শিব ত্রিমূর্তির অন্যতম। ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বরের মহেশ্বর হলেন শিব। শিব ধ্বংসের প্রতীক। যা কিছু অশুভ তা-ই বিনাশ করেন শিব। শিবকে সাধারণত বিমূর্ত লিঙ্গ রূপে পূজা করা হয়। শিবের দু’টি সত্ত্বা – যোগী ও গৃহী। যোগী শিবের মূর্তি ধ্যানরত। গৃহী রূপে তিনি পার্বতী বা উমার স্বামী, লক্ষ্মী-সরস্বতী-কার্তিক-গণেশের পিতা। গৃহী রূপে শিব আপন পত্নীকে ভালবাসেন ও শ্রদ্ধা করেন। ভারতের সর্বত্র শিবের আরাধনা হয় সারা বছর ধরে। দেশ জুড়ে অসংখ্য মন্দির আছে শিবের। তার মধ্যে অনেকগুলি তো বেশ উল্লেখযোগ্য – কেদারনাথ (গাড়োয়াল হিমালয়), মদমহেশ্বর (গাড়োয়াল হিমালয়), তুঙ্গনাথ (গাড়োয়াল হিমালয়), বিশ্বনাথ (বারাণসী, উত্তরপ্রদেশ), বৈদ্যনাথ (ঝাড়খণ্ড), তারকেশ্বর (পশ্চিমবঙ্গ), রামেশ্বরম (তামিলনাড়ু), শ্রীশৈলম (অন্ধ্রপ্রদেশ), সোমনাথ (গুজরাত), ভিমাশঙ্কর (মহারাষ্ট্র), ঘৃষনেশ্বর (মহারাষ্ট্র), মহাকালেশ্বর (মধ্যপ্রদেশ), ওঙ্কারেশ্বর (মধ্যপ্রদেশ), ত্র্যম্বকেশ্বর (মহারাষ্ট্র) ইত্যাদি। এ ছাড়াও রয়েছে তুষারলিঙ্গ অমরনাথ। শ্রাবণ মাসে শিবের মাথায় জল ঢালার ধুম লাগে। তখন হয় অমরনাথ যাত্রা। সেই সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষজন মাইলের পর মাইল হেঁটে গিয়ে জল ঢেলে আসেন বিভিন্ন জায়গার শিবমন্দিরে। আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের তারকেশ্বরেও তীর্থযাত্রীরা হেঁটে গিয়ে জল ঢেলে আসেন। অনেক দূর থেকে বাঁকে করে জল নিয়ে গিয়ে পুণ্যার্থীরা ঢেলে আসেন বাঁকুড়া জেলায় বিহারীনাথের মাথায়।
হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী ফাল্গুন মাসের কৃষ্ণা চতুর্দশী তিথিতে শিবরাত্রি উৎসব উদযাপিত হয়। এই দিন ভক্তের দল শিবের মাথায় ফুল-বেলপাতা দেন। ডাবের জল, দুধ বা গঙ্গার জল ঢালা হয়। ইদানীং সর্বজনীন শিবরাত্রি পূজার চল হয়েছে। প্যান্ডেলে শিব-পার্বতীর মূর্তি রেখে পূজা করা হয়। শিবরাত্রিতে দেশের নামকরা শিবমন্দিরগুলিতে প্রচণ্ড ভিড় হয়।
শিবকে কেন্দ্র করে হয় চড়ক --- পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান লোকোৎসব। চৈত্রের শেষ দিনে এই পূজা অনুষ্ঠিত হয় এবং বৈশাখের প্রথম দু-তিন দিন এই উপলক্ষে মেলা চলে। শিবের গাজন বা গম্ভীরা উৎসব চড়কেরই রকমফের। এই দিন নীলেরও পুজো হয়। সে-ও শিবের পূজা।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/27/2020