আজকের কথা নয়, অন্তত এক লক্ষ ৩০ হাজার বছর আগের ঘটনা। ‘আমাদের’ অর্থাৎ তথাকথিত ‘সভ্য মানুষ’ বা হোমো স্যাপিয়েন্সের আবির্ভাবেরও অন্তত ৮০ হাজার বছর আগের ঘটনা। পৃথিবীর কর্তৃত্ব তখন নিয়েনডারথাল মানুষের হাতে। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে গুহার মধ্যে থেকে মানুষের এই পূর্বপুরুষের ব্যবহার করা বহু নিদর্শন থেকে সে যুগের ধারণা গড়ার চেষ্টা করছেন নৃতত্ত্ববিদরা। সম্প্রতি ক্রোয়েশিয়ার একটি গুহায় আদিম নিয়েনডারথাল মানুষের ব্যবহার করা কয়েকটি সামগ্রী দেখে চোখ কপালে উঠেছে সবার। আটটি গয়না। ঈগল পাখির পা ও নখ দিয়ে তৈরি এমন আটটি গয়নার সন্ধান মিলল ক্রোয়েশিয়ার ক্রাপিনা অঞ্চল থেকে। এই প্রথম নয়, প্রায় একশো বছর আগে ক্রোয়েশিয়ার এই অঞ্চল থেকেই অন্তত ৯০০টি এমন নিদর্শন খুঁজে পান বিজ্ঞানীরা। তখন বিজ্ঞানীরা এই নিদর্শনগুলির নির্মাণকাল নির্ণয় করে উঠতে পারেননি। কিন্তু সাম্প্রতিক কালে যে নমুনাগুলি খুঁজে পাওয়া গিয়েছে সেগুলি দেখে বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত যে এক লক্ষ ৩০ হাজার বছর আগে এইগুলি তৈরি করা হয়েছে। ঈগলের পায়ের হাড়ের বিভিন্ন জায়গায় যে ভাবে ফুটো করা রয়েছে, তাতে স্পষ্ট বোঝা যায় ওইগুলি গলায় লকেট হিসেবে ঝোলানোর জন্য ব্যবহার করা হত। ঈগলের নখগুলিতে বিশেষ ভাবে পালিশ করার চিহ্ন রয়েছে।
লক্ষ বছর আগে থেকে মাত্র ত্রিশ হাজার বছর পূর্বে ইউরোপ এবং মধ্য এশিয়ায় বসবাসরত নিয়েন্ডারথাল মানুষদের সাথে আধুনিক মানুষের জেনোম বা ডিএনএ এর পার্থক্য মাত্র ০.১২% ভাগ। অনেক বিজ্ঞানী এই সমস্ত মানুষদেরকে Homo sapiens এর অন্তর্ভুক্ত মনে করে থাকেন। অতি সম্প্রতি ইউরোপে জীন ম্যাপিং এর সাহায্যে দেখা গেছে যে শতকরা ১ থেকে ৪ ভাগ মানুষদের মধ্যে নিয়েনডারথাল মুনষদের জীণ পাওয়া গেছে। এ থেকে ধারনা করা হয় যে নিয়েনডারথাল দের সাথে আধুনিক মানুষ বা হোমো স্যাপিয়েন্সদের মেলামেশা ঘটে থাকবে।
সূত্র: এইসময়, ১৬ মার্চ ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/2/2020