অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

ইস্টারের জন্ম খ্রিস্টের অনেক আগে

ইস্টারের জন্ম খ্রিস্টের অনেক আগে

লৌকিক উৎসব হিসেবে ইস্টার চলে আসছে খ্রিস্টজন্মের অনেক আগে থেকে। আদিতে এটি ছিল এক ‘পেগান’ দেবীর আরাধনা, তাঁর নাম ইয়োস্ত্রে বা ওস্তারা, অথবা অ্যাস্টেয়ার। বসন্তের শুরুতে তিনি পূজিত হতেন, মনে করা হত তাঁর মধ্য দিয়েই শীতের মৃত্যুশয্যা থেকে জীবনের পুনরুত্থান ঘটে। সাহিত্য ও ইতিহাসের বিশেষজ্ঞ নর্মা গুডরিচ লিখেছেন, প্রাচীন স্যাক্সন কবিরা ইয়োস্ত্রে-র সঙ্গে ভারতীয় দেবী কালিকার সাদৃশ্য লক্ষ করেছিলেন: উভয় ক্ষেত্রেই জীবন ও মৃত্যুর চক্রাকার আবর্তন তাঁদের দৃষ্টি এড়ায়নি। ‘ইস্টার বানি’ও খ্রিস্টধর্মের চেয়ে পুরনো, সে ছিল ইয়োস্ত্রের বাহন, তাকে মুন-হেয়ার বলে ডাকা হত। চাঁদের আর এক নাম শশধর বইকী! জার্মানদের বিশ্বাস ছিল, যে শিশুরা ভালো, ইস্টারের পূর্বলগ্নে এই অপার্থিব খরগোশ এসে তাদের জন্য সোনার ডিম রেখে যায়। হোমার স্মিথ-এর মতো পণ্ডিতদের ধারণা, মধ্যযুগের শেষ দিকের আগে অবধি ‘ইস্টার’ নামটাই চালু ছিল না। আয়ার্ল্যান্ডের মতো  কোথাও কোথাও আদি ‘ইয়োস্ত্রের উৎসব’-এর দিনক্ষণ মেনে ইস্টার পালন করা হত; পরে, ৬২৩ খ্রিস্টাব্দে তাদেরও রোমান ক্যালেন্ডারের আওতায় নিয়ে আসা হয়।

ডিম সতত পুনর্জন্মের প্রতীক। ইস্টারের জন্য ডিমের রং যে লাল করা হয়, সেটা খ্রিস্টের রক্তের রূপক হিসেবে। রাশিয়াতে সমাধির উপর রাখা হত রক্তবর্ণ ‘ইস্টার এগ’: পুনরুত্থানের প্রতীক। চেক প্রজাতন্ত্রে ইস্টার সানডেতে খ্রিস্টকে যথাবিহিত ভাবে স্মরণ করা হত, কিন্তু ইস্টার মানডে ছিল খ্রিস্টধর্মের ‘পেগান’ প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য নির্ধারিত: সান-ডে’র বদলে ‘মুন-ডে’। ষোড়শ শতকে ইস্টারের একটি অদ্ভুত প্রথা চালু ছিল, ‘ডিম এবং আপেল নিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে ক্রুশকাঠের দিকে এগিয়ে যাওয়া’। এই রূপকটি এসেছে জন্ম এবং মৃত্যুর প্রাচীন স্ত্রী-আচার থেকে। আজকাল সচরাচর ডিমের আকারে চকলেট, কিংবা জেলি-বিন বা অন্য কোনও মিষ্টি ভিতরে রাখা প্লাস্টিকের ডিম ব্যবহার করা হয়, তবে অনেকেই এখনও মুরগির ডিম কড়া সেদ্ধ করে রং করে থাকেন। পোল্যান্ডে এবং পূর্ব ইউরোপের স্লাভ জনগোষ্ঠীর সমাজে খুব উজ্জ্বল রঙে এবং সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম নকশায় চিত্রিত ডিম নতুন জীবনের অত্যন্ত জনপ্রিয় প্রতীক, এ জন্য অনেক জায়গাতেই পিসাংকা নামে বাটিক-এর মতো একটি শৈলী ব্যবহার করা হয়। বালগেরিয়াতে ‘ডিমের লড়াই’ এক অতি জনপ্রিয় ঐতিহ্য, বিজয়ী ডিমটিকে বোরাক শিরোপা দওয়া হয়, বোরাক মানে যোদ্ধা। জার্মান এবং সুইসরা গাছের ডালে বা ঝোপের মধ্যে নানা রঙে চিত্রিত ডিম ঝোলায়। রাশিয়ার রাজদরবারে অলঙ্করণের জন্য অপূর্ব সব মণিরত্নখচিত ডিম ব্যবহার করেছিল প্রসিদ্ধ হাউস অব ফ্যেবার্জে, তার মাধ্যমে এই লোকশিল্পটি এক নতুন সম্মানের শিখরে পৌঁছেছিল।

সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা, ৩ এপ্রিল ২০১৫

সর্বশেষ সংশোধন করা : 7/17/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate