলে কোষের চরিত্রের এই বৈচিত্র নির্ভর করে ভিন্ন আচরণ ধর্মী প্রোটিনের প্রকাশের জন্য।

এ বার প্রোটিনের কথায় আসা যাক। প্রোটিন-ও আসলে কুড়ি ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড-এর বিভিন্ন সজ্জা। কোন প্রোটিন কী রকম হবে তা নির্ভর করে অ্যামিনো অ্যাসিডগুলো কী রকম সিকোয়েন্সে আছে আর এই অ্যামিনো অ্যাসিডের সিকোয়েন্স নির্ভর  করে জিন-এর মধ্যে উপস্থিত নিউক্লিক অ্যাসিড-এর সিকোয়েন্সের ওপর । কিন্তু ঠিক কী ভাবে নিউক্লিক অ্যাসিড-এর সিকোয়েন্স এই প্রোটিন তৈরি নিয়ন্ত্রণ করে ?

প্রতিটি জিন-কে আমরা এ বার একটু ভালো করে দেখি। ডিএনএ-কে একটা হাইওয়ে-র সাথে তুলনা করতে পারি। হাইওয়ে-তে যেমন মাইলস্টোন দেখে আমরা বুঝতে পারি কোন জায়গার কোথায় শুরু কোথায় শেষ তেমন ডিএনএ-তে কিছু বিশেষ সংকেত দেখে আমরা বুঝতে পারি কোন জিন-এর কোথায় শুরু কোথায় শেষ। কোন বিশেষ জিন-কে আরও গভীর ভাবে লক্ষ করলে দেখব সেই জিন-এর বৈশিষ্ট্য হল নির্দিষ্ট ক্রমান্বয়ে সাজানো নির্দিষ্ট কিছু কোডোন। আর কোডোন-এর ভিতরে ঢুকলেই দেখব চার ধরনের নিউক্লিক অ্যাসিড-এর যে কোনও তিনটি করে নিয়ে একটি করে কোডোন তৈরি করা যায় আর কোনও বিশেষ নিউক্লিক অ্যাসিড-এর সিকোয়েন্স-এ তৈরি হয় বিভিন্ন কোডোন। বিশেষ কোডোন-এর সিকোয়েন্স সংকেত দেয় প্রোটিন তৈরিতে অ্যামিনো অ্যাসিড-এর সিকোয়েন্স কী রকম হবে। প্রোটিন সংশ্লেষ করতে যেমন একটা শুরু আছে তেমনি একটা শেষ আছে, তাই যে সমস্ত কোডোন এই সংকেত দেয় তাদের যথাক্রমে স্টার্ট কোডোন এবং স্টপ কোডোন বলে। কোন কোন ক্ষেত্রে জিন-এর মধ্যে কোডোন-এ থাকা নিউক্লিক অ্যাসিড-এর সিকোয়েন্স-এর হেরফের হলে প্রোটিন-এর অ্যামিনো অ্যাসিড-এর সিকোয়েন্স-এর পরিবর্তনে প্রোটিনটি তার কার্যকারিতা হারাতে পারে, দেখা দিতে পারে নানান রোগ। কোডোন-এর পরিবর্তনকেই বলে জেনেটিক মিউটেশন। কখনও কোডোন-এর একটি মাত্র নিউক্লিক অ্যাসিড-এর পরিবর্তন হলেও অ্যামিনো অ্যাসিড-এর নির্বাচন পালটে যেতে পারে আর ফল মিসেন্স মিউটেশন বা পয়েন্ট মিউটেশন। জেনেটিক মিউটেশন-এর ফলে যেমন জীবজগতে বিবর্তন দেখা যায় তেমনি দেখা যায় অনেক রকমের রোগ। ক্যানসার, থ্যালাসেমিয়া, মাস্কুলার ডিসট্রোফি সহ আরও অনেক রোগই এই জেনেটিক মিউটেশন-এর কারণ।

ব্যাপারটা একটু জটিল মনে হচ্ছে তাই না? আসুন সুবিধার জন্য একটা উদাহরণ দিই। আমাদের দেহে রক্তের মধ্যে যে লোহিত রক্ত কণিকা আছে তার মধ্যে রয়েছে হিমোগ্লোবিন নামের একটা বড়সড় প্রোটিন যা আমাদের দেহে অক্সিজেন সরবরাহ করে। হিমোগ্লোবিন-এর এই বড় প্রোটিনটা আবার দু’ ধরনের প্রোটিন দিয়ে তৈরি আলফা-গ্লোবিন আর বিটা-গ্লোবিন। এই বিটা-গ্লোবিন-ও নির্দিষ্ট কিছু অ্যামিনো অ্যাসিড-এর ক্রমান্বয়ে তৈরি। দেখা গেছে বিটা-গ্লোবিন-র কোনও এক বিশেষ যায়গায় এই অ্যামিনো অ্যাসিড-এর পরিবর্তন হলে তার গঠন যায় পালটে, সাথে সাথে লোহিত রক্তকণিকার গোলাকার পালটে সেটা হয়ে যায় কাস্তের মতো, ফল সিকল সেল অ্যানিমিয়া। এই অ্যামিনো অ্যাসিড-এর পালটানোর কারণ প্রোটিন তৈরির সময় কোডোন থেকে আসা ভুল তথ্য আর তার কারণ কোডোন-এ থাকা অন্য রকম ডিএনএ সিকোয়েন্স। নীচে একটা ছবি দিলাম।

এই বারে আসি মূল প্রসঙ্গে। জানেন কি অধ্যাপক ওবেইদ সিদ্দিকি-ই এই স্টপ কোডোন-এর আবিষ্কর্তা এবং মিসেন্স মিউটেশন-এর কারণটিও তিনি গোটা জগতের সামনে প্রথম তুলে ধরেন ? হ্যাঁ, তাঁর কাজের সূত্র ধরেই নোবেল প্রাইজ পান অনেক বিজ্ঞানী, হরগোবিন্দ খোরানা-ও তাঁদের এক জন !

এ বার সত্যিই জানতে ইচ্ছে হচ্ছে কেমন ছিল এমন এক প্রাতস্মরণীয় বিজ্ঞানীর জীবন ? আজ থেকে ৮৩ বছর আগে ১৯৩২ সালের ৭ জানুয়ারি উত্তরপ্রদেশের বাস্তি জেলায় তাঁর জন্ম। ছোট থেকেই ইচ্ছে ফোটোগ্রাফার হবেন কিন্তু তার থেকেও তার মনের মধ্যে জোরালো হয়ে দেখা দিল দেশপ্রেম। বড় হয়েছেন, তখনও ভারত ব্রিটিশের অধীনে। দেশে স্বাধীনতা এল রাজনৈতিক টালবাহানার মধ্যে দিয়ে কিন্তু ভারতের মানুষের তখনও বহু সমস্যা। আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন জড়িয়ে পড়লেন রাজনৈতিক আন্দোলনে। রাজনীতিকেই তখন তিনি একমাত্র পথ হিসেবে দেখছিলেন! যোগ দিলেন স্টুডেন্ট ফেডারেশন এবং আলিগড় মুসলিম ইউনিভার্সিটি কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়া ইউনিটে। ভারত সরকার তখন দেশ জুড়ে বামপন্থী আন্দোলনকে দাবিয়ে রাখার চেষ্টায় বদ্ধপরিকর।

১৯৪৯ সালের এ রকমই এক আন্দোলনের সময় তত্কালীন সরকার তাকে জেলবন্দি করেন। কারাবাস হল প্রায় দু’ বছর, ১৯৪৯ থেকে ১৯৫১। এই সময়েই জাকির হোসেন (ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি) তাঁকে রাজনীতি ছেড়ে বিজ্ঞানপাঠে পুনরায় উত্সাহ জোগান। শুরু হয় জীবনের এক নতুন অধ্যায়। ১৯৫৩ সালে বটানি-তে এমএসসি করে কিছু দিন কলেজের অধ্যাপনার কাজ করার পর ঠিক করলেন গবেষণা করবেন। যোগ দিলেন পুসার ইন্ডিয়ান এগ্রিকালচারাল রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এ, বিষয় প্লান্ট এমব্রায়োলজি, কিন্তু এ বারেও বাধ সাধল প্রকৃতি! প্রবল শিলাবৃষ্টিতে নষ্ট হয়ে গেল গবেষণার কাজের জন্য প্রয়োজনীয় ফসল। কাজ শুরু করতে হলে অপেক্ষা করতে হবে আরও একটা বছর! কিন্তু কর্মপাগল মানুষটি তা মানতে নারাজ। জেনেটিকসের কাজ কোথায় বেশ দ্রুত ভাবে করা যেতে পারে শুরু করলেন তারই খোঁজ। চিঠি লিখলেন গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গুইদো পন্টেকরভোকে। পন্টেকরভো তাঁকে কোনও রকম আশা না দিয়েই ইন্টারভিউ-এর জন্য আসতে বলেন। মজার ব্যাপার এটাই ছিল পন্টেকরভোর পরীক্ষা! কোনও আশা না রেখেই যে মানুষ এত দূর চলে আসতে পারে তার যে গবেষণার উদ্যম আন্তরিক তা বুঝতে পন্টেকরভো ভুল করেননি।

গুইদো পন্টেকরভো-এর তত্ত্বাবধানে পিএইচডি শেষ করার পর ১৯৬১ সালে পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালান গ্যারেন-এর গবেষণাগারে যোগ দেন পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে। ঠিক এই সময়তেই ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস-এর জেনেটিকস-এর ওপর কাজ করতে গিয়েই এমন কিছু কাজ করেন যার ফল যুগান্তকারী আবিষ্কার স্টপ কোডোন এবং মিসেন্স মিউটেশন।

এ বার একটু অন্য প্রসঙ্গে আসি। নারায়ণ সান্যাল-এর “বিশ্বাসঘাতক” আশা করি অনেকেই পড়েছেন। মনে পড়ে কি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টকে পরমাণু বোমা প্রকল্পের (ম্যানহাট্টান প্রোজেক্ট) জন্য আর্জি জানিয়ে আইনস্টাইনের চিঠি লেখার নেপথ্যে যে ব্যক্তি কাজ করেছিলেন তাঁর নাম ? হ্যাঁ, ঠিক ধরেছেন, লিও জিলারড। অ্যালান গ্যারেন-এর সাথে কাজ করার সময় ওবেইদ-এর আলাপ হয় জিলারড-এর সঙ্গে। দূরদর্শী জিলারড তখন হোমি ভাবাকে ওবেইদ-এর কাজ সম্বন্ধে জানান। ঠিক একই সময়ে পন্টেকরভো এক চিঠিতে ভাবাকে লেখেন, “I think it would be very important for the progress of Biology in India that he should go back to a job in which his abilities would be fully expressed. In fact, I’m really baffled as to why India continues to promote mediocre scientist politicians and does nothing to maintain the really good scientists.”

বিচক্ষণ ভাবা কিন্তু ভুল করেননি। সহকর্মীদের সাথে মতানৈক্য হওয়া সত্ত্বেও নিয়োগ করেছিলেন ওবেইদ-কে। ১৯৬২ সালে মুম্বইয়ের টিআইএফআর-এ  ওবেইদ-এর হাত ধরে জন্ম নিল ভারতের প্রথম মলেকুলার বায়োলজি ইউনিট (বর্তমানে বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস বিভাগ)। প্রবল প্রতিবন্ধকতার সাথে এমন একটা কাজের সূচনা যে কতটা কঠিন তা অনুমান করা যায় নোবেলজয়ী বিজ্ঞানী বেংকটরামন রামকৃষ্ণন-এর কথায়, “It is not so difficult to do first-rate work at the LMB [Laboratory of Molecular Biology in Cambridge], but to do it in India while building up institutions with a good tradition is truly remarkable.”

মহান বিজ্ঞানীদের কাজের প্রকাশ তাঁদের কাজের ব্যাপ্তিতে। ওবেইদ কিন্তু ব্যাকটেরিয়াল-ই থেমে থাকলেন না। ঝুঁকে পড়লেন জীববিদ্যার আরও গভীর প্রশ্নে। ১৯৭০ সালে বন্ধু গবেষক সেমুর বেঞ্জার-এর সাথে মেতে উঠলেন জেনেটিক বেসিস অফ নিউরোন্যাল সিগন্যাল-এর (স্নায়ু বিজ্ঞানের জেনেটিক কারণ) গবেষণায়। প্রশ্ন, বিভিন্ন স্নায়ুর মধ্যে নানান সংকেতের আদানপ্রদানের জেনেটিক এবং মলেকুলার কারণগুলি কী? পৃথিবীর জীববিজ্ঞানে যুক্ত হল আরও একটা অন্যতম নতুন অধ্যায়!

১৯৭৬ সাল থেকে তাঁর অন্যতম ছাত্রী ভেরোনিকা রডরিগেস-এর সাথে যাত্রা শুরু করলেন স্নায়ু বিজ্ঞানের গবেষণার  সম্পূর্ণ এক নতুন পথে। একসাথে ড্রসোফিলা-র (ফ্রুট ফ্লাই) উপর গবেষণায় আবিষ্কার করলেন ঘ্রাণ এবং স্বাদ গ্রহণকারী স্নায়ুগুলির কার্যকলাপ, চিহ্নিত করলেন স্নাযুগুলির নিয়ন্ত্রণকারী নতুন কিছু জিন। জীববিজ্ঞানে তাঁর কাজের ব্যাপ্তি দেখে নোবেলজয়ী (১৯৯৫) বিজ্ঞানী ই বি লিউইস বিস্মিত হয়েই প্রশ্ন করেছিলেন, “How does one person do such wonderful work in Aspergillus, E. coli, Drosophila Physiology and behavior, I can barely deal with one complex locus in a lifetime?”

সমাজবাদী এই বিজ্ঞানীর জীবনের অনেক দিকই ফুটে উঠেছে তাঁর নানা কাজে। উর্দু ভাষায় পারদর্শী, শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের গভীর অনুরাগী ওবেইদ সমাজের সাথে যুক্ত থেকে বিজ্ঞানচর্চাই আদর্শ মনে করতেন। ছোটদের কাছে বিজ্ঞানের নতুন দিক তুলে ধরতে তিনি পেছপা হননি, বরং উত্সাহের সাথে পপুলার সায়েন্সও রেখে গেছেন তাঁর অবদান। শুধু বিজ্ঞান নয় বাস্তবায়িত করেছেন ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল সায়েন্সেস মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানে উন্নতমানের বিজ্ঞানচর্চায়। সর্বদা মুক্তমনা বিজ্ঞান, সমাজমনস্ক, কর্মঠ  বিজ্ঞানী ওবেইদ-র স্বপ্ন ছিল  সমাজনির্ভর বিজ্ঞানভিত্তিক এক ভারতবর্ষের! ওবেইদ আজ আর আমাদের মধ্যে নেই কিন্তু তাঁর উত্তরসুরিদের অনুপ্রেরণা দিয়ে গেছেন এক যুগোপযোগী স্বপ্নের বাস্তব রূপ দিতে।

লেখক : কুণাল চক্রবর্তী, ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিকাল সায়েন্সেস, বেঙ্গালুরু

সূত্র : bigyan.org.in

সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/22/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate