এফএম প্রযুক্তি ব্যবহার করে ১৯৪৬ সালে আমেরিকার টেলিফোন কোম্পানি এটি অ্যান্ড টি মোবাইল টেলিফোনের পরিষেবা দেওয়া শুরু করল।এফএম প্রযুক্তি ব্যবহার করে ১৯৪৬ সালে আমেরিকার টেলিফোন কোম্পানি এটি অ্যান্ড টি মোবাইল টেলিফোনের পরিষেবা দেওয়া শুরু করল। সে সময়কার মোবাইল ফোন এখনকার মোবাইল ফোনের মতো নয়। গাড়ির ভেতরে ২০-২৫ পাউন্ডের বিরাট দ্বিমুখী রেডিও (ট্র্যান্সমিটার-রিসিভার) বসানো থাকত। বাইরে থাকত একটা অ্যান্টেনা। এগুলি শহরের মাঝখানে একটা উঁচু টাওয়ারের সঙ্গে যুক্ত ট্র্যান্সমিটার ও রিসিভারের সঙ্গে যোগাযোগ করত। সেগুলি আবার যুক্ত থাকত টেলিফোন অফিসের সঙ্গে - যেখানে গিয়ে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ হত। নিউ ইয়র্ক শহরে ১৯৪৬ সালে যেখানে প্রায় দু’ কোটি লোকের বাস, সেখানে মাত্র ৫৪৩ জন এই পরিষেবা পেত! এই পরিষেবার জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল মাত্র ১৫টি এফএম চ্যানেল। চ্যানেল হল একটা ফ্রিকোয়েন্সি-গুচ্ছ যেটি প্রয়োজন হয় বেতারে কথা-বার্তা বহন করে নিয়ে যাওয়ার জন্য। এই প্রযুক্তিতে গ্রাহকের নিজস্ব কোনও চ্যানেল ছিল না। যে যখন কথা বলতে চাইত, তখন তাকে ১৫টি থেকে যে কোনও একটি চ্যানেল কথা বলার সময়টুকুর জন্য দেওয়া হত। তার কথা শেষ হলেই সেটি অন্য যে গ্রাহক কথা বলতে চাইছে তাকে দেওয়া হত। অর্থাৎ এই পরিষেবায় একই সময়ে ১৫ জন গ্রাহকের বেশি কথা বলতে পারত না। ষোলোতম গ্রাহক কথা বলতে চাইলে লাইন পেত না। টেলিফোনের ভাষায় এটাকে বলা হয় ‘ব্লকিং’। এক-আধ সময়ে সাধারণ টেলিফোনেও এটা ঘটে - সবগুলি সার্কিট ব্যবহৃত হচ্ছে বলে ডায়াল-টোন পাওয়া যায় না। তবে নিউ ইয়র্কের মতো শহরে যদি ১৫ জনের বেশি এক সঙ্গে কথা বলতে না পারে, তা হলে বাস্তবিকই একটা সমস্যা। বুঝতে অসুবিধা হয় না, কেন এই মোবাইল প্রযুক্তি জনপ্রিয় হয়নি।
প্রশ্ন জাগতে পারে মাত্র ১৫টা চ্যানেলের বদলে ১৫০০ চ্যানেল দিলে অসুবিধা কী ছিল। অসুবিধা হল বিভিন্ন কাজের জন্য বিভিন্ন ফ্রিকোয়েন্সি অনুমোদিত হয়ে আছে। ইচ্ছেমতো ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার করার উপায় নেই। সুতরাং যেটুকু বরাদ্দ করা হয়েছে সেটিকেই উন্নততর প্রযুক্তি দিয়ে আরও ভালো ভাবে সদ্ব্যবহার করতে হবে।
সূত্র : মোবাইল ফোন খুঁটিনাটি, মোজাহিদুল ইসলাম ঢেউ, সিসটেক পাবলিকেশন্স, ঢাকা
সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/30/2020