অস্ট্রালোপিথিকাস অ্যাফরিকানাস (Australopithecus africanus) — ১৯২০ থেকে ১৯৪০ সাল পূর্বে দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন গুহায় খননকার্য চালাতে গিয়ে আবিষ্কৃত হয় এই আফ্রিকানুস প্রজাতি। নৃতত্ত্ব গবেষণা মতে আজ থেকে ৩০ লক্ষ বছর আগে এদের দেখা যেত। মোটামুটি ৫ লক্ষ বছর কালব্যাপী এই প্রজাতির অস্তিত্ব ছিল বলে অনুমান। এদের সাথে পূর্বসূরির খুব একটা বৈচিত্র না থাকলেও তাদের দাঁত আকারে বড় ছিল এবং তারা তৃণভোজী ছিল। তাদের চোয়াল আমাদের মতন ছিল। তাদের হাতের অগ্রভাগ বড় ও প্রশস্থ ছিল এবং সংবেদনশীল আঙুল প্যাড ছিল যা পরবর্তী মানব (Homo) প্রজাতির মধ্যে পাওয়া যায়।
এ ছাড়া ২৫ লক্ষ বছর আগে অস্ট্রালোপিথিকাস গার্হি (Australopithecus garhi) বউরি এবং ইথিওপিয়া অঞ্চলে বাস করত। উরুর হাড় হোমো প্রজাতির মতো হলেও লম্বা গুলি অস্ট্রালোপিথিকাস প্রজাতিরন্যায়।
হোমো হ্যাবিলিস (Homo habilis) (হ্যান্ডি ম্যান) — ২৪ থেকে ১৪ লক্ষ পূর্বভাস পর্যায়ে পৃথিবীর বুকে দেখা যেত এই হ্যাবিলিস গোষ্ঠীভুক্ত আদি ‘মানুষ’। এদের লক্ষণীয় বিষয় হল এই প্রথম হোমিনিডরা (Hominid) কথা বলতে শুরু করল এবং সাধারণ সরঞ্জামের ব্যবহার করতে শিখল। এরা মোটামুটি উচ্চতায় ৫ ফুট এবং গড় ওজন ৪৫ কেজি। এই প্রজাতিকে প্রথম ‘মানুষ’ হিসেবে গণ্য করা হয়। হোমো হ্যাবিলিসদের অনেক উপপ্রজাতি পাওয়া যায়। যার মধ্যে হোমো রুডোলফেনসিস (Homorudolfensis) অন্যতম।
১৯৭২ সালে কেনিয়ার কুবি ফোরা থেকে হিবিলিস (hibilis) প্রজাতির সব চেয়ে উন্নত করোটি উদ্ধার করা হয়। এর মস্তিষ্কের আয়তন ৭৪০ ঘন সেমি।
হোমো ইরেক্টাস (Homo erectus)— প্রায় ১৮ লক্ষ বছর আগে এল এই ‘সোজা মানুষ’ বা ইরেকটাস। এরা পৃথিবীর বুকে ১৫ লক্ষ বছর ধরে আধিপত্য বিস্তার করে। এদের মস্তিষ্কের গড় আয়তন ৯০০ ঘন সেমি থেকে ১২০০ ঘন সেমি (যা আজকের মানুষের সমতুল্য)। এরা বাকশক্তির অধিকারী ছিল এবং রান্নার কাজে আগুনের ব্যবহার আবিষ্কার করেছিল, উপরন্তু শিকার সরঞ্জাম এবং ছোটখাটো যন্ত্রপাতি তৈরি করত। এই সময় তারা আফ্রিকা থেকে চিন এবং দক্ষিণ এশিয়ার দিকে ছড়িয়ে পড়ে। এরা শীতের পোশাক তৈরি করতে শেখে।
হোমো হাইডেলবার্জেনসিস (Homo heidelbergensis) — ৬ লক্ষ বছর আগে আফ্রিকা, এশিয়া এবং ইউরোপে বাস করত এই প্রজাতি, যাদের করোটি ছিল গোলাকার এবং শারীরিক গঠন ছিল আজকের মানুষের তুলনায় অনেক মজবুত। আর্কাইক হোমো সাপিয়েন্স (Archaic Homo Sapiens) নামেও এরা পরিচিত। উল্লেখ্য এদের শ্রবণেন্দ্রিয় পূর্বসূরিদের চাইতেও ছিল উন্নত ও প্রখর। এদের শিকার পদ্ধতিও ছিল পূর্ববর্তীদের তুলনায় দক্ষ। এর প্রমাণ বর্শার ব্যবহার।
সূত্র : বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংসদ ও দফতর, পশ্চিমবঙ্গ সরকার
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/28/2020
এই প্রতিবেদনে আগুনের আবিস্কার সম্পর্কে তথ্য রয়েছে।